thereport24.com
ঢাকা, শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল 24, ৬ বৈশাখ ১৪৩১,  ১০ শাওয়াল 1445

সংবর্ধনা পেলেন অধ্যাপক সৈয়দ আকরম হোসেন

২০১৬ ডিসেম্বর ০৯ ১৯:০৪:০৪
সংবর্ধনা পেলেন অধ্যাপক সৈয়দ আকরম হোসেন

দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক : একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধে অধ্যাপক সৈয়দ আকরম হোসেন যখন আত্মগোপনে, তখন তার শিক্ষক মুনীর চৌধুরী তার প্রতি গভীর স্নেহ, মমতা ও আবেগেরে বহিঃপ্রকাশ ঘটিয়েছিলেন একটি চিঠির মাধ্যমে। সে চিঠি পড়লে আজো চোখে জল আসে, ভারাক্রান্ত হয় মন ও মনন। এতে সৈয়দ আকরমের ছাত্রজীবনের উজ্জ্বলতার কথা ফুটে ওঠে। সৈয়দ আকরম হোসেন সম্পর্কে এমন মূল্যায়ন করেছেন তার আরেক শিক্ষক ইমিরেটাস অধ্যাপক আনিসুজ্জামান।

শুক্রবার (৯ ডিসেম্বর) বিকেলে বাংলা একাডেমির কবি শামসুর রাহমান সেমিনার কক্ষে ‘সৈয়দ আকরম হোসেন সংবর্ধনা’ অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব্যে এ মূল্যায়ন করেছেন অধ্যাপক আনিসুজ্জামান।

তিনি আরো বলেছেন, ‘সম্পাদনা, সাহিত্য সমালোচনা, গভীর চিন্তার প্রকাশের কারণেই তার (অধ্যাপক সৈয়দ আকরম হোসেন ) সৃষ্টি বহুকাল স্থায়িত্ব লাভ করবে। তার লেখা গদ্য কঠিন। এই কথার ইতিবাচক ও নেতিবাচক অর্থ দাঁড়ায় । যেহেতু তার অনুরাগীরা এটাকে তার নিজস্বতা বলে মেনে নিয়েছে, সুতরাং এটাই তার সফলতা বলে মনে করি।’

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক অধ্যাপক শামসুজ্জামান বলেছেন, ‘আকরম ছাত্র জীবনে আনিসুজ্জামান, আবদুল হাই ও আবু নেহা মোস্তফা কামালের মতো শিক্ষক পেয়েছিলেন। ফলে এমন বিদগ্ধ শিক্ষকদের নিকট থেকে নেওয়ার সুযোগ তার হয়েছিল। তার তীক্ষ্ণ মেধা, যুক্তি, উপস্থাপন ও বলবার ক্ষমতা বিরল। এ কারণেই আমার মনে হয়, আমি যদি তার ছাত্র হতাম তবে তাকে অনুসরণ করতাম।’

সংবাদ প্রতিদিনের সম্পাদক আবেদ খান বলেছেন, ‘আমার বন্ধু আকরম অত্যন্ত নেপথ্যচারী এবং অভিমানী মানুষ। নেপথ্যচারীতাই সমাজের নানা অসঙ্গতির বিরুদ্ধে প্রতিবাদ। তিনি যেখানে যান অসংখ্য অনুরাগীদের নিয়ে যান। এটা বর্তমান সময়ে বিরল। তাকে যখন যে কাজ দেওয়া হয়েছে অত্যন্ত সুচারুভাবে তিনি পালন করেছেন। কাজের সময় তিনি কাউকে চেনেন না। সে কারণেই হয়তো রবীন্দ্রনাথ, সৈয়দ ওয়ালী উল্লাহ, এস ওয়াজেদ আলী, বিভুতিভূষণদের নিয়ে কাজ করতে পেরেছেন।’

সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম বলেছেন, ‘তিনি আমার সরাসরি শিক্ষক নন কিন্তু তাকে আমি শিক্ষক হিসেবে ভাবি। আমি বহুকাল ধরে তাকে অনুসরণ করছি। শিক্ষক ও লেখক হিসেবেই শুধু নন, উলুখাগড়া নামের পত্রিকা সম্পাদনা , রবীন্দ্রনাথ, সৈয়দ ওয়ালী উল্লাহ, এস ওয়াজেদ আলী, বিভুতিভূষণদের মতো লেখকদের সম্পাদনা করে একজন দক্ষ সম্পাদক হিসেবেও আমাদের কাছে আবিষ্কৃত হয়েছেন। তিনি তিনভাবে শিক্ষা দিয়ে গেছেন- ক্লাসে, শিক্ষার্থীদের মাধ্যমে জ্ঞান ছড়িয়ে দিয়ে ও শিক্ষক তৈরি করে। আমি জানি না এ গুণ বর্তমানে কতজনের মধ্যে আছে, ভবিষ্যতে থাকবে কীনা।’

প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব কামাল আবদুল নাসের চৌধুরী (কবি কামাল চৌধুরী) বলেছেন, ‘তার লেখা কম পড়েছি। যতটুকু পড়েছি, তাতে মনে হয়েছে তাকে নিয়ে আজকের দিনে প্রকাশিত গ্রন্থ জ্যোতির্ময়-এর নামটি যথেষ্ট যুক্তিযুক্ত। বিষয়ের সাথে উদ্দেশ্যের যে সাযুজ্যতা এটা একজন লেখকের খুব দরকার হয়, এটা তার আছে। আছে বলেই তিনি আকরম হোসেন।’

সংবর্ধনা গ্রহণ করে তিনি বলেন, ‘আজকের আয়োজনে এতগুলো দীপ্ত মনীষীর মাঝে আমার উপস্থিতিকে আমার ভাগ্য বলে মেনে নিয়েছি। এমনেটি হওয়ার কথা ছিলো না। এরমধ্যে আবার সংবর্ধনা এটা ভাগ্য বই কিছু নয়। আজ এই মুহূর্তে আমার কিছু বলার নাই শুধু বলবো আমি অভিভূত, অনুপ্রাণিত। এই সাথে আরেকটি জিনিস প্রমাণিত হলো গোপনে কাজ করে গেলে মানুষের ভালোবাসা পাওয়া যাবেই। ’

অনুষ্ঠানের শুরুতে সৈয়দ আকরম হোসেনকে ভালোবাসার চাদর পড়িয়ে দেন তার শিক্ষক অধ্যাপক আনিসুজ্জামান। এসময় তার ভক্তানুরাগীরা তাকে ফুলেল শুভেচ্ছায় সিক্ত করে। এরপর প্রকাশনা সংস্থা ধ্রুবপদ ও ঐতিহ্য-এর যৌথ প্রচষ্ঠায় প্রকাশিত ‘সৈয়দ আকরম হোসেন হোসেন সংবর্ধনা গ্রন্থ’-এর মোড়ক উন্মোচন করা হয়।

অনুষ্ঠান উপস্থাপনা করেছেন কবি ও সাংবাদিক শাহনাজ মুন্নী।

৬ শত পৃষ্ঠার এই বইটির মূল্য ১১ শত টাকা, বইটির প্রচ্ছদ করেছেন। বইটি যৌথভাবে সম্পাদনা করেছেন অনু হোসেন ও সরকার আমিন।

প্রসঙ্গত, অধ্যাপক আকরম হোসেনের ৭২তম জন্মদিন ছিলো গত বৃহস্পতিবার। এ উপলক্ষ্যে শুক্রবার বিকেলে এই ‘সংবর্ধনা অনুষ্ঠান’ আয়োজিত হয়।

(দ্য রিপোর্ট/এমএ/ ডিসেম্বর ০৯,২০১৬)

পাঠকের মতামত:

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

M

M

SMS Alert

এর সর্বশেষ খবর

- এর সব খবর