thereport24.com
ঢাকা, শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল 24, ৬ বৈশাখ ১৪৩১,  ১০ শাওয়াল 1445

তবু যাওয়া হলো না সম্মেলনস্থলে

২০১৬ অক্টোবর ২২ ১১:৪০:৪৫
তবু যাওয়া হলো না সম্মেলনস্থলে

দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক : চট্টগ্রামের সাতকানিয়ার মো. ইনামুল। রাত জেগে দীর্ঘ পথ ভ্রমণ করে ছুটে এসেছেন ঢাকায়। উদ্দেশ্য বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ২০তম জাতীয় সম্মেলনে যোগ দেওয়া।

প্রায় ১২০ জন সহকর্মীর সঙ্গে শনিবার ভোর ৪টার দিকে এসে পৌঁছান ফকিরাপুলের একটি হোটেলে। কিন্তু সব আনুষ্ঠানিকতা শেষ করে ইনামুল হোটেল রুমের চাবি হাতে পান শনিবার সকাল ৮টায়।

ইনামুল রুমে ঢুকে ফ্রেশ হওয়ার আগেই অন্য সহকর্মীরা হোটেল ত্যাগ করে সম্মেলনের উদ্দেশ্যে রওনা দিয়েছেন। তড়িঘড়ি হোটেল থেকে বের হয়ে প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেওয়া জাহিদকে ফোন দেন ইনামুল।

জাহিদ তাকে প্রেস ক্লাবে আসতে বলেন। প্রেস ক্লাবে এসে ফোন দিলে জাহিদ জানান, তারা সম্মেলনে ঢোকার গেটে। প্রেস ক্লাব থেকে দৌড়াতে দৌড়াতে দোয়েল চত্বরে ছুটে আসেন ইনামুল।

কিন্তু বিধি বাম। ততক্ষণে সহকর্মীরা গেট দিয়ে ভিতরে ঢুকে পড়েছেন। আর সম্মেলনে ঢোকার কার্ড না থাকায় পুলিশ আটকে দিলেন ইনামুলকে। এরপর একাধিকবারর জহিদকে ফোন দিলে তা বন্ধ পান। ফলে হতাশ মুখে দোয়েল চত্বরের পাশের ফুটপাতে বসে পড়েন ইনামুল।

শনিবার সকাল ১০টার দিকে ইনামুল দ্য রিপোর্ট টুয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, ‘জাহিদ ভাইয়ে নেতৃত্বে আমরা একসঙ্গে ১২০ জনের মতো এসেছি। সবাইকে প্রেস ক্লাব থেকে কার্ড দেওয়া হবে জানানো হয়। কিন্তু হোটেলে আমাকে রেখে সবাই চলে এসেছে। দৌড়াতে দৌড়াতে এখানে এসেও কাউকে পাইনি। মোবাইলও বন্ধ পাচ্ছি।’

কার্ড না থাকায় ইনামুলের মতো দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ছুটে আসা শতাধিক নেতা-কর্মী সম্মেলনে ঢুকতে না পেরে দোয়েল চত্বরে হতাশ হয়ে বসে আছেন। ময়মনসিংহ থেকে আসা মো. আরিফুল এবং রুবেল মিয়া সেই দলের (কার্ড না থাকায় সম্মেলনে ঢুকতে না পারা) প্রতিনিধি।

মো. আরিফুল ও রুবেল মিয়া জানান, তারা একসঙ্গে ৩০ জন এসেছেন। শনিবার ভোর রাতে ঢাকায় এসে পৌঁছেন তারা। হোটেল থেকে সবাইকে ৯টার মধ্যে দোয়েল চত্বরে আসতে বলেন তাদের নেতা আনোয়ার।

এরপর ৯টার দিকে দোয়েল চত্বরে এসে তারা আনোয়ারকে ফোন দেন। তখন আনোয়ার তাদের কার্জন হলের সামনে অপেক্ষা করতে বলেন। কিন্তু আধাঘণ্টা পেরিয়ে গেলেও আনোয়ার না আসায় আবার সাড়ে ৯টার দিকে তাকে ফোন দেন আরিফুল। একাধিকবা ফোন দিলেও তা রিসিভ করেননি আনোয়ার।

