‘আনু মুহাম্মদের উচিৎ বিএনপির সমর্থন গ্রহণ করা’

দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক : বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, রামপাল ইস্যুতে বিচ্ছিন্নভাবে কিছু করা যাবে না। আনু মুহাম্মদরা (তেল-গ্যাস খনিজ সম্পদ ও বিদ্যুৎ-বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটি) যে আন্দোলন করছেন, তাতে আমরা সমর্থন করি এবং সমর্থন করেছিও। তাদের উচিৎ হবে আমাদের সমর্থনকে গ্রহণ করা। এ বিষয়ে সমগ্র জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করার জন্য এগিয়ে আসা।

রাজধানীর সেগুবাগিচায় ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি মিলনায়তনে বুধবার (২৬ অক্টোবর) সন্ধ্যায় এক সেমিনারে তিনি এ সব কথা বলেন। ‘‘বৃহত্তম ম্যানগ্রোভ ফরেস্ট সুন্দরবন সংলগ্ন নির্মাণাধীন রামপাল তাপ ও কয়লা বিদ্যুৎকেন্দ্রের ভয়াবহ ধংসাত্মক প্রভাব ও বিপর্যয় নিয়ে ‘সুন্দরবন বাঁচাও, রামপাল কয়লা বিদ্যুৎকেন্দ্র ঠেকাও” শীর্ষক সেমিনারের আয়োজন করে জিয়া সাইবার ফোর্স।

রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র প্রকল্পের বিরোধিতা করে এটি বন্ধ করতে আন্দোলন করছে তেল-গ্যাস খনিজ সম্পদ ও বিদ্যুৎ-বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটি। বিএনপিও এই আন্দোলনে সমর্থন দিয়েছে। তবে এই আন্দোলনে বিএনপিকে সঙ্গে না নেওয়ার কথা বলছেন সংগঠনটির নেতারা।

এই আন্দোলনে আগে খুলনা অঞ্চলের মানুষ এবং সারাদেশের মানুষকে সম্পৃক্ত করতে হবে বলেও জানান মির্জা ফখরুল।

তিনি বলেন, ‘সরকার ক্ষমতা দখলে রাখতে রামপালে বিদ্যুৎকেন্দ্র করার জন্য ভারতের কাছে কমিটেট (প্রতিজ্ঞাবদ্ধ)। তারা (আওয়ামী লীগ সরকার) ভারতের কাছে কমিটেট। সে জন্য জনগণের বিরোধিতা স্বত্ত্বেও তাদের মতামতকে উপেক্ষা করে রামপালের মতো গণবিরোধী এই প্রকল্প করা হচ্ছে। তাদের অবস্থান এমন, যে করেই হোক যত বাধাই আসুক এই বিদ্যুৎকেন্দ্র হবেই।’

ভারত সরকার জনগণের বিরোধিতার মুখে তাদের দেশে কয়লাভিত্তিক এই প্রকল্প করতে পারেনি জানিয়ে তিনি বলেন, ভারত সরকার জনগণের সরকার। সেজন্য জনগণের দাবিতে সম্মান করে। কিন্তু দেশে বর্তমান ক্ষমতাসীন যে সরকার আছে তারা জনগণের ভোটে নির্বাচিত নয়। সেজন্য তাদের কোনো জবাবদিহিতা নেই।

তিনি আরও বলেন, ‘শুধু সুন্দরবন রক্ষা নয়, বাংলাদেশ রক্ষার জন্য রামপালে বিদ্যুৎকেন্দ্র করার সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসা প্রয়োজন। পশ্চিমা বিশ্ব থেকে সব দেশই কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র প্রকল্পের ক্ষতিকর দিক বিবেচনায় নিয়ে তা বন্ধ করে দেওয়া হচ্ছে। কারণ এই ধরনের বিদ্যুৎপ্রকল্প পরিবেশের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর।’

রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র নিয়ে সংসদে আলোচনা না হওয়ার সমালোচনা করে তিনি বলেন, ‘সংসদে এই বিষয়টি আসেনি। কারণ সেখানে যে বিরোধী দল আছে তারা গৃহপালিত। তারা সরকারের থাকায় এ নিয়ে আলোচনা করে না।’

সবাইকে সজাগ থাকার আহ্বান জানিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘ঐক্যের কোনো বিকল্প নেই। জাতীয় ঐক্য সৃষ্টি করে আগ্রাসনের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলবে হবে। স্বাধীনতা স্বার্বভৌমত্ব রক্ষা করতে হবে।’

‘আওয়ামী লীগ তাদের কাউন্সিলে জাতির জন্য কিছু দিতে পারেনি’ দাবি করে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আওয়ামী লীগের কাউন্সিলে জনগণের জন্য কোনো দিকনির্দেশনা নেই। কাউন্সিলে গণতন্ত্র এবং অবাধ, সুষ্ঠু ও জনগণের প্রতিনিধিত্বশীল নির্বাচন আয়োজনের কোনো নির্দেশনা দেওয়া হয়নি।’

‘তারা জানে সত্যিকারের কোনো সুষ্ঠু ও অবাধ নির্বাচন হলে তাদের ভরাডুবি হবে। সেজন্য তারা অবাধ নির্বাচনে আসতে চায় না’ যোগ করেন তিনি।

আয়োজক সংগঠনের সভাপতি অ্যাডভোকেট শেখ ওয়াহিদুজ্জামান দিপুর সভাপতিত্বে বক্তব্য দেন- বিএনপি ভাইস চেয়ারম্যান ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন, উপদেষ্টা আবদুস সালাম, হাবিবুর রহমান হাবিব, সাংগঠনিক সম্পাদক এমরান সালেহ প্রিন্স, সহ সাংগঠনিক সম্পাদক শহিদুল ইসলাম বাবুল, ঢাকা জেলা বিএনপির সভাপতি ডা. দেওয়ান সালাউদ্দিন বাবু প্রমুখ।

সেমিনারে আরো অংশ নেন- ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ড. মো. আলমুজাদ্দেদি আলফেসানী, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক জামাল উদ্দিন রুনু, দৈনিক দিনকালের বার্তা সম্পাদক রাশেদুল হক। স্বাগত বক্তব্য দেন- আয়োজক সংগঠনের উপদেষ্টা ওয়াহিদ উন নবী।

(দ্য রিপোর্ট/এমএইচ/এপি/অক্টোবর ২৬, ২০১৬)