thereport24.com
ঢাকা, শনিবার, ২০ এপ্রিল 24, ৭ বৈশাখ ১৪৩১,  ১১ শাওয়াল 1445

জাতীয় প্রেস ক্লাব নির্বাচন

ফোরামের বিভাজনে ব্যক্তি ইমেজ গুরুত্ব পাচ্ছে

২০১৬ ডিসেম্বর ৩০ ০০:০৩:৪৩
ফোরামের বিভাজনে ব্যক্তি ইমেজ গুরুত্ব পাচ্ছে

দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক : একদিন পরই (শনিবার, ৩১ ডিসেম্বর) জাতীয় প্রেস ক্লাবের দ্বিবার্ষিক (২০১৭-১৮) নির্বাচন। শুক্রবার সাধারণ সভা। ইতোমধ্যে এই নির্বাচনকে ঘিরে প্রচারণা জমে উঠেছে।জাতীয় নির্বাচনের মতোই আলোচনার কেন্দ্রে পরিণত হয়েছে জাতীয় প্রেস ক্লাবের নির্বাচন। প্রেস ক্লাবের ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকসহ ১৭টি পদে ৫১ জন প্রার্থী নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।

সাংবাদিকদের সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ এই সংগঠনের নির্বাচনে বিএনপি-জামায়াতপন্থি সাংবাদিকদের একাধিক প্যানেল প্রতিদ্বন্দ্বিতায় রয়েছে। অন্যদিকে আওয়ামী লীগ ও বামপন্থি সাংবাদিকদের একক প্যানেল দিয়েছে। তবে তাদের মধ্যেও অভ্যন্তরীণ কোন্দল ডালপালা মেলেছে বলে জানা গেছে।

প্রেস ক্লাবের সাধারণ সদস্যদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, দল বা আদর্শ বিবেচনায় প্যানেলভুক্ত হয়ে বিভিন্ন পদে প্রার্থীরা নির্বাচন করলেও প্রার্থীর জয়-পরাজয় অনেকটা ব্যক্তি ইমেজের ওপর নির্ভর করছে।

জাতীয় প্রেস ক্লাবের নির্বাচনে সরকারপন্থি সাংবাদিকদের শফিক-ফরিদা প্যানেলে প্রার্থীরা হলেন-সভাপতি মুহম্মদ শফিকুর রহমান, সিনিয়র সহ-সভাপতি সাইফুল আলম, সহ-সভাপতি আজিজুল ইসলাম ভূঁইয়া, সাধারণ সম্পাদক ফরিদা ইয়াসমিন, যুগ্ম-সম্পাদক মো. আশরাফ আলী ও শাহেদ চৌধুরী এবং কোষাধ্যক্ষ পদে কার্তিক চ্যাটার্জি।

এ ছাড়া কার্যনির্বাহী ১০টি পদে প্রার্থীরা হলেন- এনায়েত হোসেন খান, কাজী রফিক, কুদ্দুস আফ্রাদ, কল্যাণ সাহা, মোল্লা জালাল, রেজোয়ানুল হক রাজা, শামসুদ্দিন আহমেদ চারু, শ্যামল দত্ত, শাহনাজ বেগম ও হাসান আরেফিন।

বিএনপি-জামায়াতপন্থি আজিজ-গণি পরিষদে প্রার্থীরা হলেন-সভাপতি পদে এম এ আজিজ, সিনিয়র সহ-সভাপতি নূরুল আমিন রোকন, সহ-সভাপতি সদরুল হাসান, সাধারণ সম্পাদক কাদের গণি চৌধুরী, যুগ্ম-সম্পাদক নাজমুল আহসান ও ইলিয়াস খান এবং কোষাধ্যক্ষ কাজী রওনাক হোসেন।

