মুক্তিযুদ্ধের বিজয়কে স্বার্থক করে তুলতে হবে
নুরুল ইসলাম নাহিদ : ডিসেম্বর মাস আমাদের জাতির বিজয়ের মাস হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়ে গেছে। ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর পাকিস্তানী শাসকগোষ্ঠী, সামরিক বাহিনী এবং তাদের সহযোগীরা পরাজয় স্বীকার করে আত্মসমর্থন করতে বাধ্য হয়। বিশ্বের বুকে স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশের অভ্যুদ্বয় ঘটে।
বাঙালি জাতির হাজার বছরের ইতিহাসের সবচেয়ে গৌরবোজ্জ্বল অধ্যায় হচ্ছে আমাদের মুক্তিযুদ্ধ-স্বাধীনতা-বাংলাদেশের অভ্যুদয়। এই গৌরবোজ্জ্বল অধ্যায়ের মহানায়ক হচ্ছেন- সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালী জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান।
আমাদের ‘মুক্তিযুদ্ধ-স্বাধীনতা-বাংলাদেশ-বঙ্গবন্ধু’ এই শব্দগুলো অবিচ্ছেদ্য। এগুলোকে সমার্থকও বলা যেতে পারে। একটিকে আরেকটি থেকে বিচ্ছিন্ন করা যায় না।
আমাদের জনগণের দীর্ঘ সংগ্রামের ধারাবাহিকতায় ১৯৭১ সালের ২৬ মার্চ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান আনুষ্ঠানিকভাবে স্বাধীন বাংলাদেশের ঘোষণা প্রদান করেন। আমাদের বীর জনগণ সর্বশক্তি নিয়ে আক্রমণকারী সশস্ত্র পাকিস্তানী সামরিক বাহিনীর বিরুদ্ধে মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েন। ৩০ লক্ষ মানুষ জীবন দিয়েছেন। এক কোটি মানুষ দেশত্যাগে বাধ্য হয়েছেন। কোটি কোটি মানুষ নানাভাবে নির্যাতিত, নিপীড়িত, ক্ষতিগ্রস্থ, লুন্ঠিত, অত্যাচারিত, মা-বোনের ইজ্জত-সম্ভ্রম, সব হারিয়ে লড়াই চালিয়ে ১৬ ডিসেম্বর বিজয় পতাকা উড়িয়ে মাতৃভূমিকে স্বাধীন করেছেন।
পাকিস্তানী শাসক শ্রেণির বিরুদ্ধে শোষণ-বঞ্চনা-বৈষম্যের অবসান, গণতন্ত্র, স্বায়ত্বশাসন, জাতীয় অধিকার, শিক্ষার জন্য সংগ্রামের ধারাবাহিকতায় ১৯৭০ সালের নির্বাচনে বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে আওয়ামী লীগের পক্ষে জনগণের অভূতপূর্ব রায় প্রদান এক নতুন পরিস্থিতির সৃষ্টি করে। জনগণের রায় অনুসারে বঙ্গবন্ধুর হাতে ক্ষমতা দিয়ে আওয়ামী লীগকে সরকার গঠন করতে না দিয়ে পাকিস্তানের সামরিক শাসক জেনারেল ইয়াহিয়া - ভুট্টো মিলে নানা ষড়যন্ত্র শুরু করে। নির্বাচিত ‘জাতীয় পরিষদে’র অধিবেশন ৩ মার্চ আহবান করেও ১ মার্চ তা স্থগিত করে দেয়। তাৎক্ষণিকভাবে বাংলাদেশের মানুষ স্বত:স্ফূর্তভাবে রাজপথে নেমে আসে - স্বাধীনতার শ্লোগান নিয়ে। বঙ্গবন্ধু তাৎক্ষণিকভাবে পূর্বানী হোটেলে আওয়ামী লীগের নির্বাহী কমিটির চলমান সভা শেষে সংবাদ সম্মেলন করে পরবর্তী কর্মসূচি ঘোষণা করেন। ৭ মার্চের ঐতিহাসিক ভাষণে বঙ্গবন্ধু যে সকল দিক নির্দেশনা ও কর্মসূচি ঘোষণা করেছিলেন - সেই অনুসারে ২৫ মার্চ পর্যন্ত দেশব্যাপী চলে চূড়ান্ত প্রস্তুতি।
