thereport24.com
ঢাকা, বুধবার, ২৪ এপ্রিল 24, ১১ বৈশাখ ১৪৩১,  ১৫ শাওয়াল 1445

ইসি গঠনে আ’লীগের চার দফা প্রস্তাব

২০১৭ জানুয়ারি ১১ ১৯:১০:৪৭
ইসি গঠনে আ’লীগের চার দফা প্রস্তাব

দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক : সুষ্ঠু, অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের জন্য বিরাজমান সকল বিধিবিধানের সঙ্গে জনমানুষের ভোটাধিকার অধিকতর সুনিশ্চিত করার স্বার্থে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ই-ভোটিং প্রবর্তনসহ ৪ দফা প্রস্তাব দিয়েছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ।

নতুন নির্বাচন কমিশন গঠন নিয়ে বুধবার (১১ জানুয়ারি) রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদের সঙ্গে সংলাপকালে এ প্রস্তাব দিয়েছে ক্ষমতাসীন দলটি। পরে সন্ধ্যায় ধানমণ্ডিতে আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে দলের সাধারণ সম্পাদক, সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের প্রস্তাবনা সম্পর্কে সংবাদ সম্মেলনে কথা বলেন।

নির্বাচন কমিশন গঠনে রাষ্ট্রপতিকে চারটি সুনির্দিষ্ট প্রস্তাবনা এবং অবাধ সুষ্ঠু নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য ১১টি গুরুত্বপূর্ণ সুপারিশ ও চার প্রস্তাব আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে লিখিতভাবে দেওয়া হয় বলে জানান ওবায়দুল কাদের।

তিনি বলেন, ‘আওয়ামীলীগ সংবিধান ও দেশের বিরাজমান সকল আইনকানুনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। রাষ্ট্রপতির সুদীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনের সুগভীর প্রজ্ঞা ও সুবিবেচনার প্রতি আওয়ামী লীগের পরিপূর্ণ আস্থা ও বিশ্বাস রয়েছে। নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠনে রাষ্ট্রপতির গৃহীত যে কোনো ন্যায়সঙ্গত উদ্যোগের প্রতি আওয়ামী লীগের পরিপূর্ণ সমর্থন থাকবে।’

আওয়ামী লীগের চার প্রস্তাব

ক. গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধানের অনুচ্ছেদ ১১৮-এর বিধান অনুযায়ী রাষ্ট্রপতি প্রধান নির্বাচন কর্মকর্তা ও অন্য কমিশনারদের নিয়োগ দেবেন।

খ. প্রধান নির্বাচন কর্মকর্তা ও অন্য কমিশনারদের নিয়োগের ক্ষেত্রে রাষ্ট্রপতি যা উপযু্ক্ত বিবেচনা করবেন, সে প্রক্রিয়ায় তিনি নির্বাচন কমিশনারদের নিয়োগ দেবেন।

গ. প্রধান নির্বাচন কর্মকর্তা ও অন্য কমিশনারদের নিয়োগের লক্ষ্যে সম্ভব হলে এখনই একটি উপযুক্ত আইন প্রণয়ন অথবা অধ্যাদেশ জারি করা যেতে পারে। সময় স্বল্পতার কারণে ইসি পুনর্গঠনের ক্ষেত্রে তা সম্ভব না হলে পরবর্তী নির্বাচন কমিশন গঠনের সময় যেন এর বাস্তবায়ন সম্ভব হয়, সংবিধানের নির্দেশনার আলোকে এখন থেকেই সেই উদ্যোগ গ্রহণ করা।

ঘ. অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের জন্য বিরাজমান সব বিধিবিধানের সঙ্গে জনগণের ভোটাধিকার অধিকতর সুনিশ্চিত করার স্বার্থে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ই-ভোটিং চালু করা।

রাষ্ট্রপতির কাছে ১১ গুরুত্বপূর্ণ সুপারিশ

১. একটি স্বাধীন ও কার্যকর নির্বাচন কমিশন

২. নির্বাচনকালীন সময়ে নির্বাহী বিভাগের সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়/সংস্থার দায়িত্বশীলতা

৩. নির্বাচন কমিশন সচিবালয় ও এর মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তা/কর্মচারীদের দায়িত্বশীলতা ও নিরপেক্ষ আচরণ

