মালয়েশিয়ার দ্বার খোলার সম্ভাবনা

শামছুজ্জামান নাঈম, মালয়েশিয়া : শ্রমিক সংকটে পড়েছে মালয়েশিয়ার শিল্পকারখানাগুলো। এ নিয়ে গত ফেব্রুয়ারি থেকে স্থানীয় পত্রিকায় নিয়মিত লেখালেখি হলেও এত দিন বিষয়টি আমলে নেননি মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী দাতুক সেরি নাজিব তুন রাজাক।

সম্প্রতি মন্ত্রিপরিষদের এক বৈঠকে বিদেশি শ্রমিকের ঘাটতি মোকাবেলায় স্থায়ী সমাধান খুঁজে বের করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এ বিষয়ে সমস্যা সমাধানে দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন তার দফতরবিষয়ক মন্ত্রী ড. উই কা সিউং।

মালয়েশিয়ার সরকারপ্রধানের এমন সিদ্ধান্তে দেশটিতে বাংলাদেশি শ্রমিক পাঠানো দ্বার আবার খুলে যাওয়ার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। গত ফেব্রুয়ারি মাস থেকে মালয়েশিয়ার সরকার হঠাৎ করে বিদেশি শ্রমিক নিয়োগে নিষেধাজ্ঞা জারি করে। সে সময় বাংলাদেশ থেকে শ্রমিক নেওয়ার চুক্তিও স্থগিত করে। ফলে দেশটিতে নতুন করে বাংলাদেশের শ্রমিকদের যাওয়ার পথটি বন্ধ হয়ে যায়। এরপরই মালয়েশিয়ার শিল্পকারখানায় শ্রমিক সংকট দেখা দেয়।

এক সংবাদ সম্মেলনে মন্ত্রী আরও জানান, প্রধানমন্ত্রী এ বিষয়টিকে খুব গুরুত্বসহকারে নিয়েছেন এবং ব্যক্তিগতভাবে এ সমস্যা সমাধান করবেন বলেও জানিয়েছেন।

মন্ত্রিপরিষদ ইতিমধ্যে বিদেশি শ্রমিক নিয়োগের ক্ষেত্রে আরও উন্নত ব্যবস্থার বিষয়ে ভাবছে, যার ফলে অন্যান্য খাতেও শ্রমিক নিয়োগের স্থগিতাদেশ প্রত্যাহার করা যাবে। আরও স্বচ্ছ ও জবাবদিহিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। কারণ উৎপাদনশীল খাতের জন্য শ্রমিক খুব গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।

অন্যদিকে মালয়েশিয়ান চায়নিজ অ্যাসোসিয়েশন এর উপপরিচালক লিম আহ লেক-এর ফেসবুক পেজে দেওয়া এক বিবৃতিতে বলেন, প্রধানমন্ত্রী আমাদের মতামত শোনার পর, তিনি বিদেশি শ্রমিকদের ঘাটতির ব্যাপারটি নিজ দায়িত্বে সমাধানের পথ খুঁজে বের করবে বলে আশ্বাস দেন।

গত ১২ অক্টোবর বৃহস্পতিবার ড. উইসহ দলটির সভাপতি ও পরিবহনমন্ত্রী দাতুক সেরি লিও টিয়ং লাইয়ের সঙ্গে মন্ত্রিপরিষদ সভায় তাইপেই ইনভেস্টরস অ্যাসোসিয়েশন মালয়েশিয়া থেকে একটি প্রতিনিধিদল শ্রমিক সংকট সমাধানের জন্য সরকারের কাছে স্মারকলিপি দেন। তারা অভিযোগ করেন-তাইওয়ানের বিনিয়োগে মালয়েশিয়ায় যে শিল্পপ্রতিষ্ঠানগুলো রয়েছে সেগুলোতে প্রায় ৯০ ভাগ কোম্পানি বিদেশি শ্রমিক নিয়োগের সমস্যার মুখোমুখি হচ্ছে।

মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রীর মুখে শ্রমিক সংকট সমাধানের কথায় বাংলাদেশ থেকে লোক নেওয়ার সাম্ভাবনা জাগছে আবার।

(দ্য রিপোর্ট/এআরই/এনআই/এম/অক্টোবর ১৪, ২০১৬)