মাতৃভাষা বাংলাকে অন্যতম রাষ্ট্রভাষা হিসেবে প্রতিষ্ঠার সংগ্রাম ও বিজয়ের মধ্য দিয়ে বাঙালি জাতীয়বাদের চেতনার যে বীজ অঙ্কুরিত হয়েছিল- পরবর্তীকালে তা স্বাধীনতার জন্য প্রস্ফুটিত হয়ে মুক্তিযুদ্ধে রূপ লাভ করেছিল। ষাটের দশকে সামরিক শাসন বিরোধী গণতন্ত্রের আন্দোলন, শিক্ষানীতির জন্য সংগ্রাম, সর্বোপরি বঙ্গবন্ধুর উত্থাপিত ৬ দফা সংগ্রাম এবং ঊনসত্তরে সর্বদলীয় ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের ১১ দফার (যার মধ্যে ৬ দফা দাবি অন্তর্ভূক্ত ছিল এবং এক নম্বর দাবি ছিল শিক্ষার দাবি) ভিত্তিতে ঊনসত্তরের গণ অভ্যুত্থান, তথাকথিত আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা (যার মূল উদ্দেশ্য ছিল বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করা) প্রত্যাহারের ফলে বঙ্গবন্ধু মুক্তি লাভ করেন।
বঙ্গবন্ধু বাঙালি জাতিকে জাগ্রত করেন, সচেতন করেন, ঐক্যবদ্ধ ও সংগঠিত করে নেতৃত্ব দিয়ে স্বাধীনতা অর্জন করতে সক্ষম হন।
একাত্তরের ৭ মার্চ বঙ্গবন্ধু সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে মহাসমাবেশে তৎকালীন জটিল পরিস্থিতি বিশ্লেষণ, নতুন করণীয় নির্ধারণ, স্বাধীনতার প্রস্তুতি ও সংগ্রামের নির্দেশনা দেন। ইতিহাসের এই অতুলনীয় ভাষণে তিনি ঘোষণা দেন : “এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম”। এটাই ছিল প্রকৃত স্বাধীনতার ঘোষণা। ২৬ মার্চ পাকিস্তানী বাহিনী গণহত্যা শুরু করলে বঙ্গবন্ধু আনুষ্ঠানিকভাবে এবং জাতীয় পরিষদের নির্বাচিত অধিকাংশ সদস্যের নেতা (প্রধানমন্ত্রী, যা সামরিক শাসকরা হতে দেয়নি) হিসেবে বৈধভাবে স্বাধীনতার ঘোষণা দেন। জনগণের রায়ের ফলে যা আনুষ্ঠানিকভাবে বৈধতা লাভ করেছিল। ২৬ মার্চ থেকে ১৬ ডিসেম্বর ঐক্যবদ্ধ মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে আমরা স্বাধীনতা অর্জন করে বাংলাদেশকে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে প্রতিষ্ঠা করতে সক্ষম হয়েছিলাম।
২৬ মার্চ বঙ্গবন্ধুকে পাকিস্তানী সামরিক বাহিনী গ্রেফতার করে পশ্চিম পাকিস্তানে নিয়ে বন্দি করে রাখে। তাকে তারা হত্যার চেষ্টা করেও আন্তর্জাতিক চাপের কারণে তা করতে সক্ষম হয়নি। বঙ্গবন্ধু বন্দি থাকায় আমাদের স্বাধীনতা ও বিজয় ছিল অসম্পূর্ণ। শেষ পর্যন্ত পাকিস্তানী শাসকরা তাকে মুক্তি দিতে বাধ্য হয় এবং তিনি ১০ জানুয়ারি দেশে প্রত্যাবর্তন করেন। বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামকে নস্যাৎ করে পরাধীন করে রাখার জন্য পাকিস্তানী শাসকগোষ্ঠী এবং তাদের আন্তর্জাতিক সহযোগী শক্তির সমর্থনে এবং বিশেষ করে বাংলাদেশের একটি বিশেষ মহল সকল ধরণের হত্যা, লুট, নির্যাতন, অগ্নি সংযোগ, মা-বোনের ইজ্জত লুটে নেয়ার সাথে সর্বাধিক সক্রিয় ছিল। এদের মধ্যে প্রধান শক্তি ছিল জামায়াতে ইসলামী ও তার সহযোগী ইসলামী ছাত্র-শিবির (তখন নাম ছিল ইসলামী ছাত্রসংঘ) এবং মুসলিম লীগের অধিকাংশ নেতা-কর্মীসহ সাম্প্রদায়িক, স্বাধীনতা বিরোধী কিছু শক্তি। মুক্তিযুদ্ধের শেষ ভাগে পরাজয় নিশ্চিত জেনে বাংলাদেশকে মেধা শূন্য করার লক্ষ্যে স্বাধীনতা বিরোধী জামায়াতে ইসলামী ও ছাত্র-শিবির পরিকল্পিতভাবে আমাদের বুদ্ধিজীবী শিক্ষক এবং সকল ধরণের মেধাবীদের হত্যা করেছিল। এই সকল অপরাধীদের অনেকের বিচার হয়েছে, মানবতাবিরোধী যুদ্ধাপরাধীদের বিচার চলছে।