১০ জন কার্যনির্বাহী পদে প্রতিদ্বন্দ্বীরা হলেন- বদিউল আলম, বখতিয়ার রানা, হাসান হাফিজ, মাহমুদা চৌধুরী, নূরুল হাসান খান, নির্মল চক্রবর্তী, শামসুল হক দুররানী, মো. সানাউল হক, মাহমুদ হাসান ও মোহাম্মদ মোমিন হোসেন।

এ ছাড়া সাংবাদিক নেতা আমানুল্লাহ কবির ও খোন্দকার মনিরুল আলমের নেতৃত্বে বিএনপিপন্থি আরও ১টি প্যানেল প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছে।

খোন্দকার মনিরুল আলম নিজ প্যানেলে সভাপতি হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। তার প্যানেলে সাধারণ সম্পাদক নেই। বাকি পদে প্রার্থীরা হলেন- সিনিয়র সহ-সভাপতি মুহম্মদ রুহুল কুদ্দুস, সহ-সভাপতি আমিরুল ইসলাম কাগজী, ২ জন যুগ্ম-সম্পাদক পদে জহিরুল হক রানা (১টি পদে নেই) ও কোষাধ্যক্ষ পদে সরদার ফরিদ আহমেদ।

এ ছাড়া ১০ জন কার্যনির্বাহী সদস্য পদে এ প্যানেলের ৬ জন প্রার্থী হয়েছেন। তারা হলেন- আমানুল্লাহ কবির, খায়রুল আলম বকুল, গালীব হাসান, নূরুল ইসলাম খোকন, এইচএম জালাল আহমেদ ও আবুল কালাম আজাদ।

বর্তমান সাধারণ সম্পাদক কামরুল ইসলাম চৌধুরী আমানুল্লাহ কবিরের নেতৃত্বাধীন ফোরাম থেকে সাধারণ সম্পাদক মনোনীত হয়েছিলেন। বর্তমানে তিনি সেই ফোরাম থেকে বেরিয়ে আলাদা একটি সভাপতিবিহীন আংশিক প্যানেল ঘোষণা করেছেন। নিজ প্যানেলে তিনি সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী। তার নেতৃত্বাধীন প্যানেলে অন্য প্রার্থীরা হলেন-সহসভাপতি মো. মোকাররম হোসেন, যুগ্ম-সম্পাদক (২টির একটি) আবদুল গাফফার মাহমুদ, কার্যনির্বাহী সদস্য পদে গোলাম মহিউদ্দিন খান, আবদুল বাসেত মিয়া ও আবদুস সালাম হাওলাদার বাচ্চু।

সাংবাদিকদের গুরুত্বপূর্ণ সংগঠন জাতীয় প্রেস ক্লাবের নির্বাচন নিয়ে সাংবাদিকদের মধ্যে যেমন আগ্রহ রয়েছে তেমনি রাজনৈতিক ও পেশাজীবী মহলেও এর গুরুত্ব রয়েছে। সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকসহ বিভিন্ন প্যানেলভুক্ত প্রার্থীরা বিজয়ী হতে ভোটারদের দ্বারে দ্বারে যাচ্ছেন। সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত জাতীয় প্রেস ক্লাব ও ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) বাগান ও ক্যান্টিনে ভোট প্রার্থনা করছেন তারা। এ ছাড়া বিকেল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত প্রার্থীরা ছুটছেন বিভিন্ন মিডিয়া হাউসে। তবে প্রচারণার কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছে জাতীয় প্রেস ক্লাব ও সেগুনবাগিচায় অবস্থিত ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি (ডিআরইউ) চত্বর। দুপুরে ক্যান্টিনে খাবার টেবিলে ও বাগানে চায়ের কাপে চুমুকে চুমুকে প্রার্থীদের নিয়ে ভোটারদের নানা আলোচনা-সমালোচনা চলছে। বিভিন্ন পদে প্রার্থীদের যোগ্যতার নানা দিক নিয়ে আলোচনা-সমালোচনার ঝড় বইছে প্রেস ক্লাব ও ডিআরইউ প্রাঙ্গণে। নির্বাচনমুখর এই আলোচনার মধ্যেই প্রার্থীরা ভোটারদের সঙ্গে কুশল বিনিময় করছেন। ভোট চাইছেন, দোয়া চাইছেন। সব মিলিয়ে জমে উঠেছে জাতীয় প্রেস ক্লাব নির্বাচন।

