thereport24.com
ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল 24, ১২ বৈশাখ ১৪৩১,  ১৬ শাওয়াল 1445

‘সরকারের এজেন্ট গণমাধ্যমের উপর হামলা করছে’

২০১৩ অক্টোবর ২৮ ১৯:০০:১০
‘সরকারের এজেন্ট গণমাধ্যমের উপর হামলা করছে’

দিরিপোর্ট২৪ প্রতিবেদক: ‘বিরোধী দলের গণতান্ত্রিক আন্দোলনকে জনগণের কাছে প্রশ্নবিদ্ধ ও বিতর্কিত করতে সরকার তাদের নিজস্ব এজেন্ট দিয়ে গণমাধ্যমের অফিস, গাড়ি ও কর্মীদের উপর হামলা করছে।’

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সরকারের প্রতি এই অভিযোগ করেন।১৮ দলীয় জোটের ডাকা ৬০ ঘণ্টার হরতালের দ্বিতীয় দিন সোমবার বিকেলে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা করেন।

তিনি বলেন, ‘আজ একটি দৈনিক পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছে ককটেল বিস্ফোরণের দায়ে গুলশান থানা পুলিশ যুবলীগের কয়েকজন কর্মীকে আটক করেছে। প্রকাশিত এই সংবাদ সরকারের থলের বিড়াল বের করে দিয়েছে। আমরা আগেও বলেছি সরকার নিজস্ব লোকের মাধ্যমে গণমাধ্যমের উপর হামলা করে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিতে করা আন্দোলনকে হেয় করতে চায়।’

দ্বিতীয় দিনের হরতাল শেষে বিএনপির মহাসচিব আবারও দাবি করেন, সংলাপের মাধ্যমে একটি সমঝোতা ছাড়া বর্তমান রাজনৈতিক সংকট সমাধান সম্ভব নয়। তিনি বলেন, ‘সরকার আচরণ দেখে মনে হয় তারা সংলাপ চায় না। সরকারের বক্তব্য ও কর্মকাণ্ড দেশের সমঝোতার রাজনীতির মধ্যে একটি প্রাচীর তৈরি করেছে।’

তিনি বলেন, ‘প্রকৃতপক্ষে একটি কার্যকারী আলোচনা ও সংলাপের মধ্য দিয়ে দেশের চলমান সংকট নিরসনের ব্যবস্থা সরকারকে করতে হবে।’

মির্জা ফখরুলে আরও বলেন, ‘সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনীর মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রীকে অপরিসীম ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে। নজীরবিহীন ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে। সরকার একটি একদলীয় নির্বাচন করার যে নীলনকশা করেছে, সে পথেই হাঁটছে তারা। আর সরকারের এই নীল নকশা অনুযায়ী একদলীয় নির্বাচন করার লক্ষ্যে বর্তমান নতজানু নির্বাচন কমিশনও কাজ করছে। বর্তমান কমিশনের কর্মকাণ্ড বিএনপির কাছে গ্রহণযোগ্য নয়। একদলীয় নির্বাচনের লক্ষ্যে নির্বাচন কমিশন যে আরপিও তৈরি করছে তা বিএনপি গ্রহণ করবে না।’

বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিতে বিএনপির ডাকা ৬০ ঘণ্টার হরতালে দেশের সকল স্তরের জনগণ সর্বাত্মকভাবে অংশ নিয়েছে। আর জনগণের এই আন্দোলনকে নস্যাৎ করতে সরকার পুলিশ-র‌্যাব-বিজিবিসহ তাদের ছত্রছায়ায় যুবলীগ ও ছাত্রলীগের ক্যাডারদের দিয়ে জনগণের উপর নির্যাতন চালাচ্ছে। জনগণের অংশগ্রহণ বলে দেয় তত্ত্বাবধায়কের দাবিতে দেশে গণঅভ্যুত্থানের সুচনা হতে চলেছে। সরকারের কাছে আহ্বান জনগণের এই দাবির প্রতি সম্মান দেখিয়ে শান্তি ও সমাঝোতার পথ উন্মুক্ত করুন।’

