thereport24.com
ঢাকা, শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল 24, ১২ বৈশাখ ১৪৩১,  ১৭ শাওয়াল 1445

অসহযোগ আন্দোলন অব্যাহত রাখতে বঙ্গবন্ধুর ৩৫ দফা নির্দেশ

২০১৬ মার্চ ১৪ ০০:০৫:২৯
অসহযোগ আন্দোলন অব্যাহত রাখতে বঙ্গবন্ধুর ৩৫ দফা নির্দেশ

দ্য রিপোর্ট ডেস্ক : বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ঘোষিত অসহযোগ আন্দোলনের দ্বিতীয় পর্যায়ের কর্মসূচীর আজ ছিল শেষ দিন।

সকালে বঙ্গবন্ধুর ধানমন্ডীর বাসভবনে তার সঙ্গে রুদ্ধদ্বার বৈঠক করেন ন্যাপ নেতা খান আবদুল ওয়ালী খান ও গাউস বক্স বেজেঞ্জো। আওয়ামী লীগের সংসদীয় দলের উপনেতা সৈয়দ নজরুল ইসলাম, কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এএইচএম কামরুজ্জামান, তাজউদ্দীন আহমদসহ দলের অন্যান্য নেতারা এ সময় উপস্থিত ছিলেন।

এ বৈঠক শেষে বঙ্গবন্ধু উপস্থিত সাংবাদিকদের বলেন, ‘স্বাধীন দেশে স্বাধীন নাগরিক হিসেবে জীবন-যাপনের জন্যই আমাদের সংগ্রাম। ... যতদিন জনগণের অধিকার আদায় না হবে, ততদিন আমাদের সংগ্রাম অব্যাহত থাকবে।’

সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে ন্যাপ নেতা আবদুল ওয়ালী খান বলেন, ‘জাতীয় পরিষদ-ই হচ্ছে শাসনতান্ত্রিক সমস্যা সম্পর্কে আলোচনা ও তার সমাধানের উপযুক্ত স্থান।’

‘বাংলা জাতীয় লীগ’ প্রধান আতাউর রহমান খান এদিন বরিশালে আয়োজিত এক জনসভায় ‘অস্থায়ী বাংলাদেশ সরকার গঠনের’ জন্য বঙ্গবন্ধুর প্রতি আহবান জানান।

এদিকে জাতীয় পরিষদ অধিবেশনে যোগদানের জন্য বঙ্গবন্ধু ঘোষিত চার দফা পূর্বশর্ত মেনে নেওয়ার দাবিতে এদিন ঢাকায় বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও ছাত্র-শ্রমিক-পেশাজীবী সংগঠন সভা সমাবেশ ও শোভাযাত্রা করে।

১১৫ নং সামরিক বিধি জারির প্রতিবাদে দেশরক্ষা বিভাগের বেসামরিক বাঙালি কর্মচারীরা ঢাকায় বিক্ষোভ মিছিল করে। পরে তারা বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে সাক্ষাৎ করে আন্দোলনের সাথে একাত্মতা প্রকাশ করেন।

ঝিনাইদহে কয়েকজন সিএসপি ও পিএসপি কর্মকর্তা শপথ নেন যে, প্রয়োজনে তারা দেশের জন্য অস্ত্র ধারণ করবেন।

সন্ধ্যায় ছাত্রলীগের উদ্যোগে পুরান ঢাকার লালবাগ বালুর মাঠে এক জনসভা অনুষ্ঠিত হয়। ছাত্রলীগ সভাপতি নূরে আলম সিদ্দিকী, ডাকসু সহ-সভাপতি আ স ম আবদুর রব, সাধারণ সম্পাদক আবদুল কুদ্দুস মাখন ও শেখ শহীদুল ইসলাম প্রমুখ এ সমাবেশে বক্তব্য রাখেন।

এদিন করাচীর নিশাত পার্কে আয়োজিত এক সমাবেশে ‘পাকিস্তান পিপলস পার্টি’ (পিপিপি)-এর চেয়ারম্যান জুলফিকার আলী ভুট্টো পাকিস্তানের দুই অংশের দুই সংখ্যাগরিষ্ঠ দলের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তরের প্রস্তাব দেন। তিনি বলেন, ‘সাংবিধানিক সমঝোতার পূর্বে শেখ মুজিবের দাবি অনুযায়ী যদি ক্ষমতা অর্পণ করা হয়, তবে পাকিস্তানের দুই অংশের দুই সংখ্যাগরিষ্ঠ দলের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করতে হবে। ... আওয়ামী লীগ ৬দফার মাধ্যমে স্বাধীনতাই দাবি করছে।’ এ সময় পশ্চিম পাকিস্তানের সংখ্যাগরিষ্ঠ দলের নেতা হিসেবে তার সঙ্গে সংলাপ শুরু করার জন্য বঙ্গবন্ধুর প্রতি আহবানও জানান ভুট্টো।

এদিন রাতে গণমাধ্যমে প্রদত্ত এক বিবৃতিতে অসহযোগ আন্দোলন অব্যাহত রাখা এবং এ লক্ষ্যে ৩৫ দফা নির্দেশ জারি করেন বঙ্গবন্ধু। এর মাধ্যমে তদাণীন্তন পূর্ব পাকিস্তানের প্রশাসন তার একক নিয়ন্ত্রণে চলে আসে। বিবৃতিতে বঙ্গবন্ধু বলেন, ‘বাংলাদেশের জনগণের মুক্তির আকাঙ্খাকে নির্মুল করা যাবে না। আমরা অজেয়, কারণ আমরা মৃত্যুর জন্য প্রস্তুত।’

এদিন ‘মন্টেসেলো ভিক্টরি’ নামে পূর্ব পাকিস্তানের জন্য খাদ্যশস্যবাহী একটি জাহাজের গতিপথ পরিবর্তন করে চট্টগ্রাম বন্দর থেকে করাচী নিয়ে যাওয়া হয়। ‘ওশান এন্ডুরাস’ নামে সমরাস্ত্র বাহী আরেকটি জাহাজ এদিন চট্টগ্রাম বন্দরের ১০ নং জেটিতে নোঙর করে। ইতোপূর্বে বন্দর শ্রমিকদের অসহযোগিতার কারণে গত ৯ মার্চ ১৬ নং জেটিতে নোঙরকারী ‘সোয়াত’ জাহাজ থেকে সমরাস্ত্র খালাস করতে ব্যর্থ হয় বন্দর কর্তৃপক্ষ।

দেশের সম্পদ পাচার প্রতিরোধে ‘স্বাধীন বাংলা কেন্দ্রীয় ছাত্র সংগ্রাম পরিষদ’ এদিন ঢাকার বিভিন্ন পয়েন্টে চেকপোস্ট স্থাপন করে।

গ্রন্থনা : সোহেল রহমান

(দ্য রিপোর্ট/এসআর/মার্চ ১৪, ২০১৬)

পাঠকের মতামত:

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

M

M

SMS Alert

এর সর্বশেষ খবর

- এর সব খবর