এদিকে সাধারণ ভোটাররা প্রার্থীদের বার বার এসএমএস ও ফোন বিড়ম্বনার কথাও জানান। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন ভোটার দ্য রিপোর্টকে বলেন, ‘একজন প্রার্থী দিনে একাধিকবার এসএমএস পাঠাচ্ছেন। ফোনও দিচ্ছেন কেউ কেউ। তবে ওই প্রার্থীর সামনে যাওয়ার পর তিনি আর আমাকে চিনলেন না। ফোনে যেভাবে আন্তরিকতা দেখালেন সামনাসামনি গিয়ে এর তেমন সাদৃশ্য পেলাম না।বেশ হোঁচট খেয়েছি। ভেবেছিলাম ওই প্রার্থীকে ভোট দেবো। কিন্তু সামনাসামনি তার আচরণে হতাশ হয়েছি।’ ওই সদস্য আরো বলেন ‘এমনও প্রার্থী রয়েছেন যারা সালাম দিলেও উত্তর নেন না।’

সাংবাদিকদের সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ জাতীয় প্রেস ক্লাবের আসন্ন নির্বাচনে বিএনপি-জামায়াতপন্থি সাংবাদিকদের একাধিক প্যানেল থাকায় বিভক্তি প্রকাশ্যে রয়েছে। সভাপতি, সাধারণ সম্পাদকসহ গুরুত্বপূর্ণ পদে একাধিক প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বী রয়েছেন। বিএনপির মূল অংশ বলে পরিচিত আজিজ-গণি পরিষদের বিপরীতে খোন্দকার মনিরুল আলম (একাংশ) ও কামরুল ইসলাম চৌধুরীর (একাংশ) প্যানেল প্রতিদ্বন্দ্বিতা করায় বিএনপি-জামায়াতপন্থি সাংবাদিকদের ভোট ভাগাভাগি হচ্ছে।

অন্যদিকে বর্তমান সভাপতি মুহম্মদ শফিকুর রহমান ও সাবেক যুগ্ম-সম্পাদক ফরিদা ইয়াসমিনের নেতৃত্বাধীন ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগপন্থি সাংবাদিকদের একক প্যানেল থাকলেও অভ্যন্তরীণ কোন্দল ডালপালা মেলেছে। সাদাচোখে একই প্যানেলভুক্ত হলেও আওয়ামী লীগপন্থি সাংবাদিকদের প্যানেলের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদককে একসঙ্গে ভোট চাইতে খুব বেশি দেখা যায়নি।তবে ২৮ ডিসেম্বর ফোরামের মিটিং থেকে ঐক্যবদ্ধ থাকার অঙ্গীকার করা হয়েছে।

এদিকে শফিকুর রহমান ও ফরিদা ইয়াসমিন প্যানেলে রাজশাহী ও রংপুর বিভাগের কাউকে প্রার্থী না করায় ওই অঞ্চলের সাংবাদিকদের মধ্যে ক্ষোভ বিরাজ করছে। জানা যায়, গত রবিবার (২৫ ডিসেম্বর) এই দুই বিভাগের জাতীয় প্রেস ক্লাবের সদস্যদের নিয়ে একটি মিটিং হয়। উত্তরাঞ্চলের প্রায় শতাধিক সাংবাদিক প্রেস ক্লাবের সদস্য থাকলেও আওয়ামী লীগ প্যানেল থেকে কাউকে প্রার্থী মনোনয়ন না দেওয়ায় ওই মিটিংয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করা হয়। নির্বাচনে এটিও প্রভাব ফেলতে পারে বলে মনে করছেন কেউ কেউ।

