thereport24.com
ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল 24, ১১ বৈশাখ ১৪৩১,  ১৬ শাওয়াল 1445

ইসলামে কন্যা, স্ত্রী ও মা হিসেবে নারীর মর্যাদা

২০১৭ জানুয়ারি ০৬ ১৫:৩৪:৩৮
ইসলামে কন্যা, স্ত্রী ও মা হিসেবে নারীর মর্যাদা

দ্য রিপোর্ট ডেস্ক : পৃথিবীতে ইসলামই সর্বপ্রথম নারীকে যথাযোগ্য সম্মান ও অধিকারে প্রতিষ্ঠিত করেছে। ইসলামপূর্ব যুগে নারীকে মানুষ হিসেবে গণ্য করা হতো না। স্ত্রী হিসেবে তারা ছিল চরম অবহেলার স্বীকার। তার প্রাপ্য মর্যাদা তাকে কখনোই দেয়া হতো না। কন্যা সন্তান জন্মগ্রহণকে সামাজিক কলঙ্কের বোঝা মনে করে জীবন্ত কবর দেয়া হতো। সমাজে নারী হয়ে জন্ম নেয়া ছিল অভিশাপ।

কিন্তু ইসলামের আগমনে নারীর প্রতি এ জঘন্য অত্যাচারের অবসান ঘটে। নারীর জীবনে আসে আমূল পরিবর্তন। আল্লাহতায়ালা পবিত্র কুরআনের মাধ্যমে নারীর প্রতি সম্মান প্রদর্শনের ঘোষণা দেন। এভাবে ইসলামই সর্বপ্রথম নারীকে সমাজে স্বাধীন, সুস্থ ও সুন্দরভাবে বেঁচে থাকার পথ প্রদর্শন করে।

কুরআনিক আইন নারীকে সম্মান ও মর্যাদা দিয়েছে কন্যা, স্ত্রী ও মা হিসেবে।

* কন্যা হিসেবে মর্যদা-

কন্যা হিসেবে ইসলামপূর্ব যুগে তার কোন মর্যাদাই ছিল না। সেক্ষেত্রে ইসলাম তাদের মর্যাদা দিয়েছে। পবিত্র কুরআন ঘোষণা করেছে- কন্যা সন্তান জন্মগ্রহণ করলে তোমাদের খুশি হওয়া উচৎ।

হাদিস শরীফে বর্ণিত হয়েছে- যখন কন্যা সন্তান ভূমিষ্ট হয় তখন আল্লাহ পাক ফেরেশতাদের প্রেরণ করেন। তারা এসে বলে, পরিবারের সকলের ওপর শান্তি বর্ষিত হোক। অতঃপর তারা তাদের বাহু দিয়ে কন্যা সন্তানটিকে আগলে রাখে এবং তার মাথায় হাত রেখে বলে এক অবলা হতে আর এক অবলা বের হয়েছে। যে ব্যক্তি এর রক্ষণাবেক্ষণে মনোযোগী হবে সে কেয়ামত পর্যন্ত সাহায্য পাবে।(আবু দাউদ শরীফ)

* স্ত্রী হিসেবে মর্যদা-

স্ত্রী হিসেবে ইসলাম নারীকে পূর্ণ মর্যাদা দিয়েছে। পবিত্র কুরআনে এরশাদ হয়েছে- তারা তোমাদের পরিচ্ছেদ এবং তোমরাও তাদের পরিচ্ছেদ। (সূরা বাকারাহ-১৮৭)

পবিত্র কুরআনে স্বামী-স্ত্রী সম্পর্ক মনিব-দাসীর মতো নয়, বরং অত্যন্ত গভীর বন্ধুত্ব ও ভালবাসায় পরিপূর্ণ বলে বর্ণনা করা হয়েছে। (সূরা রুম : ২১)

স্বামীর অবর্তমানে তার রেখে যাওয়া সম্পদের ইসলাম নির্দেশিত নির্দিষ্ট অংশের হকদার স্ত্রী।

* ইসলামে মায়ের মর্যাদা-

ইসলাম মায়ের মর্যাদা দিয়েছে সবার উপরে। এত মর্যাদা অন্য কাউকে দেয়া হয়নি। “মায়ের পায়ের নিচে সন্তানের বেহেশত” নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযুর পাক ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের এই ঘোষণা নারীকে আরও মর্যাদাবান করেছে।

একজন সাহাবী নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযুর পাক ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের নিকটে এসে প্রশ্ন করলেন- আমার নিকট খেদমত পাওয়ার বেশি হকদার কে? জবাবে নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযুর পাক ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন- তোমার মা, দ্বিতীয়ত তোমার মা, তৃতীয়ত তোমার মা, অতঃপর পিতা। (সহীহ বুখারী)

একাধিকবার মায়ের কথা বলে নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযুর পাক ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম নারী জাতিকে সমাজে সম্মান দিয়েছেন।

ইসলাম নারীদের প্রকৃত অধিকার দিয়েছে। সুন্দরভাবে সমাজে আত্মসম্মানের সাথে বেঁচে থাকার অধিকার দিয়েছে। অমর্যাদা আর গ্লানির হাত থেকে রক্ষা করে শ্রদ্ধার সর্বোচ্চ আসন দান করেছে।

পারিবারিক, সামাজিক, রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক সব ক্ষেত্রেই ইসলাম নারীর নায্য অধিকার প্রতিষ্ঠিত করেছে। ইসলাম নারীকে অর্থনৈতিক স্বাধীনতা দিয়েছে। কুরআনে সুস্পষ্ট ঘোষণা এসেছে- পুরুষ যা অর্জন করে সেটা তার অংশ এবং নারী যা অর্জন করে সেটা তার অংশ।(সুরাহ নিসা- ৩২)

আমাদের সকলের উচিৎ ইসলামের আলোকে নিজেদের জীবন গড়ে তোলা এবং নারীকে মর্যাদার আসনে অধিষ্ঠিত করা। তবেই সমাজ তথা দেশ থেকে দূর হবে নারী নির্যাতনের মতো ভয়াবহ অপরাধ।

(দ্য রিপোর্ট/একেএ/এনআই/জানুয়ারি ০৬, ২০১৬)

পাঠকের মতামত:

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

M

M

SMS Alert

এর সর্বশেষ খবর

- এর সব খবর