thereport24.com
ঢাকা, শনিবার, ২০ এপ্রিল 24, ৭ বৈশাখ ১৪৩১,  ১১ শাওয়াল 1445

সমতার জন্য অঙ্গীকার

২০১৬ মার্চ ০৭ ২০:১৭:৫৪
সমতার জন্য অঙ্গীকার

‘নারীর চোখে আকাশ দেখুন নারীর চোখে বিশ্ব-

নারীর চোখে মানবতা- ধনী গরিব নিঃস্ব’

‘অধিকার, মর্যাদায় নারী পুরুষ সমানে সমান’- এ বছর এই শ্লোগানকে কেন্দ্র করে পালিত হচ্ছে আন্তর্জাতিক নারী দিবস-২০১৬। নারী শ্রমিকদের অধিকার অর্জনের ঐতিহাসিক সংগ্রামকে উদযাপন করতে প্রতি বছর ৮ মার্চ এ দিবস পালন করা হয়। এ দিবস উদযাপন আরম্ভ হয় ১৯১০ সালে। জাতিসংঘের স্বীকৃতি পায় ১৯৭৪ সালে। আজ ২০১৬ খ্রিস্টাব্দে ১০৬ বছর পরেও নারী এখনো অবহেলা ও সবচেয়ে শোষিত অংশ। ১৮৫৭ সালে ৮ মার্চ নিউইয়র্ক শহরে সুই তৈরির কারখানায় নারী শ্রমিকরা বিপজ্জনক ও অমানবিক কর্মপরিবেশ, স্বল্প মজুরি ও দৈনিক বার ঘণ্টা শ্রমের বিরুদ্ধে রাস্তায় নেমে এসেছিলেন। ১৮৫৭ সালে ৮ মার্চ নিউইয়র্ক শহরের নারী শ্রমিকদের এই প্রতিবাদ প্রতিধ্বনিত হয়ে আজ সারা বিশ্বে ছড়িয়ে পড়েছে। ১৮৫৭ সালের আন্দোলনের ধারাবাহিকতায় ১৮৬০ সালে ঐ নারী শ্রমিকরা ইউনিয়ন গঠন করে এবং রাস্তায় সমবেত হন। ১৯১০ সালে ডেনমার্কের কোপেনহেগেনে নারী নেত্রী ক্লারা জেৎকিনের প্রস্তাবের ভিত্তিতে সম্মিলিত হওয়ার দিবস হিসেবে ৮ মার্চ গ্রহণ করা হয়।

একটু পেছনে তাকিয়ে প্রাচীন মানব ইতিহাসের আলোচনায় আমরা নারীর অবস্থানের যে চিত্র পাই তা হচ্ছে অকথ্য নির্যাতনের চিত্র। যেখানে নারীকে শুধু সন্তান উৎপাদনের একটা যন্ত্র বা ভোগের পণ্য হিসেবে গণ্য করা হতো। এমনকি তৎকালীন সভ্য সমাজ নামে খ্যাত গ্রিক, রোমান ও খ্রিস্ট সমাজেও নারীর কোনো সামাজিক মর্যাদা বা অধিকার ছিল না। জাহেলি যুগে নারীর কোনো মর্যাদাই ছিল না। তখন নারী লাঞ্ছনা, লজ্জা ও পাপের প্রতিমূর্তি হিসেবে বিবেচিত হতো। অজ্ঞ, অশিক্ষিত দূরের কথা, শিক্ষিত সমাজ এবং ধর্মীয় নেতাগণও বহুদিন যাবত এই দ্বন্দ্বের সম্মুখীন ছিল যে, নারী প্রকৃতই মানুষ কিনা, মহান আল্লাহ তাদের মধ্যে কোনো আত্মা দিয়েছেন কিনা। ইসলামের আবির্ভাবের পূর্বে জাহেলিয়াতের যুগে কন্যা সন্তান জন্ম নিলে তাকে অভিশপ্ত মনে করে জীবন্ত কবর দেওয়া হতো।

