thereport24.com
ঢাকা, শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল 24, ৬ বৈশাখ ১৪৩১,  ১০ শাওয়াল 1445

অপরাধী যে দলেরই হোক ছাড় নয় : স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী

২০১৬ অক্টোবর ২৭ ২১:৩৪:৫৫
অপরাধী যে দলেরই হোক ছাড় নয় : স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী

দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক : স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন বলেছেন, মাদক চোরাচালানের সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে ‘জিরো টলারেন্স’ দেখাতে হবে। নারী ও শিশু নির্যাতন মামলা নিবিড়ভাবে তদারক করতে হবে। জঙ্গিদের বিরুদ্ধে সজাগ ও সতর্ক থাকতে হবে। অপরাধী যে দলেরই হোক না কেন ছাড় দেওয়া হবে না। আমাদেরকে সুশাসন প্রতিষ্ঠা করতে হবে। জনগণের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে।

পুলিশ হেডকোয়ার্টার্সের সম্মেলন কক্ষে বৃহস্পতিবার বিকেলে ত্রৈমাসিক অপরাধ পর্যালোচনা সভার (জুলাই-সেপ্টেম্বর ২০১৬) দ্বিতীয় অধিবেশনে তিনি এ-কথা বলেন। বাংলাদেশ পুলিশের ইন্সপেক্টর জেনারেল এ কে এম শহীদুল হকের সভাপতিত্বে সভায় সকল পুলিশ কমিশনার, রেঞ্জ ডিআইজি, পুলিশ সুপার, ঢাকায় পুলিশের বিভিন্ন ইউনিটের প্রধান এবং পুলিশ হেডকোয়ার্টার্সের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

শুরুতে সাবেক আইজিপি মো. ইসমাইল হুসেনের মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করা হয় এবং দাঁড়িয়ে এক মিনিট নীরবতা পালন করে তাঁর প্রতি শ্রদ্ধা জানানো হয়।

আসাদুজ্জামান খাঁন বলেন, দেশপ্রেম ও দায়িত্ববোধে উজ্জীবিত হয়ে সাম্প্রতিক সময়ে জঙ্গি দমনে পুলিশ যে সাফল্য দেখিয়েছে তা সত্যিই প্রশংসনীয়। আপনাদের এ কৃতিত্বপূর্ণ অবদান শুধু দেশেই নয়, বিশ্ববাসীরও কাছেও প্রশংসিত হয়েছে। অপরাধী যে দলেরই হোক না কেন তাকে আপনারা ছাড় দেবেন না। আমাদেরকে সুশাসন প্রতিষ্ঠা করতে হবে, জনগণের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। পুলিশ বাহিনীতে ব্যাপক ইতিবাচক পরিবর্তন হয়েছে। জনসেবাধর্মী পুলিশি ব্যবস্থা ধরে রাখার জন্য আপনাদেরকে আরও দায়িত্বশীল আচরণ করতে হবে।

আইজিপি এ কে এম শহীদুল হক বলেন, মাদকদ্রব্যের চোরাচালান নিয়ন্ত্রণে পুলিশি তৎপরতা বাড়াতে হবে। মাদক চোরাচালানের সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে ‘জিরো টলারেন্স’ দেখাতে হবে। নারী ও শিশু নির্যাতন মামলা নিবিড়ভাবে তদারক করতে হবে। জঙ্গিদের বিরুদ্ধে সজাগ ও সতর্ক থাকতে হবে।

উপকূলীয় এলাকায় পুলিশ, র‌্যাব এবং কোস্টগার্ডকে একত্রে মাদকদ্রব্য বিশেষ করে ইয়াবা চোরাচালান বন্ধের নির্দেশ এবং শিশু হত্যা, অপহরণ, শিশু ধর্ষণ মামলা নিয়মিত তদারক করার জন্য জেলার পুলিশ সুপারদের নির্দেশ দেন আইজিপি।

