thereport24.com
ঢাকা, শনিবার, ২০ এপ্রিল 24, ৬ বৈশাখ ১৪৩১,  ১১ শাওয়াল 1445

‘বিএসইসি কোন কোম্পানিকে শেয়ারবাজারে আনে না’

২০১৬ নভেম্বর ০২ ২৩:০৫:১১
‘বিএসইসি কোন কোম্পানিকে শেয়ারবাজারে আনে না’

দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক : প্রাথমিক গণপ্রস্তাবের (আইপিও) মাধ্যমে টাকা সংগ্রহের লক্ষ্যে বিভিন্ন কোম্পানির পক্ষে ইস্যু ম্যানেজাররা দরখাস্ত করে। আর সেই দরখাস্ত যাছাই-বাছাই শেষে অনুমোদন দেয় বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। এক্ষেত্রে কোম্পানিকে শেয়ারবাজারে আনে ইস্যু ম্যানেজাররা, বিএসইসি আনে না বলে জানিয়েছেন প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. এম খায়রুল হোসেন। তাই ভালো কোম্পানিকে শেয়ারবাজারে আনতে ইস্যু ম্যানেজারদার ভালো কোম্পানির দরখাস্ত করতে হবে।

বুধবার (০২ নভেম্বর) বাংলাদেশ মার্চেন্ট ব্যাংকার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিএমবিএ) আয়োজিত ‘শেয়ারবাজারের বর্তমান পরিস্থিতি ও ভবিষ্যতের প্রত্যাশা’ শীর্ষক এক সেমিনারে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
অধ্যাপক ড. এম খায়রুল হোসেন জানান, ২০১০ সালে শেয়ারবাজারে ধসের পরে অর্থমন্ত্রী বিএসইসির দায়িত্ব নেওয়ার জন্য বলেন। এ খবরে ভয়ে ও ভীত হয়ে বিষয়টি আরেকবার ভেবে দেখতে বলেছিলাম। তবে দায়িত্ব গ্রহণের ৫ বছরের চেষ্টায় পুঁজিবাজারকে স্থিতিশীল অবস্থায় এনেছি। এক সময়ে প্লেসমেন্ট, বুক বিল্ডিং ইত্যাদি ক্ষেত্রে যে কারসাজি ছিল তা আইন সংশোধন ও নতুন আইন গঠনের মাধ্যমে দূর করেছি। এছাড়া সার্ভিলেন্স সফটওয়্যার প্রতিষ্ঠা, শেয়ারবাজার সংশ্লিষ্ট ট্রাইব্যুনাল গঠন ইত্যাদির মাধ্যমে অনাস্থা দূর করেছি। এখন শুধু অজ্ঞতার কারণে আস্থার অভাব।

বর্তমানে শেয়ারবাজারে ১৬ হাজার কোটি টাকার বৈদেশিক বিনিয়োগ রয়েছে বলে জানিয়েছেন খায়রুল হোসেন। এছাড়া অনেকে বৈদেশিক বিনিয়োগকারী বিনিয়োগ করতে চাইছে। বাংলাদেশের শেয়ারবাজারে বৈদেশিক বিনিয়োগে আগ্রহের কারণ হিসেবে কোম্পানিগুলো থেকে ১৫-২০ শতাংশ ফেরত পাওয়াকে উল্লেখ করেন।

এদিকে দুর্বল কোম্পানিকে শেয়ারবাজারে না আনতে ও আইপিও কারসাজি ঠেকাতে আইন করা হলেও তা সম্পূর্ণরূপে বাস্তবায়ন করা সম্ভব হয়নি বলে জানিয়েছেন খায়রুল হোসেন। এক্ষেত্রে উচ্চ আদালতের রায় নিয়ে অতালিকাভুক্ত কোম্পানি তালিকাভুক্ত কোম্পানির সঙ্গে একীভূতকরণ (মার্জার) হচ্ছে। তবে এ সমস্যারোধে আইন করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন তিনি।
বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের পলিসিগত অদূরদর্শিতার কারণে শেয়ারবাজার ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে বলে জানিয়েছেন খায়রুল হোসেন। এ ক্ষতি লাঘবে বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে বিএসইসির সভা আয়োজনের জন্য অর্থমন্ত্রীর কাছে আহ্বান করেন। এ ছাড়া রেগুলেটরদের সমন্বয়হীনতার কারণে যে ক্ষতি হতো তা অনেকটা কাটিয়ে উঠেছেন বলে জানান।

খায়রুল হোসেন জানান, মিউচ্যুয়াল ফান্ড অবসায়নের ক্ষেত্রে ইউনিট প্রতি ১০ টাকার উপরে পেলে ট্যাক্স দিতে হয়। কিন্তু একজন বিনিয়োগকারী একটি ইউনিট ১০ টাকায় নাও কিনে থাকতে পারে। সে ১০ টাকার উপরে খরচ করেও কিনতে পারে। তাই ১০ টাকার উপরে পেলেই ট্যাক্স ধার্য করা ঠিক না। এই সমস্যাটি সমাধানের জন্য অর্থমন্ত্রীকে অনুরোধ করেন তিনি।

এদিকে একটি কোম্পানি শেয়ারহোল্ডারদের সঙ্গে প্রতারণা করার লক্ষ্যে সকাল ৭টায় বার্ষিক সাধারণ সভা (এজিএম) করার জন্য সময় নির্ধারণ করেছিল বলে জানান খায়রুল হোসেন। তবে কোম্পানি কর্তৃপক্ষের সে আশা ভেঙ্গে দেওয়া হয়েছে।

এর আগে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) ব্যবস্থাপনা পরিচালক সাইফুর রহমান মজুমদার বলেন, ‘দুর্বল ভিত্তিসম্পন্ন কোম্পানি দিয়ে শেয়ারবাজারের কার্যকারিতা (ইফিসিয়েন্সি) বাড়াতে চাইলে সময় লাগবে’। এ সময় তিনি জানান, শেয়ারবাজারের আয়তনের পাশাপাশি দক্ষতা বাড়াতে হবে। আর কোন কোম্পানির বিনিয়োগের সুযোগ না থাকলে বোনাস শেয়ার দেওয়া ঠিক না। কিন্তু অনেক কোম্পানি কারণে-অকারণে বোনাস শেয়ার প্রদান করছে। এটা ঠিক না বলে মন্তব্য করেন তিনি।
সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করে আইডিএলসি ইনভেস্টমেন্টসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. মনিরুজ্জামান। আর সভাপতিত্ব করেন বিএমবিএ প্রেসিডেন্ট মো. ছায়েদুর রহমান।

সেমিনারে বিশেষ অতিথি ছিলেন অর্থ ও পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী এম এ মান্নান, বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. এম খায়রুল হোসেন ও বিএমবিএ’র দ্বিতীয় ভাইস-প্রেসিডেন্ট ড. এম মোশাররফ হোসেন।

(দ্য রিপোর্ট/আরএ/এসএস/এপি/এনআই/নভেম্বর ০২, ২০১৬)

পাঠকের মতামত:

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

M

M

SMS Alert

এর সর্বশেষ খবর

- এর সব খবর