thereport24.com
ঢাকা, শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল 24, ১২ বৈশাখ ১৪৩১,  ১৭ শাওয়াল 1445

সর্বোচ্চ শাস্তির আশায় নিহতদের পরিবার

না.গঞ্জের সাত খুন মামলার রায় সোমবার

২০১৭ জানুয়ারি ১৫ ১৫:৫১:৪২
না.গঞ্জের সাত খুন মামলার রায় সোমবার

নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধি : অপেক্ষার প্রহর শেষে নারায়ণগঞ্জের বহুল আলোচিত চাঞ্চল্যকর সাত খুনের মামলার রায় ১৬ জানুয়ারি সোমবার ঘোষণা করা হচ্ছে৷ নারায়ণগঞ্জ জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক সৈয়দ এনায়েত হোসেন রায় ঘোষণার এ তারিখ নির্ধারণ করেন। এ রায়ের দিকে তাকিয়ে আছেন সাত খুনে নিহতদের পরিবার। তাদের আশা রায়ে আদালত আসামিদের সর্বোচ্চ সাজা ফাঁসি প্রদান করবেন।

২০১৬ সালের ফেব্রুয়ারি থেকে শুরু হওয়া বিচার কাজের আইনি কার্যক্রম শেষ হয় গত ৩০ নভেম্বর। ২০১৪ সালের ২৭ এপ্রিল অপহরণের পর ২০১৫ সালের ৮ এপ্রিল চার্জশিট, ওই বছরের ১২ নভেম্বর ভারত থেকে নূর হোসেনকে দেশে আনা, আদালতে সাক্ষিদের চোখ রাঙানি, বাদী পক্ষকে হুমকি, অন্যতম আসামি র‌্যাবের চাকরিচ্যুত কর্মকর্তা তারেক সাঈদের অসুস্থতার নাটকে হাসপাতালে ভর্তি, কাঠগড়ায় ভেতরে নূর হোসেনের মারামারিসহ মামলা চলাকালে অনেক নাটকীয়তাও হয়েছে। সবশেষে ১৬ জানুয়ারি বহুল প্রতিক্ষিত রায় ঘোষণার দিন ধার্য করেছেন নারায়ণগঞ্জ জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক সৈয়দ এনায়েত হোসেন। এ আদালতেই চলে পুরো মামলার কার্যক্রম।

মামলা পরিচালনা করা রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী নারায়ণগঞ্জ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) ওয়াজেদ আলী খোকন দ্য রিপোর্টকে জানান, গত ফেব্রুয়ারি থেকে শুরু হয়ে মাত্র ৮ মাসেই মামলার আইনি কার্যক্রম শেষ হয়েছে। ১২৭ জন সাক্ষির মধ্যে ১০৬ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ করা হয়েছে। যুক্তিতর্ক ও আসামিদের জেরাতে রাষ্ট্রপক্ষ তথা আমরা আদালতে প্রমাণ করতে সক্ষম হয়েছি যে মামলায় অভিযুক্তরা সবাই সাতজনকে অপহরণ থেকে শুরু করে হত্যা, গুমসহ পুরো কার্যক্রমে জড়িত। সেহেতু আমরা আদালতকে সর্বোচ্চ সাজা মৃত্যুদণ্ড প্রদান করতেও দাবি জানিয়েছি। আমরা আশা করি আদালত সাজা মৃত্যুদণ্ড প্রদান করবেন।

বাদী পক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট সাখাওয়াত হোসেন খান দ্য রিপোর্টকে বলেন, ‘যেভাবে ৭ জনকে হত্যা করা হয়েছে তা খুবই মর্মান্তিক ও নৃশংস। এ সাত খুনের ঘটনায় নিহত পরিবারগুলো এখনো কাঁদছে। সাত খুনের মামলার সুষ্ঠু বিচার হবে এ প্রত্যাশা শুধু নারায়ণগঞ্জবাসীর নয় সমগ্র বাংলাদেশের। আদালতের প্রতি মানুষের আস্থা রয়েছে। সেই আস্থা থেকেই আমার প্রত্যাশা আসামিদের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড হবে। কারণ সাক্ষ্য প্রমাণে আসামিদের সম্পৃক্ততা প্রমাণিত হয়েছে।’