বর্তমানে জাতীয় প্রেস ক্লাবে মোট ভোটার এক হাজার ২১৮ জন। এর মধ্যে শফিকুর রহমান ও কামরুল ইসলাম চৌধুরীর নেতৃত্বাধীন বর্তমান কমিটির সময় সদস্য হয়েছেন ৬৪৬ জন। অভিজ্ঞ ও সিনিয়র সাংবাদিক হিসেবে শফিকুর রহমানকে ভোটাররা বেছে নিবেন বলে তার সমর্থকরা মনে করছেন। সেক্ষেত্রে আওয়ামী লীগ ফোরামের পুরনো ভোটারদের পাশাপাশি নতুন ভোটারদের বড় অংশই তাকে সমর্থন জানাবে বলে মনে করছেন তারা। তবে তার সময়ে বিপুল সংখ্যক সাংবাদিককে সদস্য পদ দেওয়াতে এক পক্ষ যেমন খুশি, তেমনি পুরনো সদস্যদের মধ্যে এক ধরনের অসন্তোষও রয়েছে। অন্যদিকে অভ্যন্তরীণ কোন্দলের কারণে আওয়ামী লীগ ফোরামের অনেক ভোটারই তাকে ভোট নাও দিতে পারেন, সাধারণ ভোটারদের সঙ্গে কথা বলে এ ধরনের মনোভাবের ইঙ্গিত পাওয়া গেছে।

শফিকুর রহমান পরিষদে সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী ফরিদা ইয়াসমিনের সাংবাদিকতা ক্যারিয়ার দীর্ঘদিনের। ইতোপূর্বে তিনি জাতীয় প্রেস ক্লাবের যুগ্ম-সম্পাদক ও কার্যনির্বাহী সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। এ ছাড়া তিনি জাতীয় দৈনিক বাংলাদেশ প্রতিদিনের সম্পাদক নঈম নিজামের স্ত্রী। জাতীয় প্রেস ক্লাবের ইতিহাসে ফরিদা ইয়াসমিনই প্রথম নারী সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী। সে ক্ষেত্রে নারী সদস্যদের একচেটিয়া সমর্থনের পাশাপাশি বসুন্ধরা গ্রুপের কয়েকটি মিডিয়া হাউসে কর্মরত প্রেস ক্লাব সদস্যদের ভোট এবং সমর্থন পাচ্ছেন তিনি। গুঞ্জন রয়েছে, অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্বের কারণে আওয়ামী লীগ ফোরামের সদস্যদের উল্লেখযোগ্য সংখ্যক সদস্যের ভোট থেকেও তিনি বঞ্চিত হতে পারেন।

বিএনপি-জামায়াতপন্থি সাংবাদিকদের মূল প্যানেল এমএ আজিজ ও কাদের গণি চৌধুরী পরিষদে সভাপতি প্রার্থী এমএ আজিজ ও সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী কাদের গণি চৌধুরী। তারা দুইজনই এই ফোরামের অধিকাংশ ভোটার টানতে পারবেন বলে মনে করছেন তাদের সমর্থকরা। এমএ আজিজ দীর্ঘদিন ধরে সাংবাদিক ইউনিয়নে মহাসচিবসহ বিভিন্ন পদে নেতৃত্ব দিয়ে আসছেন। সভাপতি পদে অন্য দুইজন প্রার্থীর চেয়ে এমএ আজিজ প্রেস ক্লাবের রাজনীতিতে নতুন মুখ। বিএনপি-জামায়াত ফোরামের মূল অংশের অধিকাংশ ভোটই তিনি পাবেন। তবে নতুন ভোটারদের সমর্থন কতটুকু পাচ্ছেন এর ওপরই তার জয়-পরাজয় নির্ভর করছে। এ ছাড়া বিএনপি-জামায়াতপন্থি ফোরামের উল্লেখযোগ্য সংখ্যক ভোটার সমান্তরাল ফোরামের আরেক সভাপতি প্রার্থী খোন্দকার মনিরুল আলমকে সমর্থন জানাতে পারেন বলে জানা গেছে। খোন্দকার মনিরুল আলম জাতীয় প্রেস ক্লাবের দু’বার করে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হয়েছিলেন। যুগ্ম সম্পাদকও ছিলেন এই সিনিয়র সাংবাদিক। প্রেস ক্লাব পরিচালনার অভিজ্ঞতা ও ব্যক্তিগত গ্রহণযোগ্যতার কারণে তিনি বিএনপি ফোরামের উল্লেখযোগ্য সংখ্যক ভোটারের পাশাপাশি আওয়ামী লীগ ফোরামের একটি অংশের ভোটারদের নিজের পক্ষে টানতে পারেন তিনি, এমন অভিমত অনেকের। তবে অনেকেই আবার মত দিয়েছেন, সাধারণ সম্পাদক পদে প্রার্থী না থাকার বিষয়টি নির্বাচনে তার প্যানেলকে ভোগাতে পারে।

