thereport24.com
ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল 24, ১২ বৈশাখ ১৪৩১,  ১৬ শাওয়াল 1445

হবিগঞ্জ শহরের মাঝখানে ময়লার ভাগাড়

২০১৬ ডিসেম্বর ২৪ ১৮:২৫:৫৮
হবিগঞ্জ শহরের মাঝখানে ময়লার ভাগাড়

হবিগঞ্জ প্রতিনিধ : শহরের পশ্চিমে জেলা আধুনিক স্টেডিয়াম, পাশেই কিবরিয়া মিলনায়তন ও আনসার কার্যালয়, পূর্বে বৃন্দাবন সরকারি কলেজ, হোস্টেল ও একটি নার্সারি স্কুল, রয়েছে আইনজবীবীদের জন্য নির্মাণাধীন বহুতল একটি ভবনও। শহরের দক্ষিণে পৌর বাসস্ট্যান্ড। এতোসব গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠানের মাঝখানে বাইপাস সড়কের দু’পাশে ফেলা হচ্ছে হবিগঞ্জ পৌরসভার সকল ময়লা আবর্জনা। এতে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন ভুক্তভোগীরা।

হবিগঞ্জ শহরে নির্মিত আধুনিক স্টেডিয়ামটি ঘিরে তৈরি হয়েছিল জেলার ক্রীড়াঙ্গণের এগিয়ে যাওয়ার স্বপ্ন। বিভিন্ন আন্তঃজেলা টুর্নামেন্টসহ এখানে হয়েছে জাতীয় অনূর্ধ্ব-১৪ ক্রিকেট চ্যাম্পিয়নশিপও। কিন্তু দৃষ্টিনন্দন এ স্টেডিয়ামের দুইপাশে আর্বজনার স্তুপ ও দুর্গন্ধের কারণে এখানকার ক্রীড়ামোদীরা ক্ষুব্ধ ও হতাশ। এ নিয়ে তেমন কোনো উদ্যোগ নেই স্টেডিয়ামটির পরিচালনার দায়িত্বে থাকা জেলা ক্রীড়া সংস্থারও।

এদিকে, দিনদিন ময়লা-আবর্জনা বাড়তে থাকায় এ বাইপাস সড়ক দিয়ে প্রতিদিন যাতায়াতকারী স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থী ও জনসাধারণের দুর্ভোগ চরমে উঠেছে। সব মিলিয়ে স্টেডিয়াম এলাকায় বিরাজ করছে চরম অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ১৯৭৮ সালে তৎকালীন রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান হবিগঞ্জে এসে মানসম্পন্ন একটি স্টেডিয়ামের জন্য ২০ লাখ টাকা দেওয়ার ঘোষণা দেন। এজন্য ঘোড়দৌঁড়ের মাঠ হিসেবে পরিচিত নিউফিল্ডে স্টেডিয়াম নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয়। কিন্তু সীমানা নিয়ে বিরোধে সে উদ্যোগ থমকে যায়। পরে ১৯৯৫ সালে ৩৩ লাখ টাকা খরচে সুলতান মাহমুদপুর গ্রামে সাড়ে ১১ একর জমিতে শুরু হয় আধুনিক স্টেডিয়ামের নির্মাণকাজ। সেখানে জমি নিয়ে জটিলতা দেখা দেয়। পরে ১৯৯৭ সালে জটিলতার সমাধান হলে ১৭ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মাণকাজ শুরু হয়। ২০১৪ সালে নির্মাণকাজ শেষ হলে ওই বছরের ২৯ নভেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা স্টেডিয়ামের উদ্বোধন করেন।

এদিকে, প্রায় দেড় লাখ মানুষ অধ্যুষিত ও ৯ বর্গ কিলোমিটারের এ শহরে গৃহস্থালি, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, অফিস-আদালত, হাসপাতাল-ক্লিনিক, শিল্প-করখানা, হোটেল-রেস্টুরেন্ট ইত্যাদিতে প্রতিদিন ব্যাপক পরিমান বর্জ্য উৎপন্ন হয়। এসব ময়লা শহরের বিভিন্ন ডাস্টবিন থেকে এনে পৌরসভার ট্রাক ও ভ্যানে করে স্টেডিয়াম ঘেঁষা রাস্তার দুইপাশে ফেলা হচ্ছে। কিন্তু এতে শহরবাসীর সমস্যা ও পরিবেশ দূষণ হলেও কোনো নজরদারি ও উদ্যোগ নেই হবিগঞ্জ পৌর কর্তৃপক্ষের।

বাইপাস সড়ক দিয়ে যাতায়াতকারী ভুক্তভোগীরা জানান, স্টেডিয়াম সংলগ্ন এ সড়কের পাশে কিবরিয়া মিলনায়তন, আনসার কার্যালয়, কলেজ হোস্টেল এবং বৃন্দাবন সরকারি কলেজ ও সরকারি উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ের অসংখ্য শিক্ষার্থীরা যাতায়াত করেন। আবার এ পাশেই নির্মিত হচ্ছে আইনজীবীদের ভবন। কিন্তু এখানেই ফেলা হচ্ছে ময়লা আবর্জনা।

বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) হবিগঞ্জ শাখার সভাপতি অধ্যাপক ইকরামুল ওয়াদুদ দ্য রিপোর্ট টুয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, ‘পৌর কর্তৃপক্ষকে এখানে ময়লা না ফেলতে বারবার অনুরোধ করেও কোনো লাভ হচ্ছে না। এমনকি এ নিয়ে আমরা অনেক আন্দোলনও করেছি।’

এ বিষয়ে হবিগঞ্জের জেলা প্রশাসক সাবিনা আলম দ্য রিপোর্ট টুয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, ‘পৌরসভার লোকজন যে জায়গায় ময়লা ফেলে সেটি ময়লা-আর্বজনা ফেলার জায়গা নয়। কিন্তু তারা শহরের গুরুত্বপূর্ণ একটি স্থানে ময়লা ফেলছে। বিষয়টি নিয়ে পৌর কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করা হবে।’

পৌরসভার ভারপ্রাপ্ত মেয়র দীলিপ দাস এ প্রসঙ্গে দ্য রিপোর্ট টুয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, ‘প্রতিদিন শহরের বর্জ্য অপসারণ করতে হয়। কিন্তু ডাম্পিং স্পট না থাকায় এ সমস্যা তৈরি হয়েছে। পৌরসভার ময়লা ফেলার নিজস্ব জায়গা বানিয়াচংয়ের আতুকুড়া এলাকায়। সেখানে ময়লা ফেলার ক্ষেত্রে স্থানীয় লোকজনের বাধার মুখে পড়ার কারণে স্টেডিয়াম এলাকায় আবর্জনা জমা হচ্ছে। তরে দূর্গন্ধ কমাতে প্রতিদিনের ময়লা পুড়িয়ে ফেলা হচ্ছে।’

(দ্য রিপোর্ট/এস/এপি/ডিসেম্বর ২৪, ২০১৬)

পাঠকের মতামত:

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

M

M

SMS Alert

এর সর্বশেষ খবর

- এর সব খবর