thereport24.com
ঢাকা, শুক্রবার, ২৯ মার্চ 24, ১৫ চৈত্র ১৪৩০,  ১৯ রমজান 1445

‘মুখোশ মানুষ’ নিয়ে বিতর্ক চলছেই

২০১৭ জানুয়ারি ১০ ১৬:০৫:১২
‘মুখোশ মানুষ’ নিয়ে বিতর্ক চলছেই

মুক্তির দুই সপ্তাহ পেরিয়ে গেলেও বিতর্ক পিছু ছাড়ছে না আরাফাত রহমান জুয়েল পরিচালিত চলচ্চিত্র ‘মুখোশ মানুষ’।

৩০ ডিসেম্বর মুক্তিপ্রাপ্ত চলচ্চিত্র ‘মুখোশ মানুষ-দ্য ফেইক’ এর লেখক স্বত্ব অস্বীকারের অভিযোগ করেছেন যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী একজন নাট্যকার। এই চলচ্চিত্রের মাধ্যমে নির্মাতার তালিকায় আসা ইয়াসির আরাফাত জুয়েলের বিরুদ্ধে প্রতারণার অভিযোগ করেছেন তিনি।

বর্তমানে নিউ ইয়র্ক প্রবাসী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ছাত্র নাসির উদ্দিনের পক্ষে অভিযোগ নিয়ে ২৫ ডিসেম্বর শাহবাগ থানায় একটি জিডি করেছেন তার বন্ধু জিল্লুর রহমান।

এতে বলা হয়, জুয়েল তার বন্ধু নাসিরকে আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করে তথ্য চুরির অপরাধ করেছেন। মূল গল্প লেখক নাসিরের অনুমতি ছাড়াই চিত্রনাট্যে পরিবর্তন এনে চলচ্চিত্রে রূপ দেওয়া হয়েছে। ৩০ ডিসেম্বর মুক্তি পাওয়া এই চলচ্চিত্র প্রথমে নাটক হিসেবে বানানো হয়েছিল।

নাসির উদ্দিন বলেন, ‘স্বল্প পরিচিত জুয়েল ২০১৪ সালের ফেব্রুয়ারিতে আমার কাছে নাটকের জন্য একটি গল্প ও চিত্রনাট্য চায়। আমি আমার লেখা ‘নীল’ নামের গল্পের চিত্রনাট্য তাকে দেই। এটা তার প্রথম কাজ এবং বাজেট কম -সে জন্য আমাকে নামমাত্র পারিশ্রমিক দেয় এবং আমি তাকে উৎসাহ দেই যাতে সে কাজটা ভালো করে করতে পারে।’

তিনি আরও বলেন, ‘২০১০ সালে গল্পটি লিখেছিলাম। ঢাকা শহরের উচ্চমধ্যবিত্ত পরিবারের এক নারীর কষ্টের গল্প এটি। জুয়েল এই গল্প নিয়ে ‘মুখোশ মানুষ’ নাটক নির্মাণ করে কোনো চ্যানেলে চালাতে না পেরে এটি স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র বলে প্রচার করতে থাকে। নাটকে কাহিনীকার ও চিত্রনাট্যকার হিসেবে তার নাম থাকলেও স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র নামে নাটকের যে ভার্সনটি প্রচার করা হচ্ছে সেখানে কাহিনীকারের নাম দেওয়া হয়েছে ওহিদুর রহমান।

নাসির দাবি করেন, ২০১৫ সালের সেপ্টেম্বর মাসে জানতে পারি জুয়েল ‘মুখোশ মানুষ’ নামে ফিচার ফিল্ম বানাবে। আমি তাকে বলি আমার লিখিত অনুমতি ছাড়া তুমি এটা করতে পারো না। কিন্তু সে আমাকে পাত্তাই দিলো না। এরপর বাবার অসুস্থতাসহ বিভিন্ন জটিলতায় এ বিষয়ে আর এগোতে পারেনি। নাটকের একটি ডিভিডি জুয়েল আমাকে দিয়েছিলো। সেখানে কাহিনী ও চিত্রনাট্যে আমার নাম রয়েছে। কিন্তু চলচ্চিত্রে আমার নাম বাদ দেওয়া হয়েছে। এটি চলচ্চিত্রের গল্পের মূল লেখক হিসাবে চরম অপমানের এবং আমি প্রতারিত হয়েছি।

নাসির উদ্দিন জানান, এই অন্যায়ের প্রতিবাদে বাদি হয়ে মুখ্য মহানগর হাকিমের আদালতে মামলা করেছি। একইভাবে জাপান বাংলাদেশ মিডিয়ার প্রযোজক পি আর প্লাসিড ‘মুখোশ- মানুষ’র সেন্সর সনদ বাতিলের বিষয়ে জেলা জজ আদালতে মামলা করেন।

কিন্তু নির্মাতা জুয়েল দাবি করেন আদালতের কোন চিঠি তিনি পাননি।

অন্যদিকে এই চলচ্চিত্রকে সেন্সর সনদ দেওয়ার ক্ষেত্রে স্থগিতাদেশের কোনো চিঠি পাননি বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ সেন্সর বোর্ডের সচিব মুন্সী জালাল উদ্দিন।

এদিকে নাসির উদ্দিন ও পি আর প্লাসিডের অভিযোগ ভিত্তিহীন দাবি করে পরিচালক ইয়াসির আরাফাত জুয়েল গণমাধ্যমকে বলেন, ‘আমার সিনেমার স্ক্রিপ্ট ও ডায়ালগ লিখেছেন ওহিদুর রহমান। নাটকের সঙ্গে চলচ্চিত্রটিকে গুলিয়ে ফেলছেন অনেকেই। যেটা নাটক ছিল, সেটা ছিল আলাদা একটা প্রজেক্ট। নাটকটি নিয়ে অনেক আলোচনা হলে সেটি পূর্ণদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র নির্মাণের সিদ্ধান্ত নেই। নাটকের গল্পকার পরে দাবি করেন এই সিনেমার গল্পটাও তার। আসলে তা নয়।’

জুয়েল আরও বলেন, ‘ফিল্ম একটা বড় ব্যাপার। সবাই আসলে ফিল্মের গল্প লিখতে পারেন না। যিনি পারবেন মনে হয়েছে আমি তাকে দিয়ে চলচ্চিত্রের গল্পটি লিখেয়েছি। একটি মেয়ের জীবনের গল্প নিয়ে তৈরি হয়েছে সিনেমাটি। সিনেমার গল্পটি সিনেমার মতো করেই লেখা হয়েছে। নাটকের গল্প আর সিনেমার গল্প এক হয় না কখনোই। পুরো চলচ্চিত্র ফোর-কে ক্যামেরা দিয়ে শুটিং করা হয়েছে। নাটকটি আমি মার্ক-থ্রি দিয়ে শুটিং করেছিলাম। এটা ফোর-কে ক্যামেরা দিয়ে শুটিং করা, চেন্নাই থেকে কালার গ্রেডিং করা। নাটকের সঙ্গে এর কোনো সম্পর্ক নেই। শুধু গল্পের প্লটটি এক। গল্পটি ছিল একটি সত্য ঘটনা অবলম্বনে। আর একটি সত্য ঘটনা নিয়ে অনেকেই গল্প লিখতে পারেন। এতে দোষের কিছু নেই।’

(দ্য রিপোর্ট/পিএস/এফএস/জানুয়ারি ১০, ২০১৭)

পাঠকের মতামত:

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

M

M

SMS Alert

এর সর্বশেষ খবর

- এর সব খবর