thereport24.com
ঢাকা, শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল 24, ৬ বৈশাখ ১৪৩১,  ১০ শাওয়াল 1445

‘শিরোপা’ জয়ের স্বপ্নোন্মুখ বাংলাদেশ

২০১৬ জানুয়ারি ২৭ ২০:২৪:৫৭
‘শিরোপা’ জয়ের স্বপ্নোন্মুখ বাংলাদেশ

আরিফ চৌধুরী

শঙ্কাটা কেটে গিয়েছিল অনেক আগেই। মাঝখানে খুতখুতে অস্ট্রেলিয়া বোর্ডের যুক্তিহীন সিদ্ধান্তে তাদের যুব দল বিশ্বকাপ বর্জন করলে বিসিবি কিছুটা চিন্তিত হয়েছিল। কিন্তু পরবর্তীতে বাকি সব দলের অংশগ্রহণের নিশ্চয়তা এবং আয়ারল্যান্ডের সংযোজন যুব বিশ্বকাপ আয়োজনে কোনো বাধা হতে দাঁড়াতে পারেনি। এর আগে ২০০৪ সালে যুব বিশ্বকাপের আসর বসেছিল বাংলাদেশে। সেখানে বাংলাদেশ প্লেট গ্রুপে চ্যাম্পিয়নও হয়েছিল। এবার বড় স্বপ্নোন্মুখ ক্রিকেট-পাগল বাঙালি জাতি।

চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে স্বাগতিক বাংলাদেশ ও চ্যাম্পিয়ন দক্ষিণ আফ্রিকার ম্যাচ দিয়ে পর্দা উঠেছে এবারের আসরের। মোট ৮টি ভেন্যুতে খেলাগুলো অনুষ্ঠিত হলেও আসরের স্পটলাইটে কক্সবাজার শেখ কামাল স্টেডিয়াম। খুব বেশিদিন হয়তো অপেক্ষা করতে হবে না, বিশ্বের অন্যতম আকর্ষণীয় ভেন্যু হিসেবে দ্রুতি ছড়াবে পৃথিবীর দীর্ঘতম সমুদ্র সৈকতবেষ্টিত এই কক্সবাজার। বাংলাদেশ যুব দলের অধিনায়ক মেহেদী হাসান মিরাজেরও অধিনায়ক হিসেবে এটি দ্বিতীয় আসর। যা হালের সেনসেশন বিরাট কোহলিসহ নেই অন্য কারোর নামের পাশে। বড়দের বিশ্বকাপে ভালো ফলের প্রত্যয়-পারফর্মে জেগে উঠছে বাংলাদেশের যুবারাও। মূল শিরোপায় ভাগ না বসাতে যুবারা বড় বড় দলগুলোকে হারিয়ে স্বপ্নের পালে হাওয়া দিচ্ছে। উদ্বোধনী ম্যাচেই চ্যাম্পিয়ন দক্ষিণ আফ্রিকাকে ৪৩ রানে হারিয়ে নিজেদের অবস্থান জানিয়েছে মিরাজরা।

মিরাজের মতো কার্যকর অলরাউন্ডার, নাজমুল হাসান শান্তর মতো ধারাবাহিক ব্যাটসম্যান-সমৃদ্ধ বাংলাদেশ দলটি বেশ ব্যালান্সড। গত দেড় বছর বিশ্বকাপের প্রস্তুতি নেওয়া দলটি অনুশীলন ম্যাচে দারুণ সাফল্য দেখিয়েছে। সেখানে হারিয়েছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ, জিম্বাবুয়ে এবং ইংল্যান্ডের মতো শক্তিশালী দলগুলোকে। ফলে শিরোপার স্বপ্নাবেশ আরও বেশি আড়ষ্ট করছে। এই আসরে জাতি হিসেবে আমাদের সুযোগ রয়েছে এগিয়ে যাওয়ার; নিজেদের ছাড়িয়ে যাওয়ার। নিরাপত্তার অজুহাতে অস্ট্রেলিয়া অংশই নিচ্ছে না। অন্যদেরও বাংলাদেশে দল পাঠানোর আগে ভাবতে হয়েছে বৈশ্বিক নিরাপত্তা নিয়ে। পশ্চিমা বেশ কয়েকটি দেশের নাগরিকদের বাংলাদেশ ভ্রমণে রেড এ্যালার্ট জারির সাথে ইতালি, জাপানিসহ কয়েকজন বিদেশি নাগরিক হত্যা এদেশের নিরাপত্তা পরিস্থিতিকে নাজুক করে তুলেছিল; জেগেছিল শঙ্কাও।

অস্ট্রেলিয়া ক্রিকেট দল বাংলাদেশে না আসা ঠিক বাহানার শামিল। কারণ কিছুদিন আগে অস্ট্রেলিয়া ফুটবল দল বাংলাদেশে খেলে গেছে। তারা নিরাপত্তা প্রশ্নে বাংলাদেশকে বাহবাও দিয়েছে। অথচ জাতীয় ক্রিকেট দলের পর যুব দলকেও প্রত্যাহার করে নিয়েছে তারা। অবশ্য টিম অস্ট্রেলিয়ার ক্ষেত্রে এই ঘটনা নতুন নয়। এর আগে তারা শ্রীলঙ্কা এবং পাকিস্তানেও ঘোষিত-সূচিতে ম্যাচ খেলেনি।

না; কোনো জট বাঁধেনি। সৃষ্টি হয়নি অনভিপ্রেত সঙ্কট। বরং বিপুল উৎসাহ-উদ্দীপনা নিয়েই আয়োজিত হচ্ছে এবারের যুব ‍বিশ্বকাপ ক্রিকেট আসর। এই যুব ক্রিকেট থেকেই উঠে এসেছেন লারা, ইনজামাম, রোহিত, ক্যালিসদের মতো বিশ্ব কাঁপানো তারকা। শুধু তাই নয় বাংলাদেশের মুশফিক, তামিম, সৌম্য, মুস্তাফিজদের শুরুটা হয়েছিল এই টুর্নামেন্ট থেকে। এই আসর থেকে টেস্ট খেলুড়ে দলগুলোই নয়, বিশ্ব আঙিনায় পা ফেলার সুযোগ পাচ্ছে ফিজি, নেপাল, কানাডার মতো দলগুলোও। বিশ্বায়নের ভর মৌসুমে বাংলাদেশের যুবাদের ক্রিকেট রসায়নে সমৃদ্ধ করে তোলার এক অপার সুযোগ এনে দেয় এই আসর। তাদের এমন সুযোগ নিয়মিত করে দিতে পারলে তা সুদূরপ্রসারী ফল পাওয়ার যথেষ্ট সম্ভাবনা থাকছে।

বিশ্বকাপ ক্রিকেট আসরের আয়োজন বাংলাদেশের প্রথম নয়। এখানে বিভিন্ন সময়ে আসর বসেছে। যা এতটাই সফল হয়েছে; যার সুনাম আইসিসিও করেছে। এবার তেমন এক সফল আসরের আশায় বাংলাদেশ। যেখানে বাতিঘর হয়ে থাকছে প্রথম ‘শিরোপা’ জয়ের স্বপ্ন।

আরিফ চৌধুরী : ক্রীড়ালেখক

পাঠকের মতামত:

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

M

M

SMS Alert

এর সর্বশেষ খবর

- এর সব খবর