৪. ছবিযুক্ত একটি নির্ভুল ভোটার তালিকা এবং ভোটগ্রহণের দিন নির্বাচন কেন্দ্রের সার্বিক নিরাপত্তা

৫. নির্বাচন পরিচালনায় বেসরকারি সংস্থা বা প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা/কর্মচারীদের পরিবর্তে কেবলমাত্র প্রজাতন্ত্রের দায়িত্বশীল কর্মকর্তা/কর্মচারীদের প্রিজাইডিং অফিসার থেকে পোলিং অফিসার পদে নিয়োগ করা

৬. আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় নিয়োজিত সদস্যদের নিরপেক্ষ ও দায়িত্বশীল আচরণ

৭. দেশি/বিদেশি পর্যবেক্ষক থেকে শুরু করে মিডিয়া ও সিভিল সোসাইটির সদস্যদের নির্মোহ তৎপরতা

৮. নির্বাচনে পেশীশক্তি ও অর্থের প্রয়োগ বন্ধ এবং ধর্মীয় সংখ্যালঘু সম্প্রদায়সহ সকল পর্যায়ের ভোটারের অবাধ ভোটদানের সুযোগ নিশ্চিত করা

৯. নির্বাচনের পূর্বে ও পরে এবং নির্বাচনের দিন ভোটারসহ সর্ব সাধারণের সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করা

১০. নির্বাচনকালীন সময়ে প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলাবাহিনীসহ নির্বাচন পরিচালনার জন্য আবশ্যকীয় সকল সংস্থা ও প্রতিষ্ঠানকে নির্বাচন কমিশনের তত্ত্বাবধানে ন্যস্ত করা

১১. নির্বাচনকালীন সরকারের কর্মপরিধি কেবলমাত্র আবশ্যকীয় দৈনন্দিন (রুটিন) কার্যাবলীর মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকা।

এসময় সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠন ইস্যুতে বিএনপিসহ সব রাজনৈতিক দলের সঙ্গে ঐকমত্য হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন কাদের।

নতুন নির্বাচন কমিশন গঠনে রাষ্ট্রপতির আমন্ত্রণে ১১ জানুয়ারি বুধবার আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগের ১৯ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল বঙ্গভবনে যায়। সেখানে রাষ্ট্রপতির সঙ্গে বিকেল ৪টা থেকে দেড় ঘণ্টাব্যাপী বৈঠক করেন আওয়ামী লীগের প্রতিনিধি দলটি।

আওয়ামী লীগ সভাপতির নেতৃত্বে ১৯ সদস্যের প্রতিনিধি দলে ছিলেন- আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য আমির হোসেন আমু, তোফায়েল আহমেদ, সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত, আবুল মাল আবদুল মুহিত, এইচটি ইমাম, ইউসুফ হোসেন হুমায়ুন, মোহাম্মদ জমির।

এছাড়াও ছিলেন- সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য শেখ ফজলুল করিম সেলিম, মোহাম্মদ নাসিম, মতিয়া চৌধুরী, সাহারা খাতুন, সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম, দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক দীপু মনি, জাহাঙ্গীর কবীর নানক, দফতর সম্পাদক আবদুস সোবহান গোলাপ, আইন বিষয়ক সম্পাদক আব্দুল মতিন খসরু, প্রচার সম্পাদক হাছান মাহমুদ ও আইনমন্ত্রী আনিসুল হক।

বিএনপির সঙ্গে আলোচনা মধ্য দিয়ে গত ১৮ ডিসেম্বর রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সংলাপ শুরু করেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ।

২০১২ সালে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা করেই ‘সার্চ কমিটি’র মাধ্যমে কাজী রকিবউদ্দীন আহমদ নেতৃত্বাধীন বর্তমান নির্বাচন কমিশন গঠন করে দিয়েছিলেন তৎকালীন রাষ্ট্রপতি জিল্লুর রহমান।

আগামী ফেব্রুয়ারিতে এ কমিশনের মেয়াদ শেষে নতুন ইসি দায়িত্ব নেবে। নতুন ইসির অধীনে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।

(দ্য রিপোর্ট/এমএইচ/এপি/জানুয়ারি ১১, ২০১৭)

পাঠকের মতামত:

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

M

M

SMS Alert

এর সর্বশেষ খবর

- এর সব খবর