মুক্তিযুদ্ধে আমাদের বীর মুক্তিযোদ্ধা এবং জনগণ প্রধান ভূমিকা পালন করেছে। ছাত্র-তরুণ সমাজের উদ্যোগ ছিল আমাদের সকল সংগ্রামের ধারাবাহিক ঐতিহ্য।
বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ বিশ্বব্যাপী বিরাট প্রভাব সৃষ্টি করেছিল। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র প্রত্যক্ষভাবে আমাদের মুক্তিযুদ্ধের বিরুদ্ধে অবস্থান গ্রহণ করে পরাজিত করার জন্য সকল ধরণের প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখেছিল। দুর্ভাগ্যক্রমে গনচীনও পাকিস্তানের পক্ষাবলম্বন করেছিল।
কিন্তু প্রতিবেশী রাষ্ট্র ভারতের সকল ধরণের সমর্থন ও সহযোগিতা ছিল আমাদের জন্য সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ শক্তি। তারা এক কোটি মানুষকে আশ্রয় ও সেবা দিয়েছিল। ভারত সরকার আমাদের মুক্তিযুদ্ধের প্রশিক্ষণ, সমর্থন ও সাহায্য করেছিল। বিশ্ব জনমত গড়ে তোলার জন্য সম্ভব সব কিছুই করেছিল। ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীর নেতৃত্বে ঐক্যবদ্ধভাবে সকল সাধারণ মানুষ, কংগ্রেস পার্টি, সিপিআইসহ প্রায় সকল রাজনৈতিক দল বাংলাদেশের স্বাধীনতার পক্ষে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। ভারতের সেনাবাহিনীর অনেক সদস্য আমাদের মুক্তিযোদ্ধাদের পাশে থেকে লড়াই করে শহীদ হয়েছেন।
আন্তর্জাতিকভাবে আরেকটি বড় উপাদান ছিল তৎকালীন সোভিয়েত ইউনিয়ন। তৎকালীন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ভূমিকার বিরুদ্ধে সোভিয়েত ইউনিয়ন অবস্থান নিয়ে সরাসরি আমাদের স্বাধীনতার পক্ষে স্বাধীনতা সমর্থন ও সাহায্য না করলে আমাদের জন্য পরিস্থিতি আরো অনেক জটিল, দীর্ঘসূত্রী ও বিপদজনক হতে পারতো। ১৯৭১ এর ২৯ মার্চ সোভিয়েত ইউনিয়নের তৎকালীন প্রেসিডেন্ট নিকোলাই পোদগর্ণী পাকিস্তানের প্রেসিডেন্টকে একটি পত্র লিখে গণহত্যা বন্ধ করতে এবং শেখ মুজিবুর রহমানের জীবনের নিরাপত্তা বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন। চিঠিতে তিনি বঙ্গবন্ধুর নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে লিখেছিলেন। জাতিসংঘে পাকিস্তান ও আমেরিকার ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে ভেটো প্রদান, বঙ্গোপসাগরে পাঠানো মার্কিন ৭ম নৌ-বহর ফিরিয়ে নেয়া ইত্যাদি বাংলাদেশের স্বাধীনতা অর্জনের পথ সুগম করেছিল।
আমরা আন্তর্জাতিক জনমত, ভারতের প্রধানমন্ত্রী শ্রীমতি ইন্ধিরাগান্ধী ও ভারতের ভূমিকা এবং সোভিয়েত ইউনিয়নের ভূমিকার জন্য তাদের কাছে কৃতজ্ঞ ও ঋণী। বিপদের সময়ের বন্ধুদের আমরা ভুলে যেতে পারি না।