বিএনপির চেয়ারপারসনের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর ফোনালাপ প্রসঙ্গে ফখরুল বলেন, ‘আমরা অনেক আগে থেকেই সংলাপ ও সমঝোতার কথা বলে আসছি। কিন্তু সরকারের পক্ষ থেকে এ ব্যাপারে কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি। আমি নিজে ১৮ দলের পক্ষ থেকে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদককে চিঠি দিয়েছি। আলোচনার প্রস্তাব দিয়েছি। এরপর অনেক সময় অতিবাহিত হলেও তাদের পক্ষ থেকে কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। অবশেষে যখন আমরা হরতাল কর্মসূচি ঘোষণা করলাম ঠিক সেই মুহূর্তে প্রধানমন্ত্রী ফোন করলেন। সে সময় আমাদের কর্মসূচি স্থগিত করা সম্ভব ছিল না। আসলে সংলাপে সরকারের কোনো আগ্রহই নেই। সরকারদলীয় সরকার ও সংবিধানের দোহাই দিয়ে, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিকে অগ্রাহ্য ও অসম্মান করছে। আমরা বলতে চাই ’৯৬ সালেও দেশে একটি দলীয় সরকার ও সংবিধান ছিল, তখন কেন সংবিধানের প্রতি আপনাদের সম্মান ছিল না?’

ফখরুল বলেন, ‘শুধুমাত্র ফোন করলেই সমাধান হয় না। সমাধানের জন্য একটি অনুকূল পরিবেশ সৃষ্টি করতে হবে। সরকার যেভাবে বিরোধী দলের গণতান্ত্রিক আন্দোলনের উপর হামলা চালাচ্ছে- তাতে মনে হয় না সংলাপের কোনো অনুকুল পরিবেশ আছে।’

সংবাদ সম্মেলনে মির্জা ফখরুল বিরোধী দলের ডাকা হরতালের হতাহতের চিত্র তুলে ধরেন। তিনি বলেন, ’১৮ দলের ডাকা হরতালের দ্বিতীয় দিন ঢাকাসহ সারাদেশে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হাতে বিরোধী দলের ৩ জন নেতা-কর্মী নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন দেড় হাজারের অধিক এবং গ্রেফতার করা হয়েছে ৭ শতাধিক। দ্বিতীয় দিনের হরতালে বিরোধী দলের ১২ জন নেতা-কর্মীকে ভ্রাম্যমাণ আদালত বিভিন্ন মেয়াদে জেল দিয়েছে। এ ছাড়া প্রায় ১৭ হাজার নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে।’

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘বিরোধী দলের হরতালের দ্বিতীয় দিন ঝিনাইদহ জেলায় বিএনপি নেতা আবুল হোসেনকে পুলিশের ছত্রছায়ায় আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসীরা প্রথমে কুপিয়ে, পরে গুলি করে, শেষে বোমা মেরে হত্যা নিশ্চিত করেছে। এর প্রতিবাদে ৩১ অক্টোবর ঝিনাইদহ জেলায় সকাল-সন্ধ্যা হরতাল ডাকা হয়েছে।’

সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন বিএনপির যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবীর রিজভী আহমেদ, ঢাকা মহানগর বিএনপির সদস্যসচিব আবদুস সালাম, জাসাস সাধারণ সম্পাদক মনির খান, বিএনপির কেন্দ্রীয় উপ-দফতর সম্পাদক শামিমুর রহমান শামিম ও আবদুল লতিফ জনি প্রমুখ।

(দিরিপোর্ট২৪/আরএইচ/আইজেকে/এমডি/অক্টোবর ২৮, ২০১৩)

পাঠকের মতামত:

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

SMS Alert

রাজনীতি এর সর্বশেষ খবর

রাজনীতি - এর সব খবর