thereport24.com
ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল 24, ১২ বৈশাখ ১৪৩১,  ১৬ শাওয়াল 1445

শি জিনপিং-খালেদা জিয়া বৈঠক

শিমুলের উপস্থিতি নিয়ে আলোচনা থামছে না

২০১৬ অক্টোবর ১৭ ২০:৪৭:৪৯
শিমুলের উপস্থিতি নিয়ে আলোচনা থামছে না

চীনা রাষ্ট্রপতি শি জিনপিংয়ের সঙ্গে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার বৈঠকে শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাসের উপস্থিতি নিয়ে আলোচনা-সমালোচনা থামছেই না। এই নিয়ে দলের ভেতরে-বাইরে নেতাকর্মীদের মধ্যে চলছে চুলচেরা বিশ্লেষণ। খালেদার জিয়ার একজন কর্মকর্তা (বিশেষ সহকারী) কোন প্রটোকলে এ ধরনের একটি বৈঠকে উপস্থিত থাকেন?

শুক্রবার (১৭ অক্টোবর) রাজধানীর লা মেরিডিয়ান হোটেলে শি জিনপিংয়ের সঙ্গে খালেদা জিয়ার বৈঠক হয়। খালেদা জিয়া ছাড়াও বৈঠকে ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন, মাহবুবুর রহমান, নজরুল ইসলাম খান, দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা সাবিহউদ্দিন আহমেদ। যানজটে আটকা পড়ায় রিয়াজ রহমান সময়মতো বৈঠকে উপস্থিত হতে পারেননি।

গুলশান কার্যালয়ের সরবরাহ করা বৈঠকের ছবিতে দেখা যায়, প্রথম সারিতেই বসা আছেন-শিমুল বিশ্বাস। দলে কোনো সাংগঠনিক পদে না থেকে কোন প্রটোকলে শিমুল বিশ্বাস বৈঠকে প্রথম সারিতে বসেন তা নিয়ে শুরু হয় আলোচনা-সমালোচনা।

দলের মধ্যম সারির এক নেতা দ্য রিপোর্ট টুয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, ‘শিমুল বিশ্বাসকে নিয়ে যেভাবে সমালোচনা হচ্ছে, তাতে দলের জন্য সুখবর বয়ে আনবে না। কারণ একদিকে তাকে সরকারের এজেন্ট বলা হচ্ছে, অন্যদিকে আবার তিনি খালেদা জিয়ার সহকারী দায়িত্বও পালন করছেন। এমনটা কেন হচ্ছে, এটা দলীয় প্রধানই ভালো বলতে পারবেন।’

শি জিনপিং-খালেদা জিয়ার বৈঠকে শিমুল বিশ্বাসের উপস্থিত থাকা নিয়ে পক্ষে-বিপক্ষে এমন সব মতামত দিয়েছেন অনেকেই।

আবার কেউ বলেছেন-খালেদা জিয়ার সহকারী হিসেবে দায়িত্ব পাওয়ার পর থেকেই শিমুল বিশ্বাস তার গাড়ির সামনের সিটে বসেন। এখানে খালেদা জিয়ার আগে-পরে যাওয়ার কথা নয়। চীনা রাষ্টপতির বৈঠকে উপস্থিত থাকার বিষয়টি খালেদা জিয়া ও শিমুল বিশ্বাস নিজে বলতে পারবেন। এটা নিয়ে আমাদের কিছু বলার নেই। কারণ এর আগেও খালেদা জিয়ার চীন সফরে দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে শিমুল বিশ্বাস উপস্থিত ছিলেন। তা ছাড়া চীনের রাষ্ট্রপতির সঙ্গে খালেদার জিয়ার বৈঠক করা নিয়ে শিমুল বিশ্বাসের একটা ‘ভূমিকা’ আছে।

দলীয় সূত্রে জানা গেছে, আইনের চোখে শিমুল বিশ্বাস একজন পলাতক আসামি। তার নামে মামলা ৪৭টি রয়েছে। এসবের মধ্যে অন্তত ১০টিতে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি হয়েছে। এমন অবস্থায় তিনি এ ধরনের একটি বৈঠকে অংশ নেন, তাতে বিদেশিদের কাছে ভুল বার্তা গেছে। ভবিষ্যতে এটা প্রশ্নের মুখে পড়তে হতে পারে।

শীর্ষ পর্যায়ের বৈঠকে দলীয় প্রতিনিধি ছাড়া কর্মকর্তা পর্যায়ের কারো উপস্থিতির ঘটনাকে বিএনপির কেউ কেউ ‘নজিরবিহীন’ বলে অ্যাখ্যায়িত করেছেন।

এ বিষয়ে বিএনপির কূটনৈতিক কোরের সদস্য বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা সাবিহ উদ্দিন আহমেদ ক্ষুব্ধ কণ্ঠে দ্য রিপোর্টকে বলেন, ‘আমি কিছু বলতে পারব না। আমি যা বলার আগেই বলে দিয়েছি। আর কী বাকি আছে, আপনারা খালি খালি প্যাঁচ লাগান। শিমুল বিশ্বাস সেখানে কীভাবে ঢুকেছে, আমি কী করে বলব। তবে এটা ঠিক যে এ ধরনের উচ্চ পর্যায়ের বৈঠকে আগে এ ধরনের ঘটনা ঘটেনি।’

বিএনপির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক শহিদুল ইসলাম বাবুল তার ফেসবুক পেজে দুটি ছবিসহ এ কে এম ওয়াহিদুজ্জামান (Akm Wahiduzzaman) নামের একজনের মতামত শেয়ার করেছেন।

মতামতে একটি অংশে লেখা হয়েছে, ‘২০১০ এবং ২০১২ সালে বেগম খালেদা জিয়া যখন চীন সফর করেছিলেন, তখন চীনের তৎকালীন ভাইস প্রেসিডেন্ট এবং পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সাথে যে সৌজন্য সাক্ষাৎকার এবং দ্বিপাক্ষিক বৈঠক হয়েছিল, তার দুটি ছবি আমি এখানে দিচ্ছি। দুটি ছবিতেই শিমুল বিশ্বাসকে দেখা যাচ্ছে। সেই সময় কিন্তু ওই বৈঠকগুলোতে তার উপস্থিতি নিয়ে কোনো সমালোচনা হয়নি। তাহলে এখন কেন সমালোচনা? বোঝা যাচ্ছে- বেগম খালেদা জিয়ার সাথে শি চিনপিংয়ের রাষ্ট্রীয় প্রটোকলে দ্বিপাক্ষিক বৈঠককে বিতর্কিত করাই এই সমালোচনার মূল উদ্দেশ্য। অন্য কিছু নয়।’

এ বিষয়ে জানতে চাইলে বাবুল দ্য রিপোর্টকে বলেন, ‘আমি আরেক জনের একটি মতামত তুলে ধরেছি। আপনি চাইলে এটা নিতে পারেন। ছবি ব্যবহার করতে পারেন।’

এদিকে বিএনপি চেয়ারপারসনের বিশেষ সহকারী শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাসের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘আমি মিটিংয়ে আছি, এই মুহূর্তে কথা বলা যাবে না।’

(দ্য রিপোর্ট/এমএইচ/এস/এম/অক্টোবর ১৭, ২০১৬)

পাঠকের মতামত:

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

M

M

SMS Alert

এর সর্বশেষ খবর

- এর সব খবর