সাত খুনের ঘটনায় নিহত সিটি করপোরেশনের প্যানেল মেয়র নজরুল ইসলামের স্ত্রী সেলিনা ইসলাম বিউটি যিনি একটি মামলার বাদী তিনি বলেন, ‘সাত খুনের পর থেকেই বিচার চাওয়ায় আমাকে ও আমার পরিবারের লোকজনদের নানাভাবে হুমকি দেওয়া হয়েছে। তার পরেও আমরা মামলার কার্যক্রম চালিয়েছি। আমরা সর্বোচ্চ শাস্তি দাবি করছি। আমরা চাই আসামিদের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড যেন দেয় আদালত।’

মামলার অন্য বাদী নিহত আইনজীবী চন্দন সরকারের জামাতা ডা. বিজয় কুমার পাল বলেন, ‘দৃষ্টান্তমূলক সর্বোচ্চ সাজা প্রত্যাশা করছি।’

নিহত গাড়িচালক জাহাঙ্গীরের স্ত্রী নুপুর বেগম মুঠোফোনে বলেন, ‘আমি বিধবা হয়েছি। আমার সন্তান বাবাকে হারিয়েছে। সরকার এর সুষ্ঠু বিচার করে আসামিদের ফাঁসি দিবে।’

নিহত লিটনের ভাই রফিক মিয়া বলেন, ‘আমরা স্বজন হারিয়েছি। আমরাই এ দুঃখ বুঝি। আসামিদের সর্বোচ্চ শাস্তি দাবি জানাচ্ছি।’

নিহত তাজুল ইসলামের বাবা আবুল খায়ের বলেন, ‘আমারা ভুক্তভোগী পরিবার। আমাদের প্রত্যাশা সারাদেশবাসী জানে। তাই আদালতের কাছে প্রার্থনা যাতে এমন একটা রায় দেন যাতে করে আর কোনো বাবাকে তার সন্তান না হারাতে হয়। আমরা সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড দাবি জানাচ্ছি।’

২০১৪ সালের ২৭ এপ্রিল ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ লিংক রোডের খান সাহেব ওসমানী স্টেডিয়ামের সামনে থেকে নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের প্যানেল মেয়র নজরুল ইসলাম, তার বন্ধু মনিরুজ্জামান স্বপন, তাজুল ইসলাম, লিটন ও গাড়িচালক জাহাঙ্গীর আলম এবং আইনজীবী চন্দন কুমার সরকার ও তার গাড়িচালক ইব্রাহীম অপহৃত হন। পরে ৩০ এপ্রিল শীতলক্ষ্যা নদী থেকে ছয়জনের ও ১ মে একজনের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। ওই ঘটনায় দুটি মামলা হয়। একটি মামলার বাদী হলেন নিহত অ্যাডভোকেট চন্দন সরকারের জামাতা বিজয় কুমার পাল। দুটি মামলার তদন্ত শেষে ২০১৫ সালের ৮ এপ্রিল নূর হোসেন, র‌্যাবের সাবেক তিন কর্মকর্তাসহ ৩৫ জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দেয় ডিবি পুলিশ। এতে দুটি মামলাতে সাক্ষি করা হয়েছে ১২৭ জন করে। মামলায় গ্রেপ্তার রয়েছেন ২৩ জন। আর পলাতক আছেন ১২ জন। তবে ৩৫ আসামির পক্ষেই চলে মামলার কার্যক্রম।

(দ্য রিপোর্ট/এস/এইচ/জানুয়ারি ১৫, ২০১৭)

পাঠকের মতামত:

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

M

M

SMS Alert

এর সর্বশেষ খবর

- এর সব খবর