thereport24.com
ঢাকা, শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল 24, ৫ বৈশাখ ১৪৩১,  ১০ শাওয়াল 1445

কুড়িগ্রামের ৬ ইউপি নির্বাচন ৩১ অক্টোবর

৬৮ বছর পর ভোট দেবেন ছিটমহলবাসী

২০১৬ অক্টোবর ২৭ ১৭:৪৫:৫১
৬৮ বছর পর ভোট দেবেন ছিটমহলবাসী

কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি : কুড়িগ্রামে জমে উঠেছে বিলুপ্ত ছিটমহল লাগোয়া ৬ ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন। ৬৮ বছরের বন্দীদশা থেকে সদ্য বাংলাদেশি নাগরিকত্ব পাওয়া বিলুপ্ত ছিটমহলের মানুষজন এ নির্বাচনে ভোটার হওয়ায় ভোট উৎসবে যোগ হয়েছে নতুন মাত্রা। প্রার্থী ও তাদের সমর্থকরা দুপুর থেকে রাত পর্যন্ত প্রচার-প্রচারণায় ব্যস্ত সময় পাড় করছেন। বিলুপ্ত ছিটের বাসিন্দাদের জীবনমান উন্নয়নে দিচ্ছেন নানা প্রতিশ্রুতি। দলীয় প্রতীকে নির্বাচন ও বিলুপ্ত ছিটমহল সংযুক্ত হওয়ায় এ নির্বাচন মর্যাদার লড়াইয়ে পরিণত হয়েছে।

আগামী ৩১ অক্টোবর ফুলবাড়ী উপজেলার বিলুপ্ত ছিটমহল দাসিয়ারছড়া লাগোয়া ফুলবাড়ী, কাশিপুর ও ভাঙ্গামোড় ইউনিয়ন এবং ভুরুঙ্গামারী উপজেলার বিলুপ্ত ছিটমহল লাগোয়া পাথরডুবি, শিলকুড়ি ও ভুরুঙ্গামারী সদর ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচন। প্রচার-প্রচারণায় জমে উঠেছে নির্বাচনী মাঠ। দুই উপজেলার ১২টি বিলুপ্ত ছিটের ২ হাজার ৯৯২ জন ভোটার বাংলাদেশি নাগরিক হিসেবে এই প্রথম ভোট দেবেন। প্রার্থী ও সমর্থকরা ভোটারদের কাছে টানতে দিচ্ছেন নানা প্রতিশ্রুতি। ভোটাররাও হিসাব কষছেন আগামী ৫ বছর সুখে-দুঃখে তাদের পাশে থাকবেন এরকম প্রার্থী নির্বাচন করার।

ফুলবাড়ী উপজেলার ৩ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান পদে ১৬, সংরক্ষিত সদস্য পদে ৫১ এবং সাধারণ সদস্য পদে ১০৭ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এ ৩ ইউনিয়নে মোট ভোটার ৭১ হাজার ৭৫২ জন। মোট ভোটকেন্দ্র ৪৬টি। এর মধ্যে বিলুপ্ত ছিটমহল দাসিয়ারছড়ার ভোটার সংখ্যা ২ হাজার ৭০০ জন।

অন্যদিকে ভুরুঙ্গামারী উপজেলার ৩ ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে ১৫, সংরক্ষিত সদস্য পদে ৩৩ এবং সাধারণ সদস্য পদে ৯৪ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এ ৩ ইউনিয়নে মোট ভোটার ৬৩ হাজার ৩৫৯। মোট ভোটকেন্দ্র ৩৮টি। এর মধ্যে সেউতি কুরশা, বড় গাঁওচুলকা, সাহেবগঞ্জসহ ১০টি বিলুপ্ত ছিটমহলের ভোটার সংখ্যা ২৯২ জন।

দাসিয়ারছড়া বিলুপ্ত ছিটের বাসিন্দারা জানান, বাংলাদেশি হওয়া ও বাংলাদেশের নাগরিকত্ব পাওয়ায় তারা খুশি। এরপর প্রত্যক্ষ ভোটের মাধ্যমে পছন্দমতো প্রতিনিধি নির্বাচন করতে পারায় তাদের ঈদের খুশির মতো লাগছে।

বিলুপ্ত ছিট দাসিয়ারছড়ার কামালপুর গ্রামের ১০০ বছরের বৃদ্ধ আব্দুল হাকিম বলেন, আমার বয়স বর্তমানে ১০০ বছর। আর কতদিন বাঁচব জানি না। মৃত্যুর আগে ভোট দিতে পারব এটাই আমার কাছে সবচেয়ে খুশির বিষয়।

বাংলাদেশ-ভারত ছিটমহল বিনিময় সমন্বয় কমিটি বাংলাদেশ অংশের সাবেক সাধারণ সম্পাদক গোলাম মোস্তফা জানান, প্রথম ভোট দিতে পারবে বলে ছিটের বাসিন্দারা অত্যন্ত খুশি। বিন্তু বাংলাদেশের অভ্যন্তরে সবচেয়ে বড় ছিট দাসিয়ারছড়ায় সরকারি হিসাব মতে ৭ হাজার মানুষের বসবাস। আর এর মধ্যে ভোটার হয়েছে ২ হাজার ৭০০। আরও ৪ শতাধিক মানুষ ভোটার হতে পারেনি। এই দীর্ঘ আন্দোলনের পর মুক্তি পাওয়া সব মানুষ একসঙ্গে ভোট দিতে পারলে আরও বেশি ভালো হতো।

নৌকা, ধানের শীষ এবং লাঙল প্রতীকে প্রার্থীরা শতভাগ বিজয়ী হওয়ার আশা করলেও স্বতন্ত্র ও বিদ্রোহী প্রার্থীরাও প্রতিযোগিতায় টিকে থাকার জন্য মাঠ চষে বেড়াচ্ছেন।

জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মো. দেলোয়ার হোসেন জানান, সীমান্তবর্তী ২ উপজেলা ও সদ্য বিলুপ্ত ছিটের মানুষ তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করবে। যেন তারা সুষ্ঠভাবে ভোট দিতে পারে এজন্য আইনশৃঙ্খলাসহ সকল প্রকার প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে।

(দ্য রিপোর্ট/এম/এপি/অক্টোবর ২৭, ২০১৬)

পাঠকের মতামত:

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

M

M

SMS Alert

এর সর্বশেষ খবর

- এর সব খবর