আমি ব্যক্তিগতভাবে ষাটের দশকের শুরু থেকে ছাত্র আন্দোলনের একজন কর্মী হিসেবে সকল সংগ্রামে সরাসরি সম্পৃক্ত থাকার ফলে একজন সংগঠক ও মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে লড়াই করার সুযোগ পেয়েছিলাম। তৎকালীন অন্যতম বৃহৎ ছাত্র সংগঠন ছাত্র ইউনিয়নের সভাপতি হিসেবে পৃথক গেরিলা বাহিনী গঠন করার জন্য ভারত সরকারের সকল সাহায্য আদায় করা ও কাজে লাগানোর সুযোগ পেয়েছিলাম। আমি শ্রীমতি ইন্দিরা গান্ধী, ডি. পি. ধর, পি.এন. হাকসার প্রমুখ যারা ভারতের পক্ষে মুক্তিযুদ্ধের বিষয়ে দায়িত্বে ছিলেন, আমাকে সন্তানতুল্য স্নেহ ও সাহায্য করেছিলেন।
একাত্তরের ফেব্রুয়ারি মাসের প্রথম সপ্তাহে শ্লোভাকিয়ার রাজধানী ব্রাতিশ্লাভায় (তখন চেক্ ও শ্লোভাকিয়া এক রাষ্ট্র ছিল) আন্তর্জাতিক ছাত্র ইউনিয়নের (International Union of Students (IUS) দশম আন্তর্জাতিক সম্মেলনে যোগদানের আমন্ত্রণ পেয়ে যোগদান করতে গিয়েছিলাম। এর আগে অনুমতি না পাওয়ার কারণে পাকিস্তান থেকে কোনো ছাত্রনেতা আন্তর্জাতিক কোনো ছাত্র সম্মেলনে যোগদান করার সুযোগ পাননি। আন্দোলনের চাপের মুখে পাকিস্তান সরকার শেষ মুহুর্তে আমাকে এক মাসের জন্য পাসপোর্ট দিতে বাধ্য হয় (কেবলমাত্র চেকোশ্লাভিয়া যাওয়ার জন্য)। এই সুযোগ গ্রহণ করে গোপানে আমি যাতায়াতের পথে ৯ দিন মস্কোতে থেকে বিভিন্ন পর্যায়ে আলোচনা করার সুযোগ গ্রহণ করি। এই ঘটনা তখন কেবল বঙ্গবন্ধু এবং সিপিবি’র নেতা কমরেড মোহাম্মদ ফরহাদ জানতেন। সেভাবে তারা ব্যবস্থা করেছিলেন। এই দুই জনের বাইরে আর কেউ জানতেন কি না তা আমি জানি না বা কখনও জানতে চাইনি। আমি তখন বয়স ও অভিজ্ঞতায় অনেক ছোট। কিন্তু সোভিয়েতের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতারা আমার আবেগ ও বাস্তব অবস্থার বর্ণনা, জনগণের মতামত, দৃঢ়তা, বিভিন্ন সংগ্রামে তাদের অবস্থান, অতীতের বিভিন্ন ঘটনাবলী প্রভৃতি ছাত্র তরুণদের মতামত বুঝার ও জানার চেষ্টা করেছিলেন।
এক কথায় প্রত্যক্ষভাবে সংগ্রামের একজন তরুণ কর্মীর কাছ থেকে যথাসম্ভব তারা বুঝার চেষ্টা করেন- সাফল্যের সম্ভাবনার দিকগুলো। আমি মরিয়া হয়ে আমার আবেগ ও বাস্তবতা দিয়ে বুঝানোর চেষ্টা করেছি। পাকিস্তানীদের স্বৈরাচারী শাসন-শোষণ-নিপীড়নে পিষ্ট বাঙালীরা অদম্য সাহস, মনোবলসহ সর্বশক্তি নিয়ে তাদের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ছে, মরনপণ যুদ্ধ করছে। এ সংগ্রাম অবধারিত এবং আমরা জিতবোই। পাকিস্তানীদেরকে যুদ্ধ পরিচালনা করতে হবে এক হাজার মাইল দূর থেকে, মাঝখানে রয়েছে আমাদের বড় বন্ধু ভারত। পাকিস্তানীরা ব্যর্থ হতে বাধ্য। আমেরিকা ও দুনিয়ার স্বাধীনতা বিরোধীদের তোমরা সামলাবে।