এদিকে আজিজ গণি পরিষদের সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী কাদের গণি চৌধুরী এর আগে প্রেস ক্লাবের যুগ্ম সম্পাদকসহ বিভিন্ন পদে দায়িত্ব পালন করেছেন। নিজ ফোরামের অধিকাংশ ভোটারেরই সমর্থন পাচ্ছেন তিনি। বিপুল সংখ্যক নতুন সদস্যেরও সমর্থন আদায় করতে তিনি সক্ষম হচ্ছেন বলে অনেকে মনে করছেন। বিশেষ করে খোন্দকার মনিরুল আলমের প্যানেলে কোনো সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী না থাকার সুবিধা নিজের ঘরে তুলে নিতে চাইছেন কাদের গণি।তবে দীর্ঘদিন বঞ্চিত হওয়ার পর নতুন সদস্য হয়েছেন এমন ভোটাররা গণিকে সমর্থন নাও দিতে পারেন।

অন্যদিকে সভাপতি ছাড়াই সাধারণ সম্পাদক হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন প্রেস ক্লাবের বর্তমান সাধারণ সম্পাদক কামরুল ইসলাম চৌধুরী। বিএনপি-জামায়াতপন্থি সাংবাদিক ফোরামের অনেকেরই ভোট তিনি পাচ্ছেন বলে ধারণা করছে কামরুলের সমর্থকরা। তাদের যুক্তি, ‘কৃতজ্ঞতা’ স্বরূপ ভোট দেবেন নতুন ভোটাররা। এ ছাড়া আওয়ামী লীগ ফোরামে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক ভোটার তাকে সমর্থন দিচ্ছেন বলেও কামরুলের সমর্থকরা দাবি করছেন। যদিও সভাপতিবিহীন প্যানেল দেওয়ায় ভোটারদের আস্থা শেষ পর্যন্ত ধরে রাখাই কামরুল ইসলাম চৌধরীর জন্য বড় চ্যালেঞ্জ, এমনটি মনে করছেন অনেকে।

একাধিক ভোটার দ্য রিপোর্টকে জানিয়েছেন, এবারের নির্বাচনে শুধু প্যানেল বা আদর্শ বিবেচনায় নয়, প্রার্থীর ব্যক্তিগত ইমেজ জয়-পরাজয় নির্ধারণ করবে।

প্রচারপত্রে যেসব প্রতিশ্রুতি

মুহম্মদ শফিকুর রহমান ও ফরিদা ইয়াসমিনের নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ ও বামপন্থি সাংবাদিকদের প্যানেলে ৩টি অঙ্গীকার দেওয়া হয়েছে। তা হলো- বঙ্গবন্ধু মিডিয়া কমপ্লেক্সের নির্মাণ কাজ দ্রুত সম্পাদন, সকল পেশাদার সাংবাদিকের সদস্য পদ প্রদান এবং উন্নয়ন কাজ অব্যাহত রেখে ক্লাবে প্রবীণ-নবীন সদস্যদের সুযোগ সুবিধা আরও বৃদ্ধি।

