thereport24.com
ঢাকা, শনিবার, ২০ এপ্রিল 24, ৭ বৈশাখ ১৪৩১,  ১১ শাওয়াল 1445

আ.লীগের ২০তম জাতীয় সম্মেলন

বৈচিত্র্যময় সাংস্কৃতিক আয়োজনে ক্লান্তির অবসান

২০১৬ অক্টোবর ২২ ২১:৪৯:০৫
বৈচিত্র্যময় সাংস্কৃতিক আয়োজনে ক্লান্তির অবসান

মুহম্মদ আকবর, দ্য রিপোর্ট : স্লোগান, বক্তৃতা এবং প্রত্যাশা-প্রাপ্তিরহিসাব গুনতে গুনতে সবার চোখে-মুখে যখন অবসাদের ছাপ, তখনি সম্মেলন নানাবিধ পরিবেশনা নিয়ে মঞ্চে আসেন দেশবরেণ্য শিল্পীরা। সময়টা শনিবার আওয়ামী লীগের ২০তম সম্মেলনের উদ্বোধনের পর এবং দিনশেষের প্রথম দিনের আয়োজনের সমাপনী পর্বে। রাজনীতির আলাপ ছেড়ে সুর-সঙ্গীতের মূর্ছনায় মেতে উঠলেন বিভিন্ন জেলা থেকে আসা সম্মেলনের কাউন্সিলররা। সন্ধ্যায় সম্মেলন মঞ্চে প্রায় আড়াই ঘণ্টার সাংস্কৃতিক পরিবেশনায় উপস্থিত ছিলেন বিদেশি অতিথিরা। আর তাদের সঙ্গে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানজুড়ে ছড়িয়ে থাকা আওয়ামী লীগ ও এর অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরাও। যোগ দিয়েছিলেন সাধারণ মানুষেরাও।

সম্মেলনের উদ্বোধনী পর্ব শেষে দেশ বরেণ্যশিল্পীদের কণ্ঠে গীত হয় জাতীয় সঙ্গীত। এর পর ছিল ‘উৎসব সঙ্গীত’। এটি লিখেছেন কবি কামাল চৌধুরী এবং সুর করেছেন বাপ্পা মজুমদার। ‘এখন সময় বাংলাদেশের/ এখন সময় আমাদের’ শীর্ষক উৎসব সঙ্গীতটির আবহে পঞ্চাশের অধিক শিল্পী নৃত্য পরিবেশন করে। এরপর ‘তোরা সব জয়ধ্বনি কর’, ‘মানুষ ভজলে সোনার হবে’ ও ‘সংকোচেরও বিহ্বলতা নিজেরে অপমান’ ‘জয় বাংলা বাংলার জয়’, ‘পূর্ব দিগন্তে সূর্য উঠেছে’ ও ‘শোনো একটি মুজিবরের থেকে’ গানের সঙ্গে ছিল নৃত্য।

উদ্বোধনী আনুষ্ঠানিকতা আর সম্মেলনের দ্বিতীয় অধিবেশনে জেলার নেতাদের বক্তব্যের শেষে ছিল বাংলাদেশের ইতিহাস, ঐতিহ্য ও আওয়ামী লীগের আন্দোলন-সংগ্রাম নিয়ে সাজানো সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। সন্ধ্যার আয়োজনে শুরুতেই ছিল দলীয় সঙ্গীত। বিভিন্ন সাংস্কৃতিক সংগঠনের শিল্পীরা সমবেতভাবে দেশের গান পরিবেশন করে। এ সময় স্ক্রিনে শেখ হাসিনার ওপরে একটি তথ্যচিত্র প্রদর্শন করা হয়। এর পর স্বাধীন বাংলা বেতারকেন্দ্রের শিল্পীরা গেয়ে শোনান ‘ধন ধান্য পুষ্পে ভরা’ ও ‘নোঙর নোঙর তোলো তোলো’। এরপর পরিবেশিত হয় সমবেত নৃত্য।

বাচিকশিল্পী আহকামউল্লাহর একক আবৃত্তির পর দ্বৈত কণ্ঠে রবীন্দ্রনাথের গান পরিবেশন করেন সাজেদ আকবর ও সালমা আকবর। এরপর দেশজ চিন্তার গান নিয়ে মঞ্চে আসেন ঢাকা সাংস্কৃতিক দলের শিল্পীরা।

