ব্যবসায়ীদের স্বাস্থ্য জ্ঞানের অভাব : শিল্পমন্ত্রী

দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক : শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু বলেছেন, ‘দেশে খাদ্য সচেতনতা বাড়ায় মানুষ বিষাক্ত খাদ্য এড়িয়ে চলছে। কিন্তু আমাদের অনেক শিল্পপতি-ব্যবসায়ীদের স্বাস্থ্য সচেতনতার ক্ষেত্রে জ্ঞানের অভাব রয়েছে। যে কারণে তারা মানহীন পণ্য উৎপাদন করছেন। এটিকে তাদের জ্ঞানের অভাব না অতি মুনাফার লোভ কোনটি বলবো?’

রাজধানীর বাংলাদেশ স্ট্যান্ডার্ডস অ্যান্ড টেস্টিং ইন্সটিটিউশনে (বিএসটিআই) বৃহস্পতিবার (২০ অক্টোবর) এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। ৪৭তম বিশ্ব মানদিবস উপলক্ষে বিএসটিআই সভাটির আয়োজন করে।

শিল্পমন্ত্রী বলেন, ‘এখন বিদেশি বিনিয়োগ আসার জন্য প্রস্তুত। সব দেশই আমাদের দেশে বিনিয়োগ করতে চায়। এ জন্য ১০০টি অর্থনৈতিক অঞ্চল স্থাপন করা হচ্ছে। তবে বিদেশি বিনিয়োগ আসার আগে দেশীয় উদ্যোক্তাদের পণ্যেরমান নিশ্চিত করতে হবে। বিদেশি বিনিয়োগ আসার পর মান ভালো না হলে প্রতিযোগিতায় টিকে থাকা যাবে না।’

ব্যবসায়ীদের অতিমুনাফার মানসিকতা পরিহার করার আহবান জানিয়ে শিল্পমন্ত্রী বলেন, ব্যবসায়ীদের অতিমুনাফার মানসিকতা থেকে বেরিয়ে এসে পণ্য মানের বিষয়ে সচেতন হতে হবে। গুটিকয়েক অতিলোভী ব্যবসায়ীর কারণে সমাজ ও দেশ ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে, ব্যবসায়ীদের ইমেজ ক্ষুন্ন হচ্ছে।

শিল্পমন্ত্রী বলেন, ‘প্রতিটা ক্ষেত্রে বাংলাদেশ অভাবনীয় সাফল্যের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। এরই সাথে পাল্লা দিয়ে পণ্য মানের বিষয়ে বিএসটিআইকে যেমন তার দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করতে হবে তেমনি ব্যবসায়ী সমাজকেও তাদের দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করতে হবে।’

‘বিএসটিআই যে মানের ওপর ভিত্তি করে মান সনদ প্রদান করে পরবর্তীতে ব্যবসায়ীদের সেই মান বজায় রাখতে হবে। সরকার সবকিছু আইন প্রয়োগ করে বাধ্য করতে চায় না, সরকার চায় সচেতনতা বৃদ্ধির মাধ্যমে পণ্যের মান ঠিক রাখতে’ বলেন আমু।

তিনি বলেন, ‘বিএসটিআইকেও অনুধাবন করতে হবে অন্যান্য সরকারি প্রতিষ্ঠানের চেয়ে তাদের কাজের গুরুত্ব অনেক বেশি। বিএসটিআই’র ওপর জনস্বাস্থ্যসহ ব্যবসা-বাণিজ্য অনেক কিছু নির্ভর করছে।’

আমু বলেন, ডিসেম্বরের মধ্যে হাজারিবাগ থেকে সাভারে চামড়া শিল্প নিয়ে আসতে পারলে পোশাকখাতের মতো চামড় থেকেও মোটা অঙ্কের রফতানি আয় করা সম্ভাব। পরিবেশবান্ধব স্থানে চামড়াশিল্প নিয়ে গেলে রফতানি আয় বাড়বে।

বিএসটিআই’র মহাপরিচালক ইকরামুল হকের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন শিল্প মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মো. মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়া ও এফবিসিসিআই’র ভারপ্রাপ্ত সভাপতি শফিউল ইসলাম মহিউদ্দিন।

মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়া বলেন, বেশ কয়েক বছর ধরে সরকার বেসরকারিখাতকে গুরুত্ব দিয়ে আসছে। দেশের জিডিপিতে বেসরকারিখাতের অবদান ৮৮ শতাংশের মতো। সরকারি পদক্ষেপের কারণে সামনে পোশাকখাতের পাশাপাশি চামড়াসহ আরও কয়েকটি পণ্যের রফতানি বাড়বে বলে আমরা আশা করছি।

তিনি বলেন, বিএসটিআই’র উন্নয়নে শিল্প মন্ত্রণালয় কাজ করছে। ইতোমধ্যে একটি প্রকল্পের কাজ শেষ হয়েছে। এর মাধ্যমে বিএসটিআইকে বেশকিছু সরাঞ্জম দেওয়া হয়েছে। এক সময় পণ্যের ক্ষেত্রে আমাদের দেওয়া সনদ বাইরের দেশে গ্রহণ হতো না। কিন্তু এখন আমাদের দেওয়া সনদ বাইরের দেশে গ্রহণ করা হচ্ছে।

শফিউল ইসলাম মহিউদ্দিন বলেন, দেশের ভিতরে মানসম্মত পণ্য উৎপাদন করতে না পারলে বিদেশি পণ্য দেশে ঢুকে পড়বে। তাই আমাদের মানের দিকে গুরুত্ব দিতে হবে। এদিকে শিল্প মন্ত্রণালয় ও বিএসটিআইকেও নজর দিতে হবে। গত বছর আমরা ৭.০৫ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জন করেছি। প্রবৃদ্ধির এ ধারা অব্যাহত রাখতে এবং মধ্য আয়ের দেশে উপনীত হতে শিল্পায়নের পাশাপাশি পণ্যের মান নিশ্চিত করতে হবে।

(দ্য রিপোর্ট/এসএস/এপি/অক্টোবর ২০, ২০১৬)