তিনি আরও বলেন, কমিউনিটি পুলিশিংয়ের মাধ্যমে সমাজের বিভিন্ন স্তরের মানুষের সঙ্গে সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রেখে অপরাধ নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। জনসম্পৃক্ততা বৃদ্ধির মাধ্যমে কমিউনিটি পুলিশিং কার্যক্রমকে আরও জোরদার করতে হবে। সড়ক দুর্ঘটনা হ্রাসে চালকদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করতে হবে। সড়ক দুর্ঘটনা কমিয়ে আনার লক্ষ্যে হাইওয়ে পুলিশ ও জেলা পুলিশকে সমন্বিতভাবে কাজ করতে হবে।

সভায় পুলিশ হেডকোয়ার্টার্সের অতিরিক্ত ডিআইজি মো. জহিরুল ইসলাম ভূঁইয়া গত কোয়ার্টারের (জুলাই থেকে সেপ্টেম্বর ২০১৬) সার্বিক অপরাধ পরিস্থিতি তুলে ধরেন। সভায় জঙ্গি হামলা, অপহরণ, খুন, ডাকাতি, ছিনতাই, এসিড নিক্ষেপ, ধর্ষণ, নারী ও শিশু পাচার, অস্ত্র, মাদকদ্রব্য ও বিস্ফোরক উদ্ধার, সড়ক দুর্ঘটনা, গাড়ি চুরি, রাজনৈতিক সহিংসতা, অপমৃত্যু মামলাসহ দেশের সার্বিক আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি পর্যালোচনা করা হয়।

পর্যালোচনায় দেখা যায়, আলোচ্য সময়ে সারাদেশে মামলার সংখ্যা ৪৬ হাজার ৩৫০টি। ডাকাতি, দস্যুতা, খুন, দাঙ্গা, ধর্ষণ, অপহরণ মামলা গত কোয়ার্টারের (এপ্রিল থেকে জুন-২০১৬) তুলনায় হ্রাস পেয়েছে। একই সময়ে এসিড নিক্ষেপ, নারী নির্যাতন (ধর্ষণ ও এসিড ব্যতীত), শিশু নির্যাতন, গাড়ি চুরি সংক্রান্ত মামলার সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে। পুলিশ একই সময়ে বিপুল সংখ্যক মাদকদ্রব্য উদ্ধার ও ধ্বংস করেছে। মোটরকার, মাইক্রোবাস, জিপ, মোটরসাইকেল, বেবি ট্যাক্সিসহ বিভিন্ন ধরনের ৫১০টি গাড়ি চুরির মামলা হয়েছে। পুলিশ বিভিন্ন স্থানে সফল অভিযান পরিচালনা করে ২৫৪টি চুরি যাওয়া গাড়ি উদ্ধার করতে সক্ষম হয়েছে।

সভায় এসবির অতিরিক্ত আইজিপি ড. মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারী, সিআইডির অতিরিক্ত আইজিপি শেখ হিমায়েত হোসেন, অতিরিক্ত আইজিপি (প্রশাসন ও অপারেশনস্) মো. মোখলেসুর রহমান, র‌্যাবের মহাপরিচালক বেনজীর আহমেদ, ডিএমপি কমিশনার মো. আছাদুজ্জামান মিয়া, অতিরিক্ত আইজিপি (ফিন্যান্স অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট) ফাতেমা বেগম, রেলওয়ে রেঞ্জের অতিরিক্ত আইজিপি মো. আবুল কাশেম এবং পুলিশ হেডকোয়ার্টার্সের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। সভায় ক্রাইম ডাটা ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম (সিডিএমএস) কার্যক্রম সাফল্যের সঙ্গে পরিচালনার জন্য ডিএমপি, মানিকগঞ্জ, সুনামগঞ্জ, মাদারীপুর ও ফেনী জেলায় কর্মরত পাঁচজন পুলিশ কর্মকর্তাকে পুরস্কৃত করা হয়।

(দ্য রিপোর্ট/এমএসআর/এপি/অক্টোবর ২৭, ২০১৬)

পাঠকের মতামত:

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

M

M

SMS Alert

এর সর্বশেষ খবর

- এর সব খবর