thereport24.com
ঢাকা, বুধবার, ২৪ এপ্রিল 24, ১১ বৈশাখ ১৪৩১,  ১৫ শাওয়াল 1445

এখন আমরা খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ : প্রধানমন্ত্রী

২০১৬ অক্টোবর ২৭ ১৮:৫৩:২২
এখন আমরা খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ : প্রধানমন্ত্রী

দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের চিন্তাভাবনাই ছিল দেশে খাদ্য ঘাটতি রাখা। কারণ খাদ্য ঘাটতি থাকলে বিদেশি সাহায্য পাওয়া যায়। অথচ আজ আমরা খাদ্য গুদামজাত করার জন্য সাইলো উদ্বোধন করছি। এখন আমরা খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ। এই অর্জন আমাদের চিন্তাভাবনার কারণেই সম্ভব হয়েছে। আমরা শুধু খাদ্য উৎপাদনই করবো না খাদ্যকে সংরক্ষণও করবো; যেন আপৎকালে আমরা তার ব্যবহার করতে পারি। যেন অন্যের কাছে হাত পাততে না হয়। খবর বাসস।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বৃহস্পতিবার দুপুরে প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবনে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে মংলায় ৫০ হাজার মেট্রিকটন শস্য ধারণ ক্ষমতাসম্পন্ন খাদ্যগুদাম (সাইলো)-এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির ভাষণে এ কথা বলেন। খাদ্যমন্ত্রী অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলামও অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, দেশের খাদ্য নিরাপত্তা সুসংহত করণ, দীর্ঘমেয়াদি ঝুঁকিপূর্ণ খাদ্য সংরক্ষণ ও আপৎকালীন খাদ্য ঘাটতি মোকাবেলার জন্য খাদ্যশস্য মজুদ সক্ষমতা বাড়াতে সরকার অঙ্গীকারাবদ্ধ। আমাদের চিন্তাভাবনা হচ্ছে, বাংলাদেশের মানুষ অন্যের কাছে হাত পাতবে না। আমরা ভাবি, নিজেরা কীভাবে দেশের মানুষকে খাদ্যের নিরাপত্তা দেবো।

প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, বর্তমান সরকার ২০০৯ সালে দায়িত্ব গ্রহণকালে সরকারি পর্যায়ে দেশে খাদ্যশস্যের মোট ধারণ ক্ষমতা ছিল মাত্র ১৪ লাখ মেট্রিকটন। বর্তমানে এ ধারণ ক্ষমতা দাঁড়িয়েছে ২০ লাখ ৪০ হাজার মেট্রিকটন। ২০২১ সালের মধ্যে খাদ্যশস্য ধারণ ক্ষমতা ৩০ লাখ মেট্রিকটনে উন্নীত করার পরিকল্পনা সরকারের রয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বিএনপির চিন্তাভাবনা ছিল, যদি দেশে ঘাটতি থাকে তাহলে বিদেশি সাহায্য পাওয়া যাবে।’

শেখ হাসিনা বলেন, আমাদের দেশের মানুষ ভিক্ষা করে যাবে, আর আমি ভিক্ষুকের সরদার হয়ে বসে থাকবো, তার জন্য ক্ষমতায় আসিনি। আমরা নিজেরা স্বয়ংসম্পূর্ণ হয়ে চলবো।

তিনি দেশের খাদ্য ও কৃষিখাতের উন্নয়নে সরকারের নানা পদক্ষেপের কথা তুলে ধরেন। তুলে ধরেন কৃষক ও বর্গাচাষিদের দেওয়া নানা সুযোগ ও প্রণোদনার কথা।