অথচ মহান আল্লাহ বলেন, নারী-পুরুষ একে অপরের পোশাক স্বরূপ। পোশাক এবং দেহের মধ্যে যেমন কোনো ফারাক থাকে না তেমনি স্বামী-স্ত্রীর মধ্যেও কোনো তফাৎ থাকে না। কিন্তু পবিত্র কোরানের এই আয়াত থেকে দূরে সরে আসার কারণে দিনে দিনে তৈরি হয়েছে এক বৈরী পরিবেশ- মনিব এবং দাসীর পটভূমি।

এভাবেই আমাদের প্রেক্ষিত বদলেছে। অথচ নারীকে সংগ্রাম মুখর হয়েই জন্ম নিতে হয়। সৃষ্টির আদিকাল থেকেই নারী এবং পুরুষের মধ্যে ছিলো শ্রম বিভাজন। পুরুষ শিকার করতো আর নারী ফলমূল যোগাড় করতো। এই শিকারি— যোগাড়ী জীবনে কিন্তু কারো উপর কারো কোনো প্রাধান্য ছিলো না। কারণ ওগুলো সংরক্ষণের কোনো ব্যবস্থা ছিলো না। যখনই সংরক্ষণের ব্যবস্থা আসলো হান্টার-গ্যাদারার যখন ফার্মার হলো, তখনই উদ্বৃত্ত এলো, এলো উৎপীড়ন।

ফার্মার কিন্তু প্রথম নারীই। নারীই আবিষ্কার করলো বীজ থেকে বৃক্ষের জন্ম রহস্য। অসুস্থ থেকে সুস্থতার এবং ওষুধি থেকে ওষুধ। বাসগৃহের ভিত্তিতেও ছিলো প্রথম নারী এবং নারীর গর্ভেই জন্ম নেয় প্রথম কৃষক। অর্থাৎ কৃষিশ্রমিক। এভাবেই বিশ্বের যা কিছু প্রথম তার আবিষ্কারক নারী। এ প্রসঙ্গে ঊজঊঈখটঝ বলেছেন, মানুষ যে মানুষ হতে পেরেছে, সেই মানবগোষ্ঠীর পুরোটাই নারীর কাছে ঋণী। সেই গৃহের প্রতিষ্ঠাকারী, শিল্পের আবিষ্কারক, সভ্যতার আদি রূপকার।

অথচ বর্তমানে এদেশের একটি প্রচলিত ভাষ্যমত হচ্ছে, ‘না, কিছু করি না। অথবা না, সে কোনো কাজ করে না।’ এই কাজ বলতে আমরা আর্থিক বা সামাজিক মূল্যায়ন ও বাইরের মজুরিসহ ঘণ্টামাফিক কাজকে বুঝে থাকি। তা ছাড়া, রান্না করা, ঘর পরিষ্কার করা, কাপড় পরিষ্কার করা, বাচ্চা স্কুলে আনা নেওয়া করা, বাচ্চার পড়াশুনা দেখভাল করা ইত্যাদি সকাল থেকে রাত পর্যন্ত একটি সংসারে হাজারো রকম কাজ থাকে। যেগুলোর জন্য কোনো আর্থিক ও সামাজিক মূল্য পরিশোধ করা হয় না। অনেক ক্ষেত্রে স্বীকৃতিও দেওয়া হয় না। অথচ নারীরা আজ সংসারের যাবতীয় কাজসহ রাষ্ট্র পরিচালনা থেকে শুরু করে শান্তিরক্ষী মিশন, খেলাধুলায় স্বর্ণজয়, প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবেলাসহ যাবতীয় গুরুত্বপূর্ণ কাজে পারদর্শিতার পরিচয় দিয়ে যাচ্ছেন। বিশ্ব অর্থনীতিতে নারীর ভূমিকা চোখে পড়ার মতো। তা সত্ত্বেও নানাভাবে অবহেলিত তারা। পুরুষতান্ত্রিক সমাজ ব্যবস্থার কারণেই নিশ্চিত হচ্ছে না তাদের মর্যাদা ও সমানাধিকার। নারীর অগ্রযাত্রাকে নিশ্চিত করতে বদলাতে হবে পুরুষতান্ত্রিক দৃষ্টিভঙ্গি। তাকে নারী হিসাবে নয়, মানুষ হিসাবে দেখতে হবে। রাষ্ট্রিক এ অগ্রযাত্রায় তার পাশে দাঁড়াতে হবে। ১৯৭২ সালে সরকারি চাকরিরীতে মেয়েদের দশ ভাগ কোটা রাখা হয়। ১৯৭৩ সালে দুজন নারীকে মন্ত্রিসভায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়।

