thereport24.com
ঢাকা, শুক্রবার, ২৯ মার্চ 24, ১৫ চৈত্র ১৪৩০,  ১৯ রমজান 1445

সৌন্দর্যের আরেক নাম সাজেক ভ্যালি

২০১৭ জানুয়ারি ০৮ ১১:২৬:৪৩
সৌন্দর্যের আরেক নাম সাজেক ভ্যালি

দ্য রিপোর্ট ডেস্ক : পর্যটন স্পটগুলোর মধ্যে ‘সাজেক ভ্যালি’ বেশ পরিচিত একটি নাম। এছাড়া সাজেক ভ্যালির রয়েছে আরও কিছু বৈশিষ্ট্য যা পর্যটকদের আকৃষ্ট করে থাকে। বিশেষ করে এখানে, বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর একটি ক্যাম্প করার পর গত ৬ থেকে ৭ বছরের মধ্যে জায়গাটি বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠে পর্যটকদের নিকট।

যেভাবে যাবেন সাজেক ভ্যালি:

যদি আপনিও এই সৌন্দর্য উপভোগ করতে চান সাজেকের। তাহলে ঢাকা থেকে বেশকিছু এসি,ননএসি বাস সার্ভিস রয়েছে যেগুলো দিয়ে খুব সহজেই খাগড়াছড়ি যাওয়া যায়। পরিবহণ খরচও বেশ কম। খাগড়াছড়ি পৌঁছানোর পর সেখান থেকে চান্দের গাড়ি নামক একটি পরিবহণের দেখা মিলবে। যার ভাড়া করতে বাজেটটা বেশ বড়সড়ই রাখতে হবে। জানা থাকা ভালো এই গাড়িটি কেবল খাগড়াছড়ি থেকেই ভাড়া করতে হয়। সবকিছু ঠিকঠাক মতো চললে বলা যায় ৪-৫ ঘণ্টার মধ্যেই আপনি পৌঁছে যেতে পারনে প্রিয় সাজেক ভ্যালিতে।

এছাড়া খাগড়াছড়ি শহরে ২টি পর্যটন কেন্দ্র আছে। এই দুই স্পটে যেতে পারেন নিজের ভ্রমণটাকে আরো একটু আকর্ষণীয় করে তোলতে। সেখানে যেতে চাইলে চান্দের গাড়ি ওয়ালার সাথে আগে থেকেই চুক্তি করে নিতে হবে। তাহলে গাড়িওয়ালা ওই ২টি স্পটে ভ্রমণ করিয়ে সাজেকে নিয়ে যাবে। স্পট দুটি হল রিসাং ঝর্ণা এবং অপরটি আলু-টিলা গুহা। এই ২টি স্থান প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে পরিপূর্ণ এবং ভ্রমণ পিপাসুদের কাছে বেশ জনপ্রিয়।

রিসাং ঝর্ণা:

রিসাং ঝর্ণা খাগড়াছড়ি থেকে ১২ কি.মি. দূরত্ব। পাহাড়ের চূড়া থেকে রিসাং এর প্রবেশ পথ। যাওয়ার সময় অর্ধেক পথ নিচু ও ঢালু পথে হেটে যেতে হয়, বাকি পথ সিঁড়ি বেয়ে নামতে হয়। রিসাং এর মনোমুগ্ধকর স্বচ্ছ পানি দেখে যে কারো মন জুড়িয়ে যাবে। রিসাং এর পানি তেমন গভীর নয়। কিন্তু রিসাং ঝর্ণার আকৃতি বেশ ঢালু। তাই পিছলিয়ে যাওয়া থেকে বেশ সাবধান থাকতে হয়।

আলু টিলা:

