thereport24.com
ঢাকা, মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল 24, ১০ বৈশাখ ১৪৩১,  ১৪ শাওয়াল 1445

শেষ সিদ্ধান্তের অপেক্ষা!

সর্বত্র আশরাফের বদলে কাদেরের নাম

২০১৬ অক্টোবর ২১ ১৭:০০:৫২
সর্বত্র আশরাফের বদলে কাদেরের নাম

মুহম্মদ আকবর, দ্য রিপোর্ট : এখনো আওয়ামী লীগের সভাপতি পদে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিকল্প নেই-এ বক্তব্য দলের কেন্দ্রীয় নেতা থেকে শুরু করে তৃণমূল পর্যন্ত। সেই সঙ্গে দলের আরেক গুরুত্বপূর্ণ পদ সাধারণ সম্পাদক পদে তৃতীয়বারের মতো সৈয়দ আশরাফুল ইসলামের নামই ছিল সবার মুখে। তবে সম্মেলনের ৪৮ ঘণ্টায় বদলে গেছে দৃশ্যপট। সৈয়দ আশরাফের নাম ছাপিয়ে বারবার উঠে আসছে দলের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের নাম। মন্ত্রী হিসেবে তার সফলতা, মাঠ পর্যায়ের কর্মীদের সমর্থন আর ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি হিসেবে তার দূরদর্শিতার ফলে দলের সাধারণ সম্পাদক পদে ওবায়দুল কাদেরের নাম বারবার উঠে আসছে। বুধবার (১৯ অক্টোবর) দলের বর্তমান কমিটির শেষ কার্যনির্বাহী সভা শেষে কাদেরের হাসিমুখ ও ঘনিষ্ঠজনের কাছে ‘নেত্রী আমাকে প্রস্তুতি নিতে বলেছেন’ মন্তব্যে সাধারণ সম্পাদক পদে তার নাম জোরালো হয়ে উঠেছে। তবে বৃহস্পতিবার (২০ অক্টোবর) সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী সোহেল তাজকে নিয়ে সৈয়দ আশরাফের শেখ হাসিনার সঙ্গে সাক্ষাৎ আবার অন্য প্রেক্ষাপটের ইঙ্গিত দিচ্ছে। সব মিলিয়ে ‘ম্যাড়েম্যাড়ে’ হতে যাওয়া আওয়ামী লীগের ২০তম ত্রি-বার্ষিক জাতীয় সম্মেলন জমে উঠেছে। শুক্রবার (২১ অক্টোবর) সম্মেলনের আগের দিন সম্মেলনস্থল সোহরাওয়ার্দী উদ্যান, বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয় ও ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে আগত সবার মুখে একটাই কথা ছিল-কে হতে যাচ্ছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক। তবে সব কথার ‘শেষ কথা’র জন্য সবার দৃষ্টি বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার দিকে। তাদের বক্তব্য, ‘নেত্রী ঠিক করবেন, কে হবেন আমাদের নেতা’। সৈয়দ আশরাফ, ওবায়দুল কাদেরের আলোচনার মাঝে হঠাৎ উঠে আসা দলের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবির নানক এবং কৃষিবিষয়ক সম্পাদক ড. আব্দুর রাজ্জাকের নাম আবারও হারিয়ে গেছে।

টানা তৃতীয়বারের মতো ‘ক্রাইসিস ম্যান’ সৈয়দ আশরাফের সাধারণ সম্পাদকে নির্বাচিত হওয়া যখন সময়ের ব্যাপার ছিল, ঠিক সেই সময়ে বৃহস্পতিবার গণমাধ্যমে ওবায়দুল কাদের বলে বসেন, ‘দলের সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, নানা রিপোর্টে তোমার নাম এগিয়ে। সে কারণে তোমার দায়িত্ব নেওয়াও লাগতে পারে তুমি প্রস্তুতি নাও’। তবে এ বিষয়ে ওবায়দুল কাদেরের মুখ থেকে আনুষ্ঠানিক কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

পদ হারাতে হতে পারে-এ নিয়ে কোনো উদ্বেগ লক্ষ করা যায়নি মুক্তিযুদ্ধকালীন অস্থায়ী রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব পালন করা সৈয়দ নজরুল ইসলামের ছেলে সৈয়দ আশরাফের মধ্যে। বরং দৃঢ়কণ্ঠে তিনি সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে বলেছেন, ‘আমার কাছে পদ বড় নয়, দলের কর্মী হয়ে কাজ করার মধ্যেই আনন্দ।’ যদিও ওবায়দুল কাদেরের বক্তব্যে পর বৃহস্পতিবার সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম ও সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী তানজীম আহমদ সোহেল তাজের মিটিং এবং মিটিং শেষে সন্ধ্যায় সৈয়দ আশরাফের গণভবনে প্রবেশের বিষয়টি কাদেরের সাধারণ সম্পাদকে পদে আসার বিষয়টি নিয়ে আরও আলোচনা তৈরি করেছে। সৈয়দ আশরাফ বক্তব্যের মধ্যে লক্ষ্য করা গেছে হতাশা আর অনেকেই পিছু ছুটছেন কাদেরের দিকে।

একই পরিস্থিতি ছিল ২০১২ সালের আওয়ামী লীগের ১৯তম জাতীয় সম্মেলনের আগেও। সে সময়ও প্রচারণায় সামনে এগিয়ে ছিলেন ওবায়দুল কাদের। এমনকি সম্মেলনের দুদিন আগে নিজের সমর্থকদের মাঝে মিষ্টি বিতরণ ও শুভেচ্ছা বিনিময়ের পর্বও হয়েছিল। কিন্তু আওয়ামী লীগের সেই সম্মেলনের মাধ্যমে দলের সভাপতি, সাধারণ সম্পাদকসহ দলের অন্যান্য নেতা নির্বাচন করে সব রটনা ও গুঞ্জনের অবসান করে। সে সময় কাদের বলেছিলেন, ‘আমি দলের জন্য কাজ করি। পদ আমার কাছে কোনো বিষয় না।’

সাধারণ সম্পাদক কে হচ্ছেন-এ গুঞ্জন নিয়ে দলের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ড. নূহ-উল আলম লেনিন দ্য রিপোর্ট টুয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, ‘কদিন আগেও এ রকম গুঞ্জন শুরু হয়েছিল পরে তার অবসান হয়েছে। তবে পুনরায় শুরু হওয়া গুঞ্জনকে কোনোভাবেই উড়িয়ে দিতে পারছি না। যেহেতু সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম নিজেই বলেছেন, আমি দলের সাধারণ সম্পাদক না হলে অবাক হবো না।’

এ বিষয়ে দলের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক পরাষ্ট্রমন্ত্রী ডা. দীপু মনির উত্তরটা ছিল ‘কূটনৈতিক’। তিনি বলেন, ‘আমি এসব শুনছি না। কারণ, সম্মেলনে আগত বিদেশি অতিথিদের নিয়ে ব্যস্ত আছি। আশি শুধু জানি আমি নিজে একজন কাউন্সিলর। আর সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম ও ওবায়দুল কাদের দুজনেই আমার শ্রদ্ধেয় বড় ভাই, অনেক বড় নেতা। কাউন্সিলের মাধ্যমের স্বচ্ছ ভোটের মধ্যে দিয়ে যিনি আসবেন, তাকেই আমি স্বাগত জানাবো।’

(দ্য রিপোর্ট/এমএ/এম/এনআই/অক্টোবর ২১, ২০১৬)

পাঠকের মতামত:

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

M

M

SMS Alert

এর সর্বশেষ খবর

- এর সব খবর