thereport24.com
ঢাকা, শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল 24, ৬ বৈশাখ ১৪৩১,  ১০ শাওয়াল 1445

‘ভুয়া খবর’-এ ফেসবুকের বিরুদ্ধে মামলা

২০১৭ জানুয়ারি ১৪ ২১:৩৬:২০
‘ভুয়া খবর’-এ ফেসবুকের বিরুদ্ধে মামলা

দ্য রিপোর্ট ডেস্ক : ইউরোপে অভিবাসন প্রত্যাশী সিরিয় এক যুবক ফেসবুকের বিরুদ্ধে মামলা করতে যাচ্ছেন। জার্মান চ্যান্সেলর আঙ্গেলা মের্কেলের সঙ্গে সেলফি তুলে আলোচিত হয়েছিলেন তিনি।

কিন্তু পরে ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়া ভুয়া একটি খবরে তাকে সন্ত্রাসবাদের সঙ্গে যুক্ত করা হয়। এর প্রতিবাদেই তিনি ফেসবুকের বিরুদ্ধে মামলা করতে যাচ্ছেন। খবর বিবিসি বাংলার।

ফেসবুকের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণের এই খবর এমন এক সময়ে এলো যখন নিউজফিডে মিথ্যা সংবাদ সামাল দিতে ফেসবুক কর্তৃপক্ষ হিমশিম খাচ্ছে।

জার্মানিতে সোশাল মিডিয়ায় অভিবাসী ও শরণার্থীদের এরকম মিথ্যা অভিযোগে অভিযুক্ত হওয়ার বেশ কয়েকটি ঘটনা ঘটেছে।

মিথ্যা খবরের শিকার হওয়া সিরিয়ার এই যুবকের নাম আনাস মোদামানি। হঠাৎ করেই তিনি বিখ্যাত হয়ে উঠেন যখন ২০১৫ সালের সেপ্টেম্বর মাসে জার্মান চ্যান্সেলর আঙ্গেলা মের্কেল তিনি যে শরণার্থী শিবিরে থাকতেন সেখানে বেড়াতে আসেন।

তখন তিনি জার্মান নেতার সাথে একটি সেলফি তুলেছিলেন। এর মাত্র কয়েক মাস আগে তিনি যুদ্ধ-বিধ্বস্ত সিরিয়ার দারায়া শহর থেকে পালিয়ে জার্মানি চলে আসেন। তুরস্ক, গ্রিস এবং সার্বিয়া হয়ে শেষে উঠেন বার্লিনে। বর্তমানে তার বয়স ১৯।

কিন্তু সেই সেলফিই যেন তার কাল হয়ে উঠলো। জার্মান চ্যান্সেলরের সাথে তোলা ছবিটাই হয়ে উঠলো তাকে আক্রমণের লক্ষ্য। প্রথমে ব্রাসেলস হামলার সাথে আমাকে যুক্ত করা হলো। ছড়িয়ে পড়া ছবিতে দেখা গেলো চেহারায় মিল থাকার কারণে আমাকে হামলাকারী হিসেবে চিহ্নিত করে আমার ছবি ছেড়ে দেওয়া হলো।

তিনি জানান, সোশাল মিডিয়াতে যখন হামলাকারী হিসেবে তার ছবি ছড়িয়ে পড়তে লাগলো তখন তিনি মিউনিখে গেছেন তার এক বন্ধুর সাথে দেখা করতে।

‘অনেক বন্ধু আমাকে বাড়িতে বসে থাকতে পরামর্শ দিলো। এবং আমি তাই করেছি। বাইরে কোথাও যাইনি," বলেন তিনি।

তিনি জানান, কেউ কেউ তাকে পুলিশের কাছে যাওয়ারও পরামর্শ দিয়েছিলো।

‘কিন্তু আমি ভেবেছিলাম এগুলো হয়তো একসময় আপনা আপনিই চলে যাবে।’ এবং কিছুদিনের জন্যে সেরকম হয়েও ছিলো।

কিন্তু আবার যখন বার্লিনে ক্রিসমাসের বাজারে লরি উঠিয়ে হামলা করা হলো এবং বলা হলো যে হামলাকারী একজন শরণার্থী তখন মি. মোদামানি আবার মিথ্যা অভিযোগে অভিযুক্ত হতে লাগলেন।

তিনি বলেন, ‘সেসময় আমি আমার ফেসবুক অ্যাকাউন্ট সাময়িকভাবে বন্ধ করে দিয়েছিলাম। কিন্তু জার্মানিতে যে মহিলা আমাকে আশ্রয় দিয়েছেন তিনি আমার কাছে সেই ছবিগুলো আবার নিয়ে এলেন।’

‘এরকম আবার হওয়ায় আমি খুব হতাশ হয়ে পড়ি। আর তখনই আমি আইনি ব্যবস্থা গ্রহণের সিদ্ধান্ত নেই।’

ফেসবুক কর্তৃপক্ষ বর্ণবাদী পোস্ট মুছে দিতে ব্যর্থ হয়েছে এই অভিযোগ আনা হয় ফেসবুকের প্রধান মার্ক জাকারবার্গ এবং অন্যান্য নির্বাহী কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে।

জার্মান আইনে ঘৃণাকে উস্কে দিতে পারে এ ধরনের প্রচারণা নিষিদ্ধ।

গত বছরের নভেম্বর মাসে এই অভিযোগের ব্যাপারে তদন্ত শুরু করেছেন আইনজীবী চান জু জুন।

তিনি বলেন, ‘ফেইক নিউজ বা বানোয়াট খবরের প্রচার বন্ধ করতে ফেসবুক তেমন একটা কার্যকর উদ্যোগ নিচ্ছে না।’

‘সব বানোয়াট খবরই বেআইনি নয়। কিন্তু যখন মানহানির ঘটনা ঘটে তখন সেসব খবর সরিয়ে নেওয়া উচিত,’ বলেন তিনি।

ফেসবুকের একজন প্রতিনিধি বলেছেন, ‘কিছু ছবি সরিয়ে ফেলার জন্যে মি. জুনের কাছ থেকে আমরা অনুরোধ পেয়েছি। বলা হচ্ছে, এসব ছবি মোদামানির ব্যক্তিগত গোপনীয়তাকে লঙ্ঘন করেছে।’

তিনি জানান, তার পরপরই লোকজন যাতে সেগুলো দেখতে না পারে তার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। ফলে তিনি মনে করেন না যে ফেসবুকের বিরুদ্ধে কোন ধরনের আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার ভিত্তি আছে।

তবে মি. জুন দাবি করেছেন, সব ছবি সরানো হয়নি। মি. মোদামানিকে সন্ত্রাসবাদের সাথে যুক্ত করা কিছু ছবি এখনও ফেসবুকে পাওয়া যায়।

এই মামলার শুনানি হবে আগামী ফেব্রুয়ারি মাসে, জার্মানির একটি আদালতে।

(দ্য রিপোর্ট/এস/এপি/জানুয়ারি ১৪, ২০১৭)

পাঠকের মতামত:

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

M

M

SMS Alert

এর সর্বশেষ খবর

- এর সব খবর