thereport24.com
ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল 24, ১১ বৈশাখ ১৪৩১,  ১৬ শাওয়াল 1445

ইবির ল্যাবে ফুটল হল্যান্ডের ইভিনিং প্রিমরোজ

২০১৭ জানুয়ারি ১২ ১১:১৫:৫৮
ইবির ল্যাবে ফুটল হল্যান্ডের ইভিনিং প্রিমরোজ

ইবি প্রতিনিধি : ফুলটি দেখতে অনেকটাই সূর্যমুখী ফুলের মত। কিন্তু এটি বাংলাদেশের আবহাওয়ায় জন্ম নিতে পারে না। শীতপ্রধান দেশ হল্যান্ডে এর জন্ম। সুগন্ধ, শোভাবর্ধন, তেলবীজ ও রফতানিতে বেশ কদর রয়েছে ফুলটির। নাম তার (ইভিনিং প্রিমরোজ)। হল্যান্ড থেকে বীজ এনে টিস্যু কালচারের মাধ্যমে বিগত দেড় বছর গবেষণা করে বাংলাদেশের আবহাওয়ায় নতুন জাতের এই ফুল ফোটাতে সক্ষম হয়েছেন ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) বায়োটেকনোলজি এন্ড জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষক ড. জাহাঙ্গীর আলম।

এই ফুলকে যদি এদেশে চাষ করার উপযোগী করা যায় তাহলে নিঃসন্দেহে এটা জাতীয় অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে জানিয়েছেন তিনি।

বিশ্ববিদ্যালয়ের বায়োটেকনোলজি বিভাগের ল্যাবরেটরি ঘুরে দেখা গেছে, বিভাগের শিক্ষার্থীরা টিস্যু কালচার (জৈবপ্রযুক্তির জীবাণুমুক্ত) প্রক্রিয়ায় স্বল্প সময়ে ড. জাহাঙ্গীরের তত্ত্বাধানে অধিক রোগমুক্ত চারা ও ফুলের গুণগতমান নিয়ে দেশি বিদেশি ফুলের চাষ করছে। ফুলের চারা ও বংশবৃদ্ধির জন্য নির্বাচন করেছেন ২-৩ ইঞ্চি ব্যাসের কমলা, হলুদ ও মেরুন রঙের ইভিনিং প্রিমরোজ ফুলের জাত। এছাড়াও জারবেরা, স্ট্র ফ্লাওয়ার, টিউলিপসহ আরও বেশ কিছু ফুলের জাত নিয়ে নিয়মিত গবেষণা করা হচ্ছে।

জাহাঙ্গীর আলম জানান, বাংলাদেশে তৈলবীজ ও বাগানের শোভা বর্ধনের জন্য অনেক জাতের সূর্যমুখী চাষ করা হলেও কাট-ফ্লাওয়ারের কোনো জাত নেই। কতগুলি এক্সোটিক সানফ্লাওয়ার ভ্যারাইটির ইন-ভিট্রো মাল্টিপ্লিকেশন ও ফিল্ড ট্রায়াল থেকে এই নামটি নির্বাচন করা হয়েছে। কাট-ফ্লাওয়ার হওয়ার কারণে এই ফুলটি ফুলদানীতে অনেকদিন পর্যন্ত টাটকা থাকে এবং ফুল শুকিয়ে যাওয়ার পরে সুবাস ছড়াতে থাকে। আর এখানেই সাধারণ সূর্যমুখীর সাথে এর পার্থক্য।

শীতপ্রধান কয়েকটি দেশে কাট-ফ্লাওয়ার হিসাবে সূর্যমুখীর কিছু জাত চাষ করা হলেও এ পর্যন্ত বাংলাদেশে সূর্যমুখীর কাট-ফ্লাওয়ার জাতীয় কোন অনুমোদিত জাত নেই।

বিভাগের প্রফেসর ড. মো. আনোয়ারুল হক (স্বপন) এবং বিভাগীয় সভাপতি ড. নিলুফা আক্তার বানুর ব্যবস্থাপনায় গবেষনায় সফল হয়েছেন তিনি।

তার সঙ্গে কয়েকজন শিক্ষার্থী এই গবেষণায় অংশ নিয়ে কাজ করেছেন। তারা হলেন মোস্তফা শাকিল, যুবায়ের হুসাইন, মোঃ সাদরুল হাসান চৌধুরী, জহুরুল ইসলাম, জুলকার নাইন প্রমুখ।

জানতে চাইলে ড. জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘হল্যান্ড থেকে এই ফুলের বীজ এনেছিলাম। টিস্যু কালচারের মাধ্যমে প্রাথমিকভাবে বাংলাদেশের আবহাওয়ায় উপযোগী করে গাছটি অভিযোজন প্রক্রিয়ায় গাছ জন্মাতে ফুল ফোটাতে সক্ষম হয়েছি। তবে আমাদের জন্মানো গাছ এবং ফুল প্রকৃত আকার থেকে সামান্য ছোট। টিস্যু কালচারের মাধ্যমে আমরা গাছটির ফুলের আকার এবং মান উন্নয়নের চেষ্টা করে যাচ্ছি।’

তিনি আরও বলেন, সুযোগ সুবিধার কমতি থাকা সত্ত্বেও ফুলচাষ থেকে রফতানি আয় দিন দিন বাড়ছে। ভবিষ্যতে ফুল চাষ করে প্রতিবছর ৫০০ কোটি টাকাও অর্জন করা সম্ভব। দেশের উন্নয়নের জন্যই বিভিন্ন বিদেশী জাতের ফুল নিয়ে গবেষণা করে এদেশের আবহাওয়ায় সেটাকে চাষের উপযোগী করার প্রত্যয় নিয়ে কাজ করে যাচ্ছে বিভাগটি। অধিক সুফল পেতে প্রচুর অর্থ ও সময়ের প্রয়োজন।

(দ্য রিপোর্ট/এআরই/এনআই/জানুয়ারি ১২, ২০১৭)

পাঠকের মতামত:

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

M

M

SMS Alert

এর সর্বশেষ খবর

- এর সব খবর