এরপর ১০টার দিকে আনোয়ারের মোবাইলে ফোন দিয়ে তা বন্ধ পান আরিফুল। ফলে সম্মেলনে ঢুকতে না পেরে হতাশ হয়ে কার্জন হলের গেটের সামনেই সাড়ে ১১টা পর্যন্ত বসে থাকতে দেখা যায় আরিফুল ও রুবেলকে।

তবে সকাল ৮টার দিকে নেতা-কর্মীদের উপস্থিতিতে দোয়েলচত্বর এলাকায় উৎসবমুখর পরিবেশের সৃষ্টি হয়। গলায় কার্ড ঝুলিয়ে, মাথায় ক্যাপ পরে সম্মেলনস্থলের দিকে রওনা হন নেতা-কর্মীরা। এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত সকাল সাড়ে ১১টার দিকেও দল বেঁধে নেতা-কর্মীদের সম্মেলন স্থলের দিকে যেতে দেখা যায়।

নেতা-কর্মীদের হাতে ‘উন্নয়নের মহাসড়কে, এগিয়ে চলেছি দুর্বার, দেশরত্ন শেখ হাসিনার নেতৃত্বে, সময় এখন বাংলাদেশের মাথা উচু করে দাঁড়াবার।’ ‘উন্নয়নের মহাসড়কে বাংলাদেশ, সাবাস বাংলাদেশ’-এ ধরনের স্লোগান লেখা বিভিন্ন রকম ব্যানার, ফেস্টুন শোভা পাচ্ছে। কেউ কেউ নিয়ে এসেছেন বাদ্যযন্ত্র।’

সম্মেলন উপলক্ষে যান চলাচল নিয়ন্ত্রণ করায় নেতা-কর্মীদের অনেকখানি রাস্তা পায়ে হেঁটে সম্মেলনস্থলে যেতে হচ্ছে। প্রেস ক্লাবের সামনের রাস্তা ও সচিবালয়ের সামনের রাস্তায় যান চলাচল নিয়ন্ত্রণ করা হলেও ঢাকা মেডিকেলমুখী রাস্তায় সিএনজি, মোটরবাইক, রিকশা যাতায়াতে কোন বাধা দেওয়া হচ্ছে না।

বাউফল থেকে আসা আসাদ বলেন, ‘আওয়ামী লীগ দেশের সব থেকে পুরাতন ও বৃহৎ রাজনৈতিক দল। এমন দলের কর্মী হয়ে আমি গর্ববোধ করছি। আমরা আশা করি এই সম্মেলনের মাধ্যমে নির্বাচিত নেতারা যোগ্য নেতৃত্ব দিয়ে দলকে এগিয়ে নিয়ে যাবেন।’

খুলনা থেকে আসা মো. আলম জানান, তারা এক সঙ্গে ১০ জন এসেছেন। খুলনা থেকে রওনা দিয়ে বুধবার রাতে ঢাকায় পৌঁছান। ওই দিন থেকেই গুলিস্তানের একটি হোটেলে রয়েছেন।

তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগের মতো বড় একটি দলের কাউন্সিলে যোগ দিতে পারা খুবই আনন্দের। এ জন্যই খুলনা থেকে ছুটে এসেছি। আমরা আশা করি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশ যেমন উন্নয়নের মহাসড়কে উঠে এসেছে, তেমনি এবারে কাউন্সিলে নির্বাচিত নেতাদের নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ অনন্য উচ্চতায় পৌঁছাবে।’

(দ্য রিপোর্ট/এসএস/আরএমএম/এমকে/অক্টোবর ২২, ২০১৬)

পাঠকের মতামত:

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

M

M

SMS Alert

এর সর্বশেষ খবর

- এর সব খবর