thereport24.com
ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল 24, ১২ বৈশাখ ১৪৩১,  ১৬ শাওয়াল 1445

পাঠ্যপুস্তকে সাম্প্রদায়িকীকরণের প্রতিবাদে বিক্ষোভ রবিবার

২০১৭ জানুয়ারি ১১ ১৯:৩১:১৩
পাঠ্যপুস্তকে সাম্প্রদায়িকীকরণের প্রতিবাদে বিক্ষোভ রবিবার

দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক : পাঠ্যপুস্তকে সাম্প্রদায়িক ও ধর্মীয় বৈষম্যমূলক বিষয় অন্তর্ভুক্তি, দেশের গুরুত্বপূর্ণ ও প্রগতিশীল লেখকদের লেখা বাদ দেওয়াসহ নানা অসঙ্গতির প্রতিবাদে রবিবার (১৫ জানুয়ারি) জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের (এনসিটিবি) সামনে বিক্ষুভ সমাবেশ করবে প্রগতিশীল গণসংগঠণের ব্যানারে।

ওইদিন সকাল ১১টায় এ সমাবেশ শুরু হবে। এছাড়া একইদিন দেশের প্রতিটি জেলায় শিক্ষা অফিসারের কার্যালয়ের সামনে বিক্ষুব্ধ অবস্থান সমাবেশ পালন করা হবে।

রাজধানী সেগুনবাগিচায় ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির গোলটেবিল মিলনায়তনে ১১ জানুয়ারি (বুধবার) এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়। প্রগতিশীল গণসংগঠনসমূহের ব্যানারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ উদীচী শিল্পীগোষ্ঠীর সভাপতি অধ্যাপক ড. সফিউদ্দিন আহমদ।

সংগঠনসমূহের পক্ষে লিখিত বক্তব্য উপস্থাপন করেন উদীচী কেন্দ্রীয় সংসদের সাধারণ সম্পাদক জামসেদ আনোয়ার তপন।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন, রণেশ দাশগুপ্ত চলচ্চিত্র সংসদের সভাপতি মশিউদ্দিন শাকের, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের সাবেক ডিন মতলুব আলী, কেন্দ্রীয় খেলাঘর আসরের সাধারণ সম্পাদক মোখলেসুর রহমান সাগর, প্রগতি লেখক সংঘের সংগঠক কবি সাখাওয়াত টিপু, লেখক হাবীব ইমন, ভাস্কর রাসা, বাংলাদেশ যুব ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক হাফিজ আদনান রিয়াদ, সাবেক ছাত্রনেতা আকরামুল হক, সংস্কৃতিকর্মী জীবনানন্দ জয়ন্ত, প্রকাশক রবীন আহসান, উদীচীর সহ-সভাপতি শিবানী ভট্টাচার্য, সহ-সাধারণ সম্পাদক সঙ্গীতা ইমাম, সংগঠন বিষয়ক সম্পাদক রহমান মুফিজ, সম্পাদকম-লীর সদস্য মিজানুর রহমান সুমন, উদীচী ঢাকা মহানগরের সহ-সভাপতি একরাম হোসেন, বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়নের সাংগঠনিক সম্পাদক সুমন সেনগুপ্ত ও ঢাকা মহানগর সংসদের সভাপতি অনিক রায় উপস্থিত ছিলেন। সংবাদ সম্মেলন পরিচালনা করেন ছাত্র ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক জিএম জিলানী শুভ।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে বাংলার মানুষ যে স্বাধীন বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা করেছিলো, তার অন্যতম মূল ভিত্তি ছিলো ধর্মনিরপেক্ষতা। কিন্তু বর্তমানে এক ভয়ানক সাম্প্রদায়িক বিষে আক্রান্ত আমাদের শিক্ষাব্যবস্থা।

২০১৭ সালের প্রথম দিনেই শিক্ষার্থীদের হাতে তুলে দেওয়া পাঠ্যপুস্তকের ঝকঝকে মলাটের ভেতরে বীভৎস মৌলবাদী পরিকল্পনায় ঢুকিয়ে দেওয়া হয়েছে সম্প্রদায়গত, জাতিগত এবং নারী-পুরুষের বৈষম্য। সরকার একদিকে জঙ্গীবাদের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্সের কথা বললেও, পাঠ্যপুস্তকে জঙ্গীবাদের সুপ্ত উপাদান ঢুকিয়ে দিচ্ছে বলে লিখিত বক্তব্যে অভিযোগ করা হয়। এই পাঠ্যপুস্তকগুলোতে হেফাজত-চরমোনাইয়ের পাকিস্তানি দর্শন প্রতিফলিত হচ্ছে বলেও বক্তব্যে উল্লেখ করা হয়।

এছাড়া পাঠ্যপুস্তকে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের কবিতা, লালন শাহের দর্শন, সত্যেন সেন, রণেশ দাশগুপ্তের মানব দর্শন বা এস ওয়াজেদ আলী ও অধ্যাপক হুমায়ুন আজাদের মতো প্রগতিশীল লেখকদের লেখা বাদ দেয়ার তীব্র নিন্দা জানানো হয়। এসব যারা করছে, তারা বাংলাদেশকে ভবিষ্যতে জঙ্গীবাদের অভয়ারণ্য হিসেবে প্রতিষ্ঠার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত। এছাড়া, এরা মলাটের পেছনে দলীয় চাটুকারিতার নির্লজ্জ নজির রেখে পুরো পাঠ্যপুস্তককে দলীয় প্রচারপত্র বানানো হয়েছে বলেও সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ করা হয়।

এ অবস্থায় অবিলম্বে সাম্প্রদায়িক, বৈষম্যমূলক ও ভুলে ভরা পাঠ্যপুস্তক প্রত্যাহার; বাহাত্তরের সংবিধানের চার মূলনীতি গণতন্ত্র, সমাজতন্ত্র, ধর্মনিরপেক্ষতা ও জাতীয়তাবাদের আদর্শের ভিত্তিতে পাঠ্যপুস্তক প্রণয়ন; প্রগতিশীল লেখকদের লেখা সংযোজন করা; সাম্প্রদায়িক ও ধর্মীয় উস্কানিমূলক বক্তব্য প্রত্যাহার এবং এ ষড়যন্ত্রের সাথে জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিতসহ আট দফা দাবি সংবাদ সম্মেলনে উত্থাপন করা হয়।

একই সাথে ১৫ জানুয়ারি এনসিটিবি’র সামনে বিক্ষুব্ধ অবস্থান কর্মসূচি এবং দাবি পূরণের লক্ষ্যে ধারাবাহিকভাবে সভা সমাবেশ, মতবিনিময়, প্রচারপত্র বিলি, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ইত্যাদি কর্মসূচি অব্যাহত রাখার ঘোষণা দেয়া হয়। এসব বিষয়ে সরকার অবিলম্বে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ না করলে কঠোর কর্মসূচি গ্রহণের ঘোষণাও দেয়া হয় প্রগতিশীল সংগঠনসমূহের যৌথ সংবাদ সম্মেলনে।

(দ্য রিপোর্ট/পিএস/এফএস/জানুয়ারি ১১, ২০১৭)

পাঠকের মতামত:

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

M

M

SMS Alert

এর সর্বশেষ খবর

- এর সব খবর