প্রধানমন্ত্রী তাদের ১৯৯৬-২০০১ মেয়াদে সরকারের সফলতার কথা তুলে ধরে বলেন, বিএনপির খাদ্য ঘাটতি পুষিয়ে আমরা ’৯৬ সালে ক্ষমতায় আসার পর ৫ বছরে দেশে খাদ্য উদ্বৃত্ত রেখে যাই। খাদ্য ঘাটতি রাখার চিন্তাভাবনা যাদের, সেই বিএনপি-জামায়াত জোট সরকার এই উদ্বৃত্ত অবস্থা থেকে আবারো দেশকে খাদ্য ঘাটতিতে নামিয়ে আনে। আমরা ২০০৮ সালে ফের ক্ষমতায় এসে দেখলাম দেশে আবারও খাদ্য ঘাটতি। সেই অবস্থার বদল করেছি আবার।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমি ক্ষমতায় আসার পর দেখলাম চট্টগ্রামে আমাদের যে খাদ্যগুদামগুলো ছিল সব নষ্ট ও বেদখল হয়ে গেছে। শুধু জাপান সরকার মুক্তিযুদ্ধের পর ৫০টি খাদ্য গুদাম করে দিয়েছিল। সেখানে একটি নিষেধাজ্ঞা দেওয়া ছিল ৫০ বছরে এগুলো ভাঙতে পারবে না। শুধু সেগুলোই বাকি ছিল আর অন্যসব খাদ্যগুদাম বিএনপি-জামায়াত সরকার ভেঙে ফেলেছিল। শুধু ভাঙেনি, ১ টাকায় বিএনপি নেত্রীর এক আত্মীয়ের জুতা কোম্পানিকে লিজ দেয় এবং প্লট করে ইপিজেডের জন্য জায়গাগুলো বরাদ্দ দিয়ে দেয়।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ২০০৯ সালে সরকারে আসার পরে দেখলাম এটাতো আমাদের জন্য একটা সর্বনাশা সিদ্ধান্ত। আমি এসব জায়গা পুনরুদ্ধারে উদ্যোগ গ্রহণ করলাম। ৬ কোটি টাকা খেসারত দিয়ে সেই জায়গা উদ্ধার করলাম।

শেখ হাসিনা বলেন, আমাদের যিনি স্বাধীন বাংলাদেশ উপহার দিয়েছেন, সেই মহান নেতা বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন ছিল বাঙালি জাতি নিজে মাথা উঁচু করে চলবে। তার সেই স্বপ্ন বাস্তবায়নেই আওয়ামী লীগ কাজ করছে। আমরা ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলাম, সেই ডিজিটাল বাংলাদেশ বাস্তবায়নের নজির ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে এই প্রকল্পের উদ্বোধন।

নবনির্মিত সাইলোর ওপর অনুষ্ঠানে একটি ভিডিওচিত্র প্রদর্শিত হয়।

মংলা বন্দর থেকে ১৭ কিলোমিটার ভাটিতে জয়মনিরঘোল নামক স্থানে মোট ৪২ একর জমিতে ৫০ হাজার মেট্রিকটন ধারণ ক্ষমতাসম্পন্ন এই সাইলো নির্মাণ করা হয়েছে। এ পরিকল্পনার অংশ হিসেবে খাদ্য মন্ত্রণালয়ের আওতায় আরও ৭.১৫ লাখ মেট্রিকটন ধারণ ক্ষমতার আধুনিক খাদ্যগুদাম ও সাইলো নির্মাণ কার্যক্রম বর্তমানে চলমান রয়েছে।

বগুড়া জেলার সান্তাহারে ২৫,০০০ মেট্রিকটন ধারণ ক্ষমতাসম্পন্ন মাল্টিস্টোরিড ওয়্যারহাউস (৩৬০ কিলোওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন সোলার প্ল্যান্ট স্থাপনসহ) নির্মাণকাজ ইতিমধ্যে সম্পন্ন হয়েছে। এই দুটি প্রকল্পের আওতায় আধুনিক সুবিধা-সংবলিত কনক্রিট গ্রেইন সাইলো এবং মাল্টিস্টোরিড ওয়্যারহাউস নির্মিত হওয়ায় সরকারি পর্যায়ে খাদ্যশস্যের ধারণ ক্ষমতা ২১.১৫ লাখ মেট্রিকটনে উন্নীত হয়েছে।

প্রকল্পের আওতায় পাঁচ হাজার বর্গমিটার পরিসরের একটি জেটি নির্মিত হয়েছে। জেটির মাধ্যমে সরাসরি জাহাজ থেকে সাইলোতে গম খালাস করার জন্য বেলজিয়ামের ‘ভিগান’ কোম্পানির সরবরাহকৃত দুটি নিউমেটিক আনলোডার স্থাপন করা হয়েছে। আনলোডার দুটি দ্বারা ঘণ্টায় ৪০০ মেট্রিকটন গম খালাস করা যাবে।

(দ্য রিপোর্ট/এমএ/এপি/এম/অক্টোবর ২৭, ২০১৬)

পাঠকের মতামত:

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

M

M

SMS Alert

এর সর্বশেষ খবর

- এর সব খবর