thereport24.com
ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল 24, ৫ বৈশাখ ১৪৩১,  ৯ শাওয়াল 1445

মুস্তাফিজুর রহমান নাহিদের উপন্যাস–বৃদ্ধাশ্রম (পর্ব ২)

২০১৬ অক্টোবর ২৬ ১৫:৪৮:৪২
মুস্তাফিজুর রহমান নাহিদের উপন্যাস–বৃদ্ধাশ্রম (পর্ব ২)

টেবিলে মাথা ঠেকিয়ে বসে আছে আজমল। কিছুই ভালো লাগছে না। দুপুরে খাবার খায় নি। সকাল থেকে মনটা আনচান করছে। মনের অবস্থা কাউকে জানাতে পারছে না। ইদানিং প্রায়ই এমন হচ্ছে তার। নিজের সঙ্গে যুদ্ধ করে মরছে। স্ত্রী রীনা। তার কাছে কিছু শেয়ার করবে সে উপায় নেই। ইদানিং রীনার সঙ্গেও তার বনিবনা হচ্ছে না। আগে রীনা বলত আর চুপচাপ শুনে যেত আমজল। খুব বেশি উত্তেজিত হয়ে গেলে কোথাও বেরিয়ে যেত। কিন্তু এখন প্রতিটি কথার উত্তর দেয় রীনা । রীনা যে ভাষায় কথা বলে আজমলের মুখ দিয়ে তা বেরোয় না। তাই চুপ থাকে বেশীর ভাগ সময়।

ঘরে ঢুকে আজমলের দিকে তাকায় রীনা। বুঝতে পারে আজমলের কিছু একটা হয়েছে। কী হয়েছে তা জানতে চায় রীনা।

কী হয়েছে তোমার,এমন করে বসে আছো কেন ?

না কিছু হয়নি।

কিছু তো একটা হয়েছেই। তোমাকে দেখেই বোঝা যাচ্ছে, আমি কিছু বুঝি না মনে করো?

যখন বুঝেই গেছো, প্রশ্ন কেন?

প্রশ্ন করছি কারণ তুমি আমার স্বামী। আমার জানার অধিকার আছে, বলো কী হয়েছে ?

হয়নি কিছু বললাম তো।

তাহলে এমন করছো কেন?

কেমন করছি ?

রেগে যাচ্ছো কেন, আমার সঙ্গে চটে কথা বলছো,এর অর্থ কী?

সবকিছুর অর্থ খুঁজতে এসো না। আমার নিজস্বতা বলতে কিছু আছেতো।

আমার নেই ?

আমি তো বলি নি তোমার নেই। কিন্তু কারো সঙ্গে কিছু নিয়ে জোরাজুরি করি না। যেটা তুমি করো। আসলে---

আসলে কী, কি বলতে চাও তুমি?

কিছু বলতে চাই না, শুধু বলছি আমার সামনে থেকে সরে যাও। আমাকে একা থাকতে দাও। চলে যাও বলছি।

আজমলের কথা শুনে তেলে বেগুনে জ্বলে ওঠে রীনা। নিজেকে সামলাতে পারে না।

তুমি কী মনে করো কিছু বুঝি না আমি। ওই নটিমাগির কথা মনে পড়েছে তোমার। নটি মাগি আমায় শান্তিতে থাকতে দেবে না। সে আমায় থেকেও জ্বালাতো না থেকেও জ্বালাচ্ছে।

মুখ সামলে কথা বলো রীনা। তুমি কী বলছো, সে হিসাব আছে ।

খানকি কে খানকি বলবো তাতে দোষের কী।

রীনা তুমি বড্ড বাড়াবাড়ি করছো। আমার কিন্তু সহ্য সীমা ছাড়িয়ে যাচ্ছে।

কী করবে মারবে নাকি মারো। এ বলে আজমলের কাছে এগিয়ে যায় রীনা। রীনা অগ্নিমূর্তি। কোন কথা বলছে না আজমল। রাগে তার চোখ-মুখ লাল হয়ে গেছে। বাসা থেকে বেরিয়ে যেতে চেষ্টা করে আজমল। ওঠে দাঁড়ায়। তার পথ আটকায় রীনা। বলে…

কি হলো মারো আমায়। আজ তোমার একদিন কী আমার এক দিন। মারো বলছি,মারো।

সরে যাও রীনা।

না সরলে কী করবে শুনি। বললাম তো আজ তোমার সঙ্গে একটা এসপারওসপার হয়ে যাবে। মাগীর কথা মনে করে আমার সঙ্গে অশান্তি করবে এটা তো হতে পারে না। অন্যের জন্য নিজের সংসারে অশান্তি হতে দেবো না। এটা আমার প্রতিজ্ঞা।

কাকে গালি দিচ্ছো তোমার ধারণা আছে । এসব বন্ধ করো বলছি।

একশ’ বার বলবো। কী করবে বললে?

কী করব দেখতে চাও। আজ আমার চেয়ে খারাপ কিন্তু কেউ হবে না। পথ ছাড়ো।

বললাম তো ছাড়ব না। তোমার দৌড় কতোটুকু আজ তা দেখে ছাড়ব আমি।

এবার আর নিজেকে সামলে রাখতে পারে না আজমল। পাশে থাকা ছেলে অভিষেকের ব্যাট দিয়ে পরপর কয়েকটিি আঘাত করে রীনার পিঠে মাজায় পায়ে। হাত দিয়ে ঠেকাতে যেয়ে ফ্লোরে পড়ে যায় রীনা। আজমল অবাক হয়ে তার দিকে চেয়ে থাকে।

চলবে…( প্রতি সপ্তাহের মঙ্গলবার ও শনিবার প্রকাশিত হবে এ উপন্যাসটি)

উপন্যাস : মুস্তাফিজুর রহমান নাহিদ

প্রচ্ছদ : সাদিক

পাঠকের মতামত:

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

M

M

SMS Alert

এর সর্বশেষ খবর

- এর সব খবর