thereport24.com
ঢাকা, শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল 24, ৬ বৈশাখ ১৪৩১,  ১০ শাওয়াল 1445

দন্ত্য চিকিৎসক দিয়েই চলছে বেরোবির চিকিৎসাসেবা

২০১৬ অক্টোবর ২৭ ১৮:৩১:৫১
দন্ত্য চিকিৎসক দিয়েই চলছে বেরোবির চিকিৎসাসেবা

বেরোবি প্রতিনিধি : রংপুরে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে চরম অব্যবস্থাপনার মধ্য দিয়ে চলছে চিকিৎসাসেবা প্রদান। উপযুক্ত চিকিৎসাসেবা না পাওয়ায় বড় ধরনের রোগের সৃষ্টি হচ্ছে। চিকিৎসা সেবার অব্যবস্থাপনা, ডাক্তারদের বাজে ব্যবহার ও অপর্যাপ্ত চিকিৎসাসেবার ফলে বাধ্য হয়েই শিক্ষার্থীরা বাইরে চিকিৎসা নিতে যাচ্ছে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রায় ৮ হাজার শিক্ষার্থীর চিকিৎসা সেবা প্রদানের জন্য মাত্র একজন দন্ত্য চিকিৎসক, একজন অবসরপ্রাপ্ত ডাক্তার ও একজন নার্স রয়েছেন। ২৪ ঘণ্টা চিকিৎসাসেবা প্রদানের কথা থাকলেও তারা ৮ ঘণ্টার উপরে সেবা প্রদান করেন না। আবার নার্স ছাড়া স্যালাইনপুশ করতে পারেন না ঐ দন্ত্য চিকিৎসক।

সকাল ৯টা হতে বিকেল ৫টা পর্যন্ত চিকিৎসা কেন্দ্রে ডাক্তার থাকার কথা থাকলেও দুপুর সাড়ে ১২টা হতে ২টা পর্যন্ত দুপুরের খাবার খাওয়ার অজুহাতে চিকিৎসকরা সেবা দিতে অনিহা প্রকাশ করেন। এমন অব্যবস্থাপনা, ডাক্তারদের বাজে ব্যবহার এবং পর্যাপ্ত ওষুধ না পাওয়ায় বাধ্য হয়ে শিক্ষার্থীরা বাইরের চিকিৎসা কেন্দ্রগুলোতে চিকিৎসা নিতে যায়।

স্বাস্থ্যকেন্দ্রটি প্রশাসনিক ভবনে অবস্থিত হওয়ায় বিভিন্ন আন্দোলনের সময় চিকিৎসাসেবাও বন্ধ থাকে। ফলে ঐ সময় চিকিৎসা নিতে আসা রোগীরা চরম দুর্ভোগ পোহান। এ কারণে অধিকাংশ চিকিৎসা সেবা গ্রহীতারা সেবা কেন্দ্রটি প্রশাসনিক ভবন থেকে আলাদা করার জন্য বিভিন্ন সময় দাবি করলেও প্রশাসন কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করেনি। বিশ্ববিদ্যালয়ের অনেককিছুর উন্নয়ন করা সম্ভব হলেও ৮ বছরেও কর্তৃপক্ষ কোনভাবেই উন্নয়ন করতে পারেনি এই মেডিকেল সেন্টারটি।

এদিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্যান্য দফতর বন্ধের সঙ্গে সঙ্গেই বন্ধ হয়ে যায় সেবাকেন্দ্রটি। আবার সাপ্তাহিক ছুটির দিন শুক্রবারসহ শনিবারেও বন্ধ থাকে চিকিৎসাসেবা।

একটু সমস্যা বেশি দেখলেই রোগীকে পাঠানো হয় রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। তাই শিক্ষার্থীরা শুধুমাত্র জ্বর, সর্দি, কাশি এবং শারীরিক দুর্বলতার সমস্যা নিয়ে চিকিৎসা কেন্দ্রে আসেন।

সরেজমিনে দেখা যায়, চিকিৎসা কেন্দ্রে চারজন চিকিৎসকের পদ থাকলেও দীর্ঘদিন ধরে আছেন মাত্র দুজন। তাদের একজন মেডিকেল অফিসার (দন্ত্য) ডা. এএমএম শাহরিয়ার এবং অপরজন খণ্ডকালীন চুক্তিভিত্তিক মেডিকেল অফিসার ডা. নীলুফার বানু। এছাড়া একজন সেকশন কর্মকর্তা, একজন সেবিকা ছাড়াও আরোও ৯ জন কর্মচারী রয়েছেন। দুই চিকিৎসক প্রতিদিন প্রায় শতাধিক রোগীকে চিকিৎসা সেবা দিচ্ছেন বলে জানান সেকশন কর্মকর্তা এসএইচএম ইকবাল।

শিক্ষার্থীদের অভিযোগ থেকে জানা যায়, প্রায় সাড়ে ৮ হাজার শিক্ষার্থীর জন্য মাত্র একটি অ্যাম্বুলেন্স থাকলেও সময়মতো তা পাওয়া যায় না। তবে ব্যক্তিগত কাজে শিক্ষক-কর্মকর্তাদের অ্যাম্বুলেন্স ব্যবহার করতে দেখা যায় বলেও একাধিক অভিযোগ রয়েছে।

সেবার মান নিয়ে অসন্তুষ্টি জানিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী সোবহান বলেন, ‘আমরা কোন রোগের জন্য গেলেই একটা কমন ওষুধ দেওয়া হয়। আর অধিকাংশ সময় বলা হয় এছাড়া আমাদের কাছে আর কোন ওষুধ নাই।’

এ বিষয়ে বেরোবির চিকিৎসা কেন্দ্রের প্রধান মেডিকেল অফিসার ডা. এ এম এম শাহরিয়ার বলেন, ‘মাত্র দুইজন চিকিৎসক হওয়ায় প্রতিদিন গড়ে আমাকে প্রায় একশ জনের মত রোগী দেখতে হয়। চেষ্টা করি ভালো সেবাটা দেওয়ার। বছরের শেষদিক হওয়ায় অনেক ওষুধ শেষ হয়ে গেছে। তবে ইতোমধ্যে কিছু ওষুধ নিয়ে আসা হয়েছে।’

এ ব্যাপারে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ কে এম নূর-উন-নবী মুঠোফোনে জানান, চিকিৎসক সঙ্কট কেটে যাবে। সিলেকশন বোর্ড হয়ে গেছে। অচিরেই চিকিৎসক নিয়োগ দেওয়া হবে।

(দ্য রিপোর্ট/এমএইচএ/এপি/অক্টোবর ২৭, ২০১৬)

পাঠকের মতামত:

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

M

M

SMS Alert

এর সর্বশেষ খবর

- এর সব খবর