thereport24.com
ঢাকা, শনিবার, ২০ এপ্রিল 24, ৬ বৈশাখ ১৪৩১,  ১১ শাওয়াল 1445

প্রকৌশলী দিয়ে মূল্য নির্ধারণে আপিল বিভাগের নির্দেশ

সংবিধান সংশোধন হলেও মুন সিনেমা হল পায়নি মালিক

২০১৭ জানুয়ারি ১৫ ২১:৫৯:৪৮
সংবিধান সংশোধন হলেও মুন সিনেমা হল পায়নি মালিক

দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক : মুন সিনেমা হলের মালিকানা সংক্রান্ত মামলার রায়ের পরিপ্রেক্ষিতে সংবিধানের পঞ্চম সংশোধনী বাতিল হয়ে গেছে। নতুনভাবে সংশোধনী আনা হয়েছে সংবিধানে। তবে মামলার বিষয়বস্তু মুন সিনেমা হলই পায়নি এর মালিক। রায় বাস্তবায়ন না হওয়ায় শেষ পর্যন্ত আদালত অবমাননার অভিযোগ নিয়ে সর্বোচ্চ আদালতের দ্বারস্থ হয়েছেন তারা।

তবে রাষ্ট্রপক্ষ জানিয়েছে, সিনেমা হলের স্থানে অন্য স্থাপনা নির্মাণ হওয়ায় তা আর ফেরত দেওয়া সম্ভব না। এ কারণেই আদালত সিনেমা হলের পরিবর্তে ওই জমিসহ সিনেমা হলের সার্বিক মূল্য নির্ধারণের নির্দেশ দিয়েছেন আপিল বিভাগ। একজন অভিজ্ঞ, নিরপেক্ষ প্রকৌশলী দিয়ে এই মূল্য নির্ধারণ করে ছয় সপ্তাহের মধ্যে তা আদালতে প্রতিবেদন আকারে দাখিল করতে অ্যাটর্নি জেনারেলকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

প্রধান বিচারপতি এসকে সিনহার নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগের চার বিচারপতির বেঞ্চ রবিবার (১৫ জানুয়ারি) এ আদেশ দেন।

আদালতে মাকসুদুল আলমের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী ড. তৌফিক নেওয়াজ। অপরদিকে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম।

পরে মাহবুবে আলম বলেন, ১৯৭২ সালে মুন সিনেমা হলটি মুক্তিযোদ্ধা কল্যাণ ট্রাস্টের কাছে হস্তান্তর করা হয়। ২০০১ সালে প্রতীকী মূল্য ১ টাকা দরে মুক্তিযোদ্ধা কল্যাণ ট্রাস্ট তা হস্তান্তর করে ডেভেলপারদের কাছে। ডেভেলপাররা মূল সিনেমা হলটি ভেঙে বহুতল ভবন নির্মাণ করে এবং ডেভেলপার কোম্পানি তাদের অংশটুকু বর্তমান দোকান মালিকদের কাছে বিক্রি করে দেয়। পঞ্চম সংশোধনী মামলার রায়ে বলা হয়েছে, মুন সিনেমা হল ছেড়ে দেওয়া হোক। পরে সরকারের করা রিভিউর পরিপ্রেক্ষিতে সিনেমা হল ছেড়ে দেওয়া অথবা উভয়পক্ষের আলোচনার মাধ্যমে সমস্যার সমাধান করার কথা বলেন আদালত।

তিনি আরও বলেন, এ অবস্থায় আমি