সম্প্রতি ইউনেস্কোর এক গবেষণায় আমরা দেখতে পাই, বিজ্ঞান শিক্ষায় বাংলাদেশের নারীরা সমতা অর্জন করেছে, কিন্তু প্রকৌশল ও গবেষণায় তারা পিছিয়ে আছে। পিএইচডি ও উচ্চতর গবেষণায় মোট গবেষকের ১৭ শতাংশ নারী। কৃষি ও চিকিৎসা বিজ্ঞানে ৩০ শতাংশ নারী তাদের উজ্জ্বল উপস্থিতি নিশ্চিত করেছে।

আমরা জানি, আর্থ-সামাজিক ইতিহাসের মধ্যেই রাজনৈতিক অংশগ্রহণ থেকে নারীর বিযুক্তির কারণ নিহিত রয়েছে। নির্বাচনমূলক রাজনীতিতে পুরুষের তুলনায় নারীর অংশগ্রহণের ইতিহাস খুবই নিকট অতীতের। ফলে রাজনৈতিক প্রক্রিয়ার সকল দিক সম্পর্কে তাদের অভিজ্ঞতা ও ধারণা একেবারেই সীমিত। অধিকাংশ দেশেই নারীরা মাত্র বিগত ৩০-৪০ বছরের মধ্যে ভোটাধিকার অর্জন করতে পেরেছে। সুইজারল্যান্ডের মতো উন্নত দেশেও নারীরা এই ১৯১৭ সালে ভোটাধিকার পেয়েছে।

নারী অধিকার বলতে নারীর জন্য সম্পূর্ণ ভিন্ন কোনো সুযোগ বা অধিকার বোঝায় না। নারী-পুরুষের সমতা নিশ্চিত প্রশ্নে নারী অধিকারের আওতায় শিক্ষা, স্বাস্থ্য, কর্মসংস্থান, নিরাপত্তা যা কিছু চাওয়া হয় তার সবই নারী পুরুষ নির্বিশেষে রাষ্ট্রের নাগরিক মাত্রেরই মানবাধিকার সংশ্লিষ্ট। মানবাধিকারের মৌলিক এ ক্ষেত্রগুলোতে নারী যুগ যুগ ধরে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ উভয়ভাবেই বৈষম্যের শিকার হওয়ায় তুলনামূলকভাবে অনগ্রসর অবস্থানে রয়েছে। আর সে কারণেই প্রয়োজন সুপরিকল্পিত নীতিমালার মাধ্যমে নারী-পুরুষের সমতা নিশ্চিত করা যা সুস্থ সমাজ তথা উন্নত রাষ্ট্রের সহায়ক শক্তি। দ্রুত পরিবর্তনশীল বিশ্ব প্রেক্ষাপটের নানাবিধ বাস্তবতার প্রেক্ষিতে বাংলাদেশেও নারীর মানবাধিকার সংরক্ষণের প্রশ্নে নারীর বিরুদ্ধে সকল সহিংসতা প্রতিরোধ ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করা গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্র বলে চিহ্নিত। কোনো উন্নয়ন প্রচেষ্টাই ফলপ্রসূ হবে না যদি নারীর বিরুদ্ধে সহিংসতা প্রতিরোধ করা না যায়।

সমাজ ও রাষ্ট্রীয় প্রশাসনের সকল ক্ষেত্রেই নারীর অংশগ্রহণ নিশ্চিত করার প্রক্রিয়ায় বিগত বছরগুলোতে নারীর রাজনৈতিক ক্ষমতায়নের বিষয়টি সরকার গুরুত্বের সাথে দেখছে। জাতীয় সংসদে মহিলাদের প্রতিনিধিত্বের পাশাপাশি তৃণমূল পর্যায়েও নারীর রাজনৈতিক ক্ষমতায়নের বিষয়টি আজ দৃশ্যমান। স্থানীয় সরকার পর্যায়ে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে নারী প্রতিনিধিদের সরাসরি ভোটে নির্বাচনের সুযোগ রয়েছে। ইউনিয়ন পরিষদ, পৌরসভা ও সিটি কর্পোরেশনসমূহে নারীদের জন্য সংরক্ষিত আসন ছাড়াও অন্যান্য আসনের নির্বাচনে নারীরা অংশগ্রহণ করছে এবং সরাসরি ভোটে নির্বাচিত হয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণ প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণ করছে।

