thereport24.com
ঢাকা, শনিবার, ২০ এপ্রিল 24, ৬ বৈশাখ ১৪৩১,  ১১ শাওয়াল 1445

সাভারে পেঁপে ও কলাচাষে দুই বন্ধুর ভাগ্যবদল

২০১৬ অক্টোবর ২৫ ১৬:১৫:১৯
সাভারে পেঁপে ও কলাচাষে দুই বন্ধুর ভাগ্যবদল

ওমর ফারুক, সাভার প্রতিনিধি : ব্যতিক্রমী কিছু করে সমাজে বেকার যুবকদের কর্মসংস্থান ও ফরমালিন এবং বিষমুক্ত সবজি চাষ করে এলাকার মানুষের চাহিদা পূরণের লক্ষ্য নিয়েই দুই বন্ধু মিলে শুরু করেন সবজি চাষ। মাত্র কয়েক মাসেই তাদের সে স্বপ্ন পূরণ হতে শুরু করেছে।

নরসিংদী থেকে আনা দেশি জাতের কলা ও পেঁপের চাষ করে সবজির চাহিদা মেটানোর পাশাপাশি সেগুলো বিক্রি করে ভালো আয় করছেন। তাদের বাগানে কাজ করেও সংসারে সচ্ছলতা ফিরেছে ১০-১৫ শ্রমিকের।

এ ছাড়া তাদের এ সাফল্য দেখে এলাকার তরুণ ও বেকার যুবকরাও উদ্যোগী হচ্ছেন সবজি চাষে। তবে সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা ও প্রয়োজনীয় পরামর্শ পাওয়া গেলে সবজি চাষে আরও বিপ্লব ঘটানো সম্ভব বলে মনে করছেন এখানকার সচেতন মানুষরা।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সাভারের আশুলিয়া ইউনিয়নের পাড়াগ্রামের দুই বন্ধু সাইদুর রহমান ও জাফর মিয়া। ছোটবেলা থেকে পড়ালেখার পাশাপাশি বাড়ির কৃষিকাজে সহযোগিতা করতেন তারা। কখনো টমেটো, কখনো শশা আবার কখনো ফলিয়েছেন বিভিন্ন ধরনের সবজি।

এরই অংশ হিসেবে দুই বন্ধু মিলে পার্শ্ববর্তী বিরুলিয়া ইউনিয়নের খাগান এলাকায় হুমায়ুন কবির নামে এক ব্যক্তির ৪০ বিঘা পতিত জমিতে শুরু করেন পেঁপে ও কলাচাষ। নরসিংদী থেকে আনা ৪৫ দিন বয়সী দেশি জাতের ৫ হাজার পেঁপে ও ২ হাজার কলা চারা রোপণের মধ্য দিয়ে শুরু হয় দুই বন্ধুর সবজি চাষ।

গত জানুয়ারি মাসে এসব চারা রোপণের দুই মাস পর থেকেই ফল পেতে শুরু করেন তারা। বর্তমানে প্রতিদিন তাদের পেঁপেবাগান থেকে ৩০-৩৫ মণ পেঁপে বাজারজাত করা হচ্ছে। পরে সেগুলো স্থানীয় গেন্ডা বাজার ও মিরপুর বাজারে বিক্রি করা হচ্ছে ৪০-৫০ টাকা কেজিতে। তবে বিষ ও কেমিক্যালমুক্ত সবজি হওয়ায় এসব পেঁপের চাহিদাও রয়েছে।

সরেজমিন পেঁপেবাগান ঘুরে দেখা যায়, প্রতিটি পেঁপেগাছেই ভালো ফল এসেছে। সকাল থেকে গাছ থেকে পেঁপে সংগ্রহ শুরু করেন এখানকার শ্রমিকরা। তাদের সঙ্গে কখনো যোগ দিচ্ছে পাইকাররা। নিজেরাই পছন্দমতো বাগান থেকে পেঁপে উত্তোলন করে কিনে নিয়ে যাচ্ছেন গাড়িতে করে। এ ছাড়াও প্রতিদিন এ বাগানে পেঁপে উত্তোলন ও মোড়কীকরণে কাজ করছেন ১০-১৫ জন শ্রমিক। নগদ টাকা পাওয়ায় সুতার মিলে কাজের পাশাপাশি পেঁপেবাগানে কাজ করে বাড়তি আয়ে সংসারে সচ্ছলতা এনেছেন নারী শ্রমিক জহুরা ও ঝর্না বেগমেরা।

পেঁপেচাষি মো. জাফর মিয়া জানান, বর্তমানে বাজারে যেসব সবজি পাওয়া যায় তার সবই ফরমালিন দেওয়া। এগুলো খেয়ে আমাদের নানা ধরনের জটিল রোগ হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তাই সম্পূর্ণ নির্ভেজাল, বীজ ও ফরমালিনমুক্ত সবজির চাহিদা মেটানোর জন্য এ উদ্যোগ নেই। কয়েক মাসের পরিশ্রমেই আমরা নিজেদের বিনিয়োগকৃত টাকা তুলে লাভের মুখ দেখছি। বর্তমানে আমাদের সাফল্য দেখে আরও অনেক বেকার যুবকরা সবজি চাষে আগ্রহী হচ্ছেন।

রাজধানীর মিরপুর থেকে আসা পাইকার আকরাম জানান, ফরমালিন মুক্ত সবজি হওয়ায় এখানকার পেঁপে ও কলার বাজারে ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। দামে তুলনামূলকভাবে একটু বেশি হলেও এসব সবজি অনেক বেশি সুস্বাদু হওয়ায় বাজারে নেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে তা বিক্রি হয়ে যায়। ফলে এখানকার সবজি বিক্রি করে আমরাও লাভবান হচ্ছি।

সাভার উপজেলা কৃষি অফিসার এম এ সালাম বলেন, আমরা ইতিমধ্যে দুই বন্ধুর পেঁপেবাগানে গিয়ে খোঁজখবর নিয়েছি। তাদের বিভিন্ন পরামর্শও দিয়েছি। তাদের মতো অন্য যে কেউ কৃষি বিষয়ে আমাদের সহযোগিতা চাইলে উপজেলা কৃষি অফিসের পক্ষ থেকে সব ধরনের সেবা প্রদান করা হবে।

(দ্য রিপোর্ট/এইচ/এন/এম/অক্টোবর ২৫, ২০১৬)

পাঠকের মতামত:

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

M

M

SMS Alert

এর সর্বশেষ খবর

- এর সব খবর