thereport24.com
ঢাকা, শনিবার, ২০ এপ্রিল 24, ৬ বৈশাখ ১৪৩১,  ১১ শাওয়াল 1445

চবিতে ফের সক্রিয় ইসলামী ছাত্রী সংস্থা

২০১৬ অক্টোবর ২১ ২২:০৬:১৬
চবিতে ফের সক্রিয় ইসলামী ছাত্রী সংস্থা

চবি প্রতিনিধি : চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে (চবি) ২০১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষের ভর্তি পরীক্ষা সামনে রেখে আবারও সক্রিয় হয়ে উঠেছে ইসলামী ছাত্রী সংস্থার সাংগঠনিক কার্যক্রম। ইতিমধ্যে তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী হলগুলোতে লিফলেট-পোস্টার বিতরণ শুরু করেছে। আর ছাত্রী হলের নামাজের কক্ষগুলোতে রাখা হচ্ছে বিভিন্ন জিহাদি বই। ছাত্রী সংস্থা সক্রিয় ওঠার পেছনে হল প্রশাসনের নজরদারি আর দায়িত্বে অবহেলাকেই দায়ী করছেন হলে অবস্থান করা সাধারণ শিক্ষার্থী ও ছাত্রলীগ নেত্রীরা। তবে হল প্রশাসনের পক্ষ থেকে এ অভিযোগ অস্বীকার করা হয়েছে।

গত ১৭ আগস্ট পুলিশের সহায়তায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন প্রীতিলতা, খালেদা জিয়া এবং শামসুননাহার হলের তল্লাশি চালিয়ে বিপুল পরিমাণ জিহাদি-মৌলবাদী বই, লিফলেট, ল্যাপটপ, সিম জব্দ করেছিল। ওই সময় কাউকে আটক করতে পারেনি তারা। তবে ছাত্রী সংস্থার কার্যক্রম চালানোর অভিযোগে প্রীতিলতা হলের ১১২ নম্বর কক্ষটি সিলগালা করে দেওয়া হয়। পরবর্তী সময়ে কিছুদিন ছাত্রী সংস্থার কার্যক্রম চোখে না পড়লেও ভর্তি পরীক্ষা সামনে রেখে তারা কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে বলে জানান সাধারণ শিক্ষার্থী ও ছাত্রলীগ নেত্রীরা।

তারা জানান, বিশ্ববিদ্যালয়ে ইসলামী ছাত্র শিবিরের কোনো কার্যক্রম না থাকলেও গোপনে চালিয়ে কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে ইসলামী ছাত্রী সংস্থার কার্যক্রম। আর ভর্তি পরীক্ষা সামনে রেখে ছাত্রী সংস্থার মেয়েরা বিশ্ববিদ্যালয়ে তাদের সংগঠনের বিভিন্ন বই, দাওয়াতের নামে লিফলেট বিতরণ করে চলেছে। এসব লিফলেটে তাদের সংগঠনের ইতিহাস, কার্যক্রম, লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য বর্ণনা করা হচ্ছে। অনেক ক্ষেত্রে ছাত্রীদের আবাসন সংকট এবং ধর্মভীতি-সহ বিভিন্ন দুর্বলতাকে কাজে লাগিয়ে ছাত্রী সংস্থার মেয়েরা কৌশলে নিজেদের দল ভারী করছে। বিশেষ করে নতুন ছাত্রীদের টার্গেট করে চলছে তাদের এ কার্যক্রম।

নিজ দলে টানতে নিজেদের কক্ষ ছেড়ে দিয়ে অন্যকে থাকার সুযোগ দেয় সংস্থার মেয়েরা। তা ছাড়া নিজেদের সাংগঠনিক কার্যক্রম পরিচালনার জন্য সপ্তাহের প্রতি বৃহস্পতিবার রাত বারোটার পর গ্রুপ মিটিং বসে বলেও জানা যায়।

অনুসন্ধানে জানা যায়, প্রীতিলতা হলের ৩১২, ৩০৮, ৪২২ নম্বর কক্ষ, খালেদা জিয়া হলের ২৩৪ নম্বর কক্ষ এবং শামসুননাহার হলের ২১১ নম্বর কক্ষ থেকে স্ব স্ব হলের সাংগঠনিক কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে ছাত্রী সংস্থার কর্মীরা। ধর্মীয় অনুভূতিকে পুঁজি করে ছাত্রী সংস্থার কর্মীরা হলে প্রভাব বিস্তার করে চলেছে। এতে করে বিশ্ববিদ্যালয়ে বাধাগ্রস্ত হচ্ছে প্রগতিশীলতা এবং উৎসাহিত হচ্ছে মৌলবাদী শক্তি।

প্রীতিলতা হলের আবাসিক ছাত্রী ও কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের কার্যনিবার্হী সদস্য উম্মে সানজিদা জিনিয়া দ্য রিপোর্ট টুয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, হলের প্রভোস্টকে বারবার বলেও কোনো লাভ হচ্ছে না দেখে আমরা কিছুদিন আগে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে বিষয়গুলো অবহিত করি। পরে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ছাত্রীদের তিনটি হলই তল্লাশি চালায়। এ সময় তারা মৌলবাদী জিহাদি অনেকগুলো বই উদ্ধার করে। এ সময় কিছুদিন হলে তাদের কার্যক্রম চোখে না পড়লেও এখন আবার ভর্তি পরীক্ষা সামনে রেখে যুদ্ধাপরাধী সংগঠনের এই অঙ্গসংগঠনটি আবার মাথা চাড়া দিয়ে উঠতে চাইছে।

তিনি আরও বলেন, এসব বিষয়ে আমরা হল প্রশাসনকে বারবার অবহিত করার পরও তারা কোনো প্রদক্ষেপ নিচ্ছে না।

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রীতিলতা হলের প্রভোস্ট প্রফেসর ড.শামীমা ফেরদৌসি দ্য রিপোর্টকে বলেন, হলে এ ধরনের কোনো কার্যক্রম নেই। এ ধরনের কোনো অভিযোগও আসেনি আমার কাছে। আমাদের হলের আবাসিক শিক্ষকরা প্রতিদিনই হলে গিয়ে এসব বিষয়ে নজর রাখছেন যাতে করে ছাত্রী সংস্থার কোনো কার্যক্রম না চালাতে পারে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর মোহাম্মদ আলী আজগর চৌধুরী দ্য রিপোর্টকে বলেন, আমাদের কাছে এ ধরনের অভিযোগ এর আগেও এসেছিল। পরে আমরা তিনটি ছাত্রী হলে তল্লাশি চালিয়ে ছিলাম। এখন ছাত্রী সংস্থার কার্যক্রম পরিচালনা করছে এ ধরনের কোনো অভিযোগ আমাদের কাছে আসেনি। সুনির্দিষ্ট অভিযোগ এলে আমরা অবশ্যই এর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেব।

প্রসঙ্গত, রবিবার (২৩ অক্টোবর) থেকে শুরু হচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষের ভর্তি পরীক্ষা। যা চলবে ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত।

(দ্য রিপোর্ট/এম/এস/অক্টোবর ২১, ২০১৬)

পাঠকের মতামত:

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

M

M

SMS Alert

এর সর্বশেষ খবর

- এর সব খবর