স্বাধীন বাংলা বেতারকেন্দ্রের শিল্পী তিমির নন্দী, ফকির আলমগীর, মনোরঞ্জন ঘোষাল, শাহীন সামাদ, মনোয়ার হোসেন, বুলবুল মহলানবীশ প্রমুখ শিল্পীরা ‘নোঙর তোলো তোলো সময় যে হলো হলো’, ‘ধনধান্যে পুষ্প ভরা আমাদেরই বসুন্ধরা’ এই দুটি গান পরিবেশন করেন। পৃথক পৃথকভাবে নজরুল ও রবীন্দ্রনাথের গান নিয়ে আসেন যথাক্রমে শিল্পী রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যা ও খায়রুল আনাম শাকিল।

গানের সুর থামতেই নূপুরের ধ্বনি নিয়ে মঞ্চে আসে মুনমুন আহমেদ ও তার দল। নৃত্য শেষে শিল্পী রথীন্দ্রনাথ রায় ভাওয়াইয়া গান পরিবেশন করেন।

এ আয়োজনে বান্দরবানের বিভিন্ন আদিবাসী গোষ্ঠীর সম্মিলিত পরিবেশনায় অংশ নেয় বান্দরবান ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী সাংস্কৃতিক একাডেমি। এর পর একক কণ্ঠে আবৃত্তি পরিবেশন করেন ঝর্না সরকার। সদ্য প্রয়াত বহুমাত্রিক লেখক সৈয়দ শামসুল হকের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন স্বরূপ গণসঙ্গীতশিল্পী ফকির আলমগীর পরিবেশন করেন সৈয়দ শামসুল হকের দুটি গান—‘এ সূর্যের উদয়ের পথ, শহীদের খুনে লাল’ ও মুহাম্মদ সামাদের লেখা ‘মুজিব আমার স্বপ্ন-সাহস, মুজিব আমার পিতা’।

এ ছাড়াও এই আয়োজনে বাউল শফি মন্ডল, জলের গান, মমতাজ, দিনাত জাহান মুন্নী, কনা, সাইমুর মুনীর কোনাল, পারভেজ আহমেদ ও মেহেদী হাসান পৃথক পৃথক গান গেয়ে আগত অতিথিদের মাতিয়ে রাখেন।

পুরো আয়োজনের উপস্থাপনায় ছিলেন শমী কায়সার, ডা. নুজহাত চৌধুরী, আসলাম শিহির, মিজানুর রহমান সজল, আনজাম মাসুদ ও শাহাদাৎ হোসেন নিপু।

দলের সাংস্কৃতিক সম্পাদক ও সম্মেলনে উপলক্ষে গঠিত সাংস্কৃতিক উপকমিটির আহ্বায়ক সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর বলেন, ‘এটা সত্য বলেই বিশ্বাস করি যে, আওয়ামী লীগ এবং এ দেশের ইতিহাস ও ঐতিহ্যের সঙ্গে আওয়ামী লীগের যোগসূত্রতা এক ও অবিচ্ছেদ্য। সে কারণেই আমরা দেশের ইতিহাস ও ঐতিহ্যকে নেতাকর্মী ও বিদেশি অতিথিদের সামনে উপস্থাপন করেছি।’

সিআরআইয়ের স্থাপনা শিল্প প্রদর্শনী

আওয়ামী লীগের জাতীয় সম্মেলন উপলক্ষে চারটি বিশেষ স্থাপনা শিল্প প্রদর্শন করছে দলটির গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর রিসার্চ অ্যান্ড ইনফরমেশন (সিআরআই)। সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সম্মেলনস্থলের পাশে আলোকচিত্রের মাধ্যমে স্থাপনা শিল্পগুলো তুলে ধরে হয়েছে। চারটি স্থাপনা শিল্পের শিরোনাম ‘বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের পথচলা (১৯৪৯-২০০৮)’, ‘জননেত্রী শেখ হাসিনার ভোট ও ভাতের অধিকারের জন্য সংগ্রাম (১৯৮১-১৯৯৬)’, ‘ছবিতে বঙ্গবন্ধু’ এবং ‘ঐতিহাসিক ৭ই মার্চের ভাষণ’। আলোকচিত্রের মধ্য দিয়ে ঐতিহাসিক নানা ঘটনা তুলে ধরা হয়েছে সম্মেলনে আগতদের জন্য। আজ রবিবারও এ স্থাপনা শিল্প প্রদর্শনী চলমান থাকবে।

(দ্য রিপোর্ট/এমএ/এম/অক্টোবর ২২,২০১৬)

পাঠকের মতামত:

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

M

M

SMS Alert

এর সর্বশেষ খবর

- এর সব খবর