রিসাং থেকে আলু-টিলা ৪কি.মি. দূরত্ব। আলু-টিলা গুহাতে ঢোকার সময় মশাল কিনতে পাওয়া যায়। সেটি অবশ্যই নিতে হবে, যেহেতু গুহাটি পুরোপুরি অন্ধকার। যদি সাথে মোবাইল বা টর্চ লাইট থাকে তাহলে সাথে সাথেই এর ফ্ল্যাশ লাইট বা টর্চ লাইটের আলো ব্যবহার করা থেকে বিরত থাকতে হবে কারণ ঐ সব আলোতে পোকামাকড় আকৃষ্ট হয় বেশি। আলু-টিলা অন্ধকারে মশাল নিয়ে হাটা যেন এক রোমাঞ্চকর অনুভূতি। যা অন্যকিছু দিয়ে তুলনা করা অসম্ভব।

গুহার ভেতরে মেঝে ও ছাদ উঁচু নিচু, আবার কিছু কিছু জায়গায় রাস্তা প্রশস্ত আবার সরু। তাই মাথায় যেন আঘাত না লাগে সে ব্যাপার সতর্ক থাকতে হবে। গুহার মেঝেতে অসংখ্য ছোট বড় পাথর ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে আস্তরের মত এবং সেখান থেকে পানি প্রবাহিত হয়। দেখে শুনে না হাঁটলে পিছলিয়ে পরার সম্ভাবনা আছে। গুহার ভেতরে বাতাস চলাচল কম, কারো শ্বাস-প্রশ্বাস এ সমস্যা থাকলে ইন-হেলার নিয়ে যেতে ভুলবেন না।

চান্দের গাড়িতে সাজেক ভ্যালিতে যাওয়ার পথে একটি জায়গা আছে ভাগাই ঘাট নামক। এখান থেকে সেনাবাহিনীদের সাথে গাড়িতে সারিবদ্ধ ভাবে যেতে হয় এবং তাদের সাথে যাওয়ার শেষ সময় দুপুর ৩টা। এই সময়ের পর সাজেকে যাওয়া যায় না।

সাজেকে কোন খাবার রেস্তোঁরা নেই বললেই চলে। যেই রিসোর্ট এ থাকার পরিকল্পনা আছে, সেখানে যাওয়ার আগেই খাবারের ব্যাপারে চুক্তি করে নিতে হবে। তা না হলে আদিবাসীদের বাসায় রান্না করে খাবার সুবিধা আছে। আদিবাসীদের বাসায় খেতে হলে বাঘাই ঘাট থেকে রান্নার উপাদান কিনে নিয়ে যেতে হবে।

সাজেকে কিছু দালানকোঠার মত হোটেল আছে। কিন্তু সাজেকে এর অনুভূতি চাইলে কাঠের কুঠিরে থাকা ভাল। সাজেকে পানি সরবরাহ কম, তাই পানি কিনে নিয়ে যাওয়া উৎকৃষ্ট। সাজেকে বিদ্যুৎ সরবরাহ নেই।

এখানে আদিবাসী লোকজন সোলার পাওয়ারের মাধ্যমে বাতি জ্বালিয়ে থাকে। যাওয়ার আগে ইলেকট্রনিক্স গেজেট পুরো চার্জ দিয়ে নিয়ে যাওয়া উচিত। পাওয়ার ব্যাংক অথবা অতিরিক্ত ব্যাটারি সঙ্গে করে নিয়ে যাওয়া উত্তম। সাজেকের আসল আকর্ষণ হল খুব ভোরে উঠে মেঘ দেখা। তাই কষ্ট করে হলেও ভোরে উঠে সেই দৃশ্য উপভোগ করা উচিত সবারই। যেন এক স্বর্গীয় মেঘের রাজ্য।

সাজেকে যেই কয়দিন পর্যটক থাকবে সেই কয়দিন সেখানে চান্দের গাড়ি চালকও থাকবে। কিন্তু চালক তার থাকার ব্যবস্থা নিজে আলাদা করে নিবে। সাজেক থেকে ফেরত যাওয়ার সময় চান্দের গাড়িতে করে চালক খাগড়াছড়ির বাস টার্মিনালে পৌঁছে দিবে।

(দ্য রিপোর্ট/আফ/জানুয়ারি ৮, ২০১৭)

পাঠকের মতামত:

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

M

M

SMS Alert

এর সর্বশেষ খবর

- এর সব খবর