ব্রাতিশ্লাভায় আন্তর্জাতিক ছাত্র ইউনিয়নের (IUS) সম্মেলনে আমি খুবই সক্রিয় ভূমিকা পালন করি। ভারত, সোভিয়েতসহ বিভিন্ন দেশের ছাত্রনেতারা আমাকে খুবই সাহায্য সমর্থন দেন। ফলে নির্বাহী কমিটিতে আমি নির্বাচিত হই। আমাদের পক্ষে সমর্থন করে প্রস্তাব গ্রহণ, সোভিয়েত ইউনিয়নের সাথে যোগাযোগ এবং মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন দুনিয়ার সকল দেশের ছাত্র-যুব সংগঠনের কাছে ১ মে, ১৯৭১ আমার চিঠি (সূত্র: ১০ মে, ১৯৭১, লেখা আমার চিঠি ১৫ খন্ডে প্রকাশিত স্বাধীনতা যুদ্ধ ও দলিলপত্র) আমাদের পক্ষে যে ইতিবাচক সমর্থন ও সাহায্য লাভে সহায়ক হয়েছিল তা পরবর্তীকালে সোভিয়েত ইউনিয়নের অনেক নেতাই আমাকে বলেছেন। পরে ঐ সময়ের ছাত্র-যুব নেতা অনেকের সাথে আমার বন্ধুত্ব হয়, তারা আমাকে বলতেন তুমি কি করে গেছো তা তুমি নিজেও বুঝ নাই। এই বিষয়টি আমি পূর্বে কখনও লিখিনি বা বলিনি, যদিও অনেকেই জানেন। সম্মেলনে যোগদানের বিষয়টি পত্রিকায়ও তখন ছাপা হয়েছে। কিন্তু মস্কোতে থাকার বিষয়টি ছিল গোপন।
আজ অনেক ঘাত প্রতিঘাত, উত্থান-পতনের মধ্য দিয়ে - বঙ্গবন্ধুর কন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধের চেতনা, লক্ষ্য ও আদর্শের পথে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন ‘সোনার বাংলা’ প্রতিষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। ২০২১ সালের মধ্যে ‘মধ্যম আয়ের রাষ্ট্র’ এবং ডিজিটাল বাংলাদেশের লক্ষ্য অর্জন করার অগ্রগতি দৃশ্যমান। ২০৪১ সালের মধ্যে আমরা একটি দারিদ্র্যমুক্ত উন্নত রাষ্ট্রের পর্যায়ে উন্নত হতে দৃঢ় প্রতিজ্ঞ। এ জন্য আমাদের নতুন প্রজন্মকে প্রস্তুত করার সুনির্দিষ্ট লক্ষ্য নিয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয় কাজ করে যাচ্ছে। আমাদের মূল লক্ষ্য- আমাদের নতুন প্রজন্মকে আধুনিক উন্নত বাংলাদেশের নির্মাতা হিসেবে গড়ে তোলার লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছি। সেই লক্ষ্যে প্রণীত জাতীয় শিক্ষানীতি-২০১০ বাস্তবায়ন করা হচ্ছে।
শিক্ষা ক্ষেত্রে এখন আমাদের প্রধান চ্যালেঞ্জ হচ্ছে- আমাদের নতুন প্রজন্মের জন্য বর্তমান যুগের সাথে সঙ্গতীপূর্ণ গুণগত মানসম্মত শিক্ষা নিশ্চিত করা। এজন্য সর্বাধিক গুরুত্ব বিষয় হলো - শিক্ষক। সমগ্র জাতিকে তা উপলব্ধি করে শিক্ষকদের সম্মান-মর্যাদা, সহযোগিতা ও সমর্থন দিতে হবে। কিন্তু শিক্ষকদেরও ‘নিবেদিত প্রাণ শিক্ষক’ হিসেবে প্রকৃত শিক্ষাদান, ভাল মানুষ হিসেবে শিক্ষার্থীদের গড়ে তোলার কাজে অবদান রাখতে হবে। শিক্ষার্থীদের সততা, নিষ্ঠা, দায়িত্বশীল, জনগণের প্রতি দায়বদ্ধতা ও শ্রদ্ধাবোধ, নৈতিক মূল্যবোধ, দেশপ্রেমে উজ্জিবীত করে পরিপূর্ণ মানুষ হিসেবে গড়ে তুলতে হবে।
তাই শিক্ষকদের পাঠদান, শিক্ষার্থীর চরিত্র গঠন, পরিপূর্ণ মানুষ হিসেবে গড়ে তোলার কাজ ও দায়িত্বকে আন্তরিকভাবে গ্রহণ করতে হবে। সততার সাথে মহান দায়িত্ব পালন করতে হবে। তা না হলে আমাদের সকল প্রচেষ্টা ব্যর্থ হতে বাধ্য। তাই শিক্ষকদের জীবনাচরণ এবং সার্বিক দায়িত্ব পালনের ক্ষেত্রে মৌলিক পরিবর্তন আনতে হবে। নৈতিক মূল্যবোধ আমাদের সমাজে বিরাট অবক্ষয়ের দীর্ঘদিনের ধারাবাহিকতা থেকে সর্বাগ্রে শিক্ষকদের বেরিয়ে এসে শিক্ষার মূল লক্ষ্য অর্জনে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে হবে।