এমএ আজিজ ও কাদের গনি চৌধুরীর নেতৃত্বাধীন বিএনপি-জামায়াতপন্থি (মূল অংশ) প্যানেলের প্রচারপত্রে ৪টি অঙ্গীকার করা হয়েছে। সেগুলো হলো-জাতীয় প্রেস ক্লাবের গণতান্ত্রিক ঐতিহ্য পুনরুদ্ধার, ক্লাবের নবীন-প্রবীণ সকল সদস্যের স্বার্থ সংরক্ষণ, প্রস্তাবিত জাতীয় প্রেস ক্লাব বহুতল মিডিয়া কমপ্লেক্স ভবণ নির্মাণসহ ক্লাবের উন্নয়ন ও সৌন্দর্যবর্ধন এবং ক্লাবের গঠনতন্ত্র লঙ্ঘন করে নতুন সদস্যদের কাছ থেকে আদায়কৃত ৫ হাজার টাকা ফেরত প্রদান।

খোন্দকার মনিরুল আলম পরিষদের প্রচারপত্রের শ্লোগান হচ্ছে ‘প্রগতিশীল নেতৃত্ব, গণতন্ত্র ও সাংবাদিক ঐক্য আমাদের লক্ষ্য।’

কামরুল ইসলাম চৌধুরী পরিষদে প্রচারপত্রে বলা হয়, ‘আমরাই চাই : বঙ্গবন্ধু মিডিয়া কমপ্লেক্স ভবন মাথা তুলে দাঁড়াবে। প্রেস ক্লাব বিকশিত হবে বহুমাত্রিকতায়। সদস্য কল্যাণ তহবিল হবে আরও স্ফীত। মরণোত্তর অনুদান হবে ২৫ লাখ টাকা। কল্যাণ তহবিল থেকে সদস্যদের এককালীন সহযোগিতার পরিমাণ হবে ৩ লাখ টাকা। পেশার সত্যিকার সহযাত্রী হবে জাতীয় প্রেস ক্লাব।’

প্রেস ক্লাবের একাধিক সিনিয়র সদস্য নাম প্রকাশ না করার শর্তে দ্য রিপোর্টকে বলেন, বিএনপি-জামায়াতপন্থি সাংবাদিকদের মধ্যে যেমন প্রকাশ্য বিভেদ রয়েছে, তেমনি আওয়ামী লীগ সমর্থিতদের মধ্যে অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব প্রকট হয়ে উঠছে। ফলে এবারের নির্বাচন দল বা আদর্শ বিবেচনার সঙ্গে সঙ্গে প্রার্থীর ব্যক্তি জনপ্রিয়তা তথা ইমেজের ওপরও জয়-পরাজয় নির্ভর করবে, এটা নিশ্চিত।

ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী ৩০ ডিসেম্বর (শুক্রবার) জাতীয় প্রেস ক্লাবের বার্ষিক সাধারণ সভা অনুষ্ঠিত হবে। ৩১ ডিসেম্বর সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত বিরতিহীনভাবে ভোটগ্রহণ চলবে। ইলেকট্রনিক পদ্ধতিতে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। দ্বিবার্ষিক এ নির্বাচনে ৫ সদস্য বিশিষ্ট নির্বাচন পরিচালনা কমিটির চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করছেন তথ্য প্রযুক্তিবিদ মোস্তাফা জব্বার। কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন- মো. মোস্তফা-ই-জামিল, জাফর ইকবাল, শাহ আলমগীর ও মো. নাসির উদ্দিন।

(দ্য রিপোর্ট/কেএ/এপি/জেডটি/ডিসেম্বর ২৯, ২০১৬)

পাঠকের মতামত:

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

M

M

SMS Alert

এর সর্বশেষ খবর

- এর সব খবর