thereport24.com
ঢাকা, শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল 24, ১২ বৈশাখ ১৪৩১,  ১৭ শাওয়াল 1445

২০তম সম্মেলনের সাজসজ্জা

অনুপস্থিত আ’লীগের ইতিহাস-ঐতিহ্য

২০১৬ অক্টোবর ১৯ ২০:৩৫:৩৬
অনুপস্থিত আ’লীগের ইতিহাস-ঐতিহ্য

মুহম্মদ আকবর, দ্য রিপোর্ট : দেশের ঐতিহ্যবাহী পুরোনো রাজনৈতিক সংগঠন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ২০তম জাতীয় সম্মেলন ২২-২৩ অক্টোবর। এ উপলক্ষে সম্মেলনস্থল ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যান ছাড়াও আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয় ও সভাপতির কার্যালয়সহ রাজধানীর বিভিন্ন সড়ক ও ভবন সাজানো হয়েছে বর্ণাঢ্য সাজে। সাজসজ্জার অংশ হিসেবে স্থান পেয়েছে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, আওয়ামী লীগের সভাপতি বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও জাতির জনকের দৌহিত্র শেখ হাসিনার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়ের আলোকচিত্র। আর আলোয় আলোকিত হয়েছে আওয়ামী লীগের প্রতীক নৌকা। তবে বাদ পড়ে গেছে মুক্তিযুদ্ধ, ভাষা আন্দোলন, গণ-অভ্যুত্থান ও জাতীয় নেতাদের নিয়ে কোনো ছবি বা দেয়ালচিত্র। সম্মেলনের সাজসজ্জা নিয়ে তাই অনেকে পক্ষে-বিপক্ষে নানা মন্তব্য করেছেন।

অনেকের ভাষ্য, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগকে শুধুমাত্র একটি রাজনৈতিক দল হিসেবে বিবেচনা করলে দলটিকে খাটো করা হয়। বাংলাদেশ ও আওয়ামী লীগ এক ও অবিচ্ছেদ্য। এই রাজনৈতিক দলটির সঙ্গে বাংলাদেশ তথা এই ভূখণ্ডের নানা বীরত্বগাথা জড়িত; কী ভাষা আন্দোলনে, কী মহান মুক্তিযুদ্ধে, কী শোষণ মুক্তির গণতান্ত্রিক আন্দোলন-সংগ্রামে। সে কারণে সম্মেলনের সাজসজ্জায় দলের প্রতিষ্ঠাকালীন নেতাকর্মী থেকে শুরু করে ভাষা-আন্দোলন, গণ-অভ্যুত্থান, মুক্তিযুদ্ধ, শহীদ চার নেতার ছবিসহ সংশ্লিষ্ট ছবি স্থান পেতে পারতো।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের ছাত্র ইমরান মাহফুজ দ্য রিপোর্ট টুয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, ‘আওয়ামী লীগের সম্মেলন উপলক্ষে সজ্জিত পুরো ক্যাম্পাসে ঘুরে অন্য রকম আনন্দ পাচ্ছি। চারদিকে আলো, উৎসবমুখরতা দেখার জন্যই রাতে বের হই।’

বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরিজীবী আবুল কালাম আজাদ বলেন, ‘বাসায় ফেরার সময়ে এমন আলোর ঝলক কার না ভালো লাগে। অন্যান্য আচার অনুষ্ঠান থেকে এই সম্মেলনের পার্থক্য বোঝানোর জন্য সাজসজ্জায় ইতিহাস ও ঐতিহ্য নির্ভর কিছু সংযোজন হলে ভালো লাগতো।’

মুক্তিযুদ্ধের নেতৃত্বদানকারী এ দলটির সম্মেলনের সাজসজ্জার বিষয়ে বিশিষ্ট সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব রামেন্দু মজুমদার বলেন, ‘আওয়ামী লীগের সম্মেলন অনেকটা উৎসবমুখর হয়। এবারেও বোধহয় তাই হতে যাচ্ছে। প্রতিনিয়ত দলের সিনিয়র নেতারা পরিদর্শন করছেন। কোনো অসঙ্গতি আছে কি না ভেবে দেখছেন। কোনো সংযোজনের প্রয়োজন হলে তারা তা করছেন। সেই সঙ্গে যদি ভাষা আন্দোলন, মুক্তিযুদ্ধ ও জাতীয় নেতাদের ছবি স্থান পেত তাহলে আরও সৌন্দর্যসমৃদ্ধ হতো।’

এই বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে কবি নির্মলেন্দু গুণ বলেছেন, ‘সম্মেলনের কাজ এখনো শেষ হয়নি। সুতরাং এসব বিষয় যোগ করার সুযোগ এখনো আছে। আমার বিশ্বাস, যারা সংশ্লিষ্ট কাজে নিয়োজিত আছেন তাদের পরিকল্পনার মধ্যে এটা আছে এবং সম্মেলনের আগেই তা সংযোজিত হবে।’

যদিও ১৯ অক্টোবর সকালে সোহরাওয়ার্দী উদ্যান পরিদর্শন করে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম বলেছেন, ‘আমার জানা ছিল না যে, এত বিশাল পরিসরে এই আয়োজন হচ্ছে। আমার মনে হয়, আমাদের দলের সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এই বিরাট কর্মযজ্ঞ দেখলে বিস্মিত হবেন।’

একইভাবে বিভিন্ন সময় সম্মেলন ভেন্যু ভ্রমণ করে মন্তব্য করছেন দলের প্রেসিডিয়াম সদস্য সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরসহ অন্যান্য কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ।

বাইরে না থাকলেও সম্মেলনের উদ্বোধনী আয়োজনে দেশের কৃষ্টি কালচার ও আওয়ামী লীগের ইতিহাস-ঐতিহ্যনির্ভর সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও প্রামাণ্যচিত্র রয়েছে বলে দ্য রিপোর্ট টুয়েন্টিফোর ডটকমকে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাংস্কৃতিক সম্পাদক ও সম্মেলন উপলক্ষে সাংস্কৃতিক উপ-কমিটির আহ্বায়ক আসাদুজ্জামান নূর। তিনি বলেন, শুধু সাংস্কৃতিক আয়োজনেই নয়, আমাদের সম্মেলনের থিম সংয়ের মধ্যেই দেশের অতীত বর্তমান ও ভবিষ্যৎ সম্পর্কবিষয়ক নানা বিষয় থাকবে।’

আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক ও সম্মেলন উপলক্ষে সাজসজ্জা উপ-কমিটির আহ্বায়ক জাহাঙ্গীর কবীর নানক সাংবাদিকদের বলেন, ‘সম্মেলন মানেই শুধু নেতা নির্বাচন নয়। এক ধরনের ভাবগাম্ভীর্য বজায় রেখে কাজ করি। আমাদের পূর্বপরিকল্পনা অনুযায়ী সাজসজ্জা করছি। সে অনুযায়ী আমাদের কাজ চলছে।’

(দ্য রিপোর্ট/এমএ/এপি/এম/অক্টোবর ১৯, ২০১৬)

পাঠকের মতামত:

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

M

M

SMS Alert

এর সর্বশেষ খবর

- এর সব খবর