আমরা আশা করি আমাদের শ্রদ্ধেয় শিক্ষকরা তার দায়িত্ব পালনে আরো অনেক বেশী সচেতন হবেন এবং আমাদের লক্ষ্য অর্জনে তাদের ভূমিকা রাখবেন, আমাদের স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনা, লক্ষ্য ও আদর্শ এবং সকল শহীদের স্বপ্ন বাস্তবায়ন করার ক্ষেত্রে উপযুক্ত ভূমিকা পালন করে জাতির ইতিহাসে নিজের মর্যাদার আসন স্মরণীয় করে রাখবেন।
আমাদের নতুন প্রজন্মকে বর্তমান যুগের সাথে সংগতিপূর্ণ বিশ্বমানের শিক্ষা, জ্ঞান-বিজ্ঞান, প্রযুক্তিতে দক্ষ এবং সততা, নিষ্ঠা, জনগণের প্রতি দায়বদ্ধ ও শ্রদ্ধাশীল, নৈতিক মুল্যবোধসম্পন্ন, দেশপ্রেমে উজ্জীবিত পরিপূর্ণ মানুষ তৈরি করার মহান কর্মযজ্ঞ চালিয়ে যাচ্ছি। এই পথেই আমাদের দেশকে মর্যাদাশীল রাষ্ট্রে পরিণত করতে আমাদের সফল হতে হবে। বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন ও আদর্শ এবং শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সমগ্র জাতি সেই ধারাবাহিকতায় এগিয়ে যেতে সক্ষম হবে। আমাদের মুক্তিযুদ্ধের বিজয় সার্থক হবে।
জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু। ১৬ ডিসেম্বর, ২০১৬
লেখক: নুরুল ইসলাম নাহিদ, শিক্ষামন্ত্রী, গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার ।
পাঠকের মতামত:
- জাতীয় পতাকার নকশাকার শিব নারায়ণ দাস মারা গেছেন
- শিশু হাসপাতালের ভবনে আগুন
- থার্ড টার্মিনালে বাউন্ডারি ভেঙে রাইদা বাস, নিহত ইঞ্জিনিয়ার
- ভারতের লোকসভা নির্বাচনে ভোটগ্রহণ শুরু
- ইসফাহান শহরে ইসরায়েলের হামলা, ড্রোনগুলো আকাশেই ধ্বংস করেছে ইরান
- জাতিসংঘে ফিলিস্তিনের পূর্ণ সদস্যপদ আটকে দিলো যুক্তরাষ্ট্র
- জাতিসংঘে ফিলিস্তিনের পূর্ণ সদস্যপদ আটকে দিলো যুক্তরাষ্ট্র
- ক্ষেপণাস্ত্র হামলার কথা সরাসরি অস্বীকার ইরানের
- মিয়ানমার থেকে পালিয়ে ১৩ বিজিপি সদস্য
- দুদিনের সফরে ঢাকা আসছেন কাতারের আমির
- ঈদের পরে সবজির বাজার চড়া, ব্রয়লার মুরগি ২৩০ টাকা
- ইরানে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল
- সারাদেশে তিন দিনের হিট এলার্ট জারি
- বাংলাদেশে যত অপরাধ হয়, তার সবই করে বিএনপি: প্রধানমন্ত্রী
- এমপি-মন্ত্রীদের আত্মীয়-স্বজনদেরও প্রার্থী হতে নিষেধ আ.লীগের
- বোতলজাত সয়াবিন তেলের দাম বাড়লো ৪ টাকা
- অস্বাভাবিক আর্থিক প্রতিবেদনের ক্রাফটসম্যান ফুটওয়্যারের কিউআইও আবেদন শুরু রোববার
- বাংলাদেশে চীনা ভিসা সেন্টার চালু
- ভারতের লোকসভা নির্বাচনে ভোট কাল
- পরীমনির বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির আবেদন
- ডিএমপির ৬ এডিসি-এসির বদলি
- ব্রিটিশ হাইকমিশনারের সঙ্গে বিএনপির বৈঠক
- ঢাকায় আসছে মার্কিন প্রতিনিধি দল
- ৪০০ টাকা মাসিক বেতনের কর্মচারী ছিলেন জিয়া: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
- প্রভাব খাটিয়ে পরিবেশের ক্ষতির সুযোগ নেই: পরিবেশমন্ত্রী
- "খালেদা জিয়া মানুষকে ডাল-ভাত খাওয়াতেও তো ব্যর্থ হয়েছিল"
- ইরান-ইসরায়েল: সামরিক শক্তিতে এগিয়ে কারা?