পরিসংখ্যান অনুযায়ী বাংলাদেশে পুরুষ ভোটারের চেয়ে নারীর ভোটার সংখ্যা বেশি। এছাড়াও আমরা কিছু কিছু ক্ষেত্রে নারীর ক্ষমতায়নও লক্ষ্য করছি। ১৫-২০ বছর ধরে এদেশের শাসন ব্যবস্থার শীর্ষে আছেন নারী। সব মিলিয়ে বর্তমান বাংলাদেশে নারীর ভূমিকা চোখে পড়ার মতো। প্রধানমন্ত্রী, পররাষ্ট্রমন্ত্রী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, কৃষিমন্ত্রীসহ বিরোধীদলীয় নেত্রী হচ্ছেন নারী। এনজিও এবং গার্মেন্টস শিল্পেও নারীর উপস্থিতি চোখে পড়ার মতো। সমাজ ও রাষ্ট্রীয় জীবনের সর্বক্ষেত্রে নারীর অংশগ্রহণের বিষয়টি নিশ্চিত করার জন্য প্রশাসন, বিচার, পুলিশ প্রশাসন, সেনাবাহিনীসহ সকল পেশাতেই নারীর জন্য দ্বার ক্রমাগত উন্মুক্ত করা হয়েছে। নারীর সব ধরনের পেশাতেই অবাধ পদচারণায় এর ইতিবাচক ফল চোখে পড়ে। এছাড়াও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ নির্বাহী পদে মহিলারা দক্ষতার সাথে কাজ করে আসছেন।

আমাদের সুপারিশ

নারীর জীবনচক্রের সকল পর্যায়ে সর্বোচ্চ মানের শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্য লাভের অধিকার নিশ্চিত করা। এইডসসহ সকল ঘাতকব্যাধি প্রতিরোধ করা, বিশেষত গর্ভকালীন স্বাস্থ্যসহ নারীর স্বাস্থ্য সম্পর্কিত গবেষণা করা এবং স্বাস্থ্য তথ্যের প্রচার ও সচেতনতা বৃদ্ধি করা। নারীর স্বাস্থ্য, শিশুর শারীরিক ও মানসিক বৃদ্ধি, জন্ম নিয়ন্ত্রণে সাহায্য, কর্মস্থলে মায়ের কর্মক্ষমতা বাড়ানো ও মাতৃবান্ধব কর্মপরিবেশ নিশ্চিত করার লক্ষ্যে মায়ের বুকের দুধের উপকারিতার পক্ষে যথোপযুক্ত আইন প্রণয়ন করা।

প্রতিদিনই নারী ঘরের বাইরে বের হচ্ছে, এর মাধ্যমেই তারা স্ব-স্ব পেশাগত দক্ষতার উন্নতি ঘটাচ্ছে। আমাদের নারীদের নিরাপত্তাহীনতার মধ্যে অফিস-আদালতে কাজ করতে হয়। এটা যে শুধু টাকার জন্য, ক্ষেত্রবিশেষে তাও নয়; বরং আত্মমর্যাদাবোধকে সমুন্নত রাখতেই নারীদের এই প্রচেষ্টা। আমাদের অনেক সম্ভাবনা আছে। প্রতিটি নারীর মধ্যে আত্মমর্যাদা ও উদ্ভাবনী মন থাকা প্রয়োজন। সংগ্রামের মাধ্যমে আত্মত্যাগের অতীত ইতিহাস আমাদের আছে। প্রয়োজনে সেই অতীত অভিজ্ঞতায় প্রজ্বলিত হতে হবে। নিজের ভেতর ব্যাখ্যা বিশ্লেষণধর্মী মন থাকতে হবে। আত্মসমর্পণ নয় বরং আত্মউন্নতিই লক্ষ্য হতে হবে।

আমি একজন নারী এবং কর্মী। নতুন প্রজন্মকে পাহাড় কেটে গড়ে ওঠা পথে আরও নতুন পথ তৈরি করতে হবে। জীবনের বাঁকে বাঁকে শিক্ষা, অভিজ্ঞতা নিয়ে সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে হবে। নারীর বিকাশের জন্য আজ অনেক অপশন সৃষ্টি হয়েছে। এসবের মধ্য থেকে মোর ব্রাইট অপশনকে বেছে নিতে হবে। প্রিন্ট মিডিয়া, ইলেকট্রিক মিডিয়াসহ তথ্যপ্রযুক্তি, উচ্চতর শিক্ষা ও গবেষণার মাধ্যমে নিজেদের অবস্থানকে আরও দৃঢ় করতে হবে। বাংলাদেশ দূতাবাসগুলোতে রাষ্ট্রদূতসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন, পরিকল্পনা কমিশন ও বিচার বিভাগের উচ্চপদে নারী নিয়োগের উদ্যোগ গ্রহণ করা।

জাতীয় পর্যায়ে মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের রাজস্ব ও উন্নয়ন বাজেট বরাদ্দ বৃদ্ধি করা জরুরি। নারী উন্নয়নের সাথে সম্পৃক্ত সকল মন্ত্রণালয়/বিভাগ/সংস্থায় নারী উন্নয়নের জন্য লক্ষ্যমাত্রা ও কর্মসূচি চিহ্নিত করে পর্যায়ক্রমে অতিরিক্ত বাজেট বরাদ্দ করার মাধ্যমে নারীকে আরও শক্তিশালী নেটওয়ার্কের আওতায় এনে ‘ভিশন ২০২১’ কে সার্থকতা দিতে আমরা দৃঢ় প্রতিজ্ঞ।

এ কথা সত্য যে, আমরা এখনো অনেক প্রতিকূলতার মধ্যে আছি। নতুন পথ তৈরি করে হলেও প্রগতির পথে, আধুনিকতা ও উন্নতির পথে আমাদের অগ্রসর হতেই হবে। আমরা জানি, খ্যাতি, জনপ্রিয়তা বা কর্মজীবনে প্রতিষ্ঠা পাবার শর্টকাট কোনো রাস্তা নেই। পরিশ্রম ও ডেডিকেশনের মাধ্যমেই এগিয়ে যাওয়া সম্ভব। এই দুটো গুণ থাকলে তাকে কেউ আটকাতে পারবে না। পরিশ্রমই প্রথম এবং পরিশ্রমই শেষ।

আমাদের সমাজে আজ যেটা বেশি প্রয়োজন, তা হলো সচেতনতা। এ জন্য প্রয়োজন শিক্ষিত জনগোষ্ঠী। নারী অধিকার সম্পর্কে বহুমাত্রিক সেমিনার ও সভা করে সর্বসাধারণকে সচেতন করতে হবে। আমাদের দেশের নারীরা যথেষ্ট মেধাবী। কিন্তু তারা সে অনুযায়ী বিভিন্ন ক্ষেত্রে সাফল্য দেখাতে পারছেন না। কারণ পারিবারিক, অর্থনৈতিক, সামাজিক ইত্যাদি সমস্যা তাদের অগ্রগতির পথে প্রতিবন্ধকতা হিসেবে কাজ করে। ব্যক্তিজীবনে স্বামী-স্ত্রী পরস্পরকে সাপোর্ট দেওয়ার মাধ্যমে উভয়ের মেধার বিকাশ সম্ভব। নারী ক্ষমতায়নের লক্ষ্যে দ্বিপাক্ষিক ও বহুপাক্ষিক আর্থিক ও কারিগরি সহযোগিতা এবং অভিজ্ঞতা ও প্রযুক্তি বিনিময়ের মাধ্যমে আঞ্চলিক, উপ-আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক সহযোগিতাকে উৎসাহিত করা এখন সময়ের দাবি।


লেখক :
ড. শাহনাজ পারভীন, কবি, গবেষক, কথাসাহিত্যিক, উপাধ্যক্ষ, উপশহর মহিলা কলেজ, যশোর।

পাঠকের মতামত:

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

M

M

SMS Alert

এর সর্বশেষ খবর

- এর সব খবর