- শাহজালাল ইসলামী ব্যাংকের ১৪ শতাংশ লভ্যাংশ ঘোষণা
- এবার ইসরাইলে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালাল হিজবুল্লাহ, আহত ১৩
- এরদোগানকে প্রশংসা করে যা বলছে হামাস
- আবারও এক হচ্ছেন তাহসান- মিথিলা
- ম্যানচেস্টার সিটির হৃদয় ভেঙ্গে সেমিতে রিয়াল
- গুজব উড়িয়ে বাংলাদেশে ফিরছেন হাথুরুসিংহ
- ইউক্রেনে রাশিয়ার ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় নিহত ১৭
- ৭৫ বছরে সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাত, দুবাই বিমানবন্দরে বিশৃঙ্খলা
- রাখাইনে নতুন করে সংঘাত, পালিয়ে আসা বিজিপির সংখ্যা বাড়ছে
- ৮০ কিলোমিটার বেগে ঝড়ের পূর্বাভাস, বন্দরে সতর্কতা
- টাইমের প্রভাবশালী ব্যাক্তির তালিকায় বাংলাদেশী মেরিনা
- শনিবার ঢাকা আসছেন ভারতের পররাষ্ট্রসচিব বিনয় মোহন
- থাইল্যান্ড সফরে যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা
- স্পেশালাইজড প্রোডাক্ট রয়েছে টেকনো ড্রাগসের, বিডিং শুরু রোববার
- মুনাফা বেড়েছে আমরা নেটওয়ার্কসের
- মার্কেন্টাইল ব্যাংকের ১০ শতাংশ লভ্যাংশ ঘোষণা
- গরম বাড়বে, শিগগিরই মিলছে না স্বস্তি
- বাংলাদেশের নতুন স্পিন বোলিং কোচ মুশতাক
- এশিয়া কাপের আয়োজন থেকে বাদ পড়ছে ভারত পাকিস্তান
- ওমরাহ ভিসা–সংক্রান্ত নতুন আইন জারি করেছে সৌদি
- ইসরায়েলের হামলার হুমকি, পারমানবিক কেন্দ্র বন্ধ রেখেছে ইরান
- ইউক্রেন যুদ্ধে ৫০ হাজারের বেশি রুশ সেনা নিহত: বিবিসি
- "মুজিবনগরে বিশ্বমানের পর্যটন কেন্দ্র গড়ে তোলা হবে"
- পালিয়ে বাংলাদেশে বিজিপির আরো ৫০ সদস্য
- জিডিপি কমার পূর্বাভাস আইএমএফের
- ২১ নাবিক জাহাজে দেশে ফিরবেন, বাকি দুজন বিমানে
- "এ সরকারের আমলে জ্যামিতিক হারে বিচার বহির্ভূত হত্যা বেড়েছে"
- বিএনপি মুক্তিযুদ্ধের চেতনা নিয়ে রাজনীতি করে না: কাদের
- বিশ্বকাপ নিয়ে প্রত্যাশা করার দরকার নেই: শান্ত
- ইসরায়েল হামলা চালালে এবার সেকেন্ডের মধ্যে জবাব দেবে ইরান
- ফের পতনের ধারায় পুঁজিবাজার
- শেয়ার বিক্রি করবেন ব্র্যাক ব্যাংকের এমডি
- তাপপ্রবাহের মধ্যে রাজধানীতে হালকা বৃষ্টি
- টেস্ট পরীক্ষার নামে অতিরিক্ত ফি আদায় করা যাবে না: শিক্ষামন্ত্রী
- উপজেলা নির্বাচন বর্জনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিএনপি
- শিগগিরই অনলাইন নিউজপোর্টালের বিজ্ঞাপন নীতিমালা: তথ্য প্রতিমন্ত্রী
- থাইল্যান্ড, সৌদি ও গাম্বিয়া সফরে যাবেন প্রধানমন্ত্রী
- সয়াবিন তেলের দাম কমানোর সুযোগ নেই: বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী
- গণতন্ত্রে যুক্তরাষ্ট্র কত ধাপ পিছিয়েছে, পিটার হাসকে প্রশ্ন কাদেরের
- লিটারে ১০ টাকা বাড়লো সয়াবিন তেলের দাম
- ইসরায়েলকে সহযোগিতার কথা অস্বীকার সৌদির
- নিজের ইচ্ছাতেই বিশ্রাম চেয়েছেন ম্যাক্সওয়েল
- ভারতের গ্র্যান্ডমাস্টারকে হারালো বাংলাদেশের মনন
- সিঙ্গাপুরের নতুন প্রধানমন্ত্রী লরেন্স অং
- পণ্যের দাম ঠিক রাখতে বিকল্প ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে: বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী
- এইচএসসির ফরম পূরণ শুরু
- নির্দেশনা উপেক্ষা করে উদীচীর অনুষ্ঠান দুঃখজনক: ডিএমপি
- চলমান তাপপ্রবাহ ৪২ ডিগ্রি সেলসিয়াস ছাড়িয়ে যেতে পারে
- মিয়ানমার থেকে পালিয়ে এলো ২৯ বিজিপি সদস্য
- দুইদিন বন্ধের পর আজ চালু হয়েছে মেট্রোরেল
- গণতন্ত্রে যুক্তরাষ্ট্র কত ধাপ পিছিয়েছে, পিটার হাসকে প্রশ্ন কাদেরের
- ইরানি হামলা ঠেকাতে ইসরায়েলের খরচ ১.৩৫ বিলিয়ন ডলার
- কান চলচ্চিত্র উৎসবে মনোনয়ন পেলো যেসব সিনেমা
- যুদ্ধ পূর্ণ গতিতে চলবে: মোসাদ
- বর্ষবরণের আয়োজনে হামলার শঙ্কা নেই: ডিএমপি কমিশনার
- অস্বাভাবিক আর্থিক প্রতিবেদনের ক্রাফটসম্যান ফুটওয়্যারের কিউআইও আবেদন শুরু রোববার
- জর্ডানকে কঠিন হুশিয়ারি দিলো ইরান
- ইসরাইলের হামলা নিয়ে যা বলছে জাতিসংঘের মহাসচিব
- নববর্ষে আওয়ামী লীগের মঙ্গল শোভাযাত্রা
- বিএনপির কারাবন্দি নেতাকর্মীর তালিকা চাইলেন ওবায়দুল কাদের
- আইপিএলে ম্যাক্সওয়েলের লজ্জার রেকর্ড
- দেশের পথে এমভি আবদুল্লাহ, গার্ড দিচ্ছেন চার দেশের নৌসেনারা
- নববর্ষ অপশক্তির বিরুদ্ধে লড়াইয়ে প্রেরণা জোগাবে: প্রধানমন্ত্রী
- শিগগিরই অনলাইন নিউজপোর্টালের বিজ্ঞাপন নীতিমালা: তথ্য প্রতিমন্ত্রী
- মুক্তিযুদ্ধে বিএনপির কোন ভূমিকা ছিলো না: ওবায়দুল কাদের
- গরমের মধ্যে আবহাওয়া অফিসের দুঃসংবাদ
- মুন্সীগঞ্জে দুই গ্রুপের সংঘর্ষে নিহত ১
- বিএনপি মুক্তিযুদ্ধের চেতনা নিয়ে রাজনীতি করে না: কাদের
- ওয়াচ টাওয়ার ও ড্রোন দিয়ে নিরাপত্তা ব্যবস্থা পর্যবেক্ষণ করা হবে
- বিএনপি এদেশের বাঙালি সংস্কৃতিকে সহ্য করতে পারে না: কাদের
- বাইডেন দেশকে বিশ্বযুদ্ধের দিকে নিয়ে যেতে পারেন: ট্রাম্প
- ফরিদপুরে বাস-পিকআপ সংঘর্ষে নিহতের সংখ্যা বেড়ে ১৩
- মুক্ত হলেন এমভি আব্দুল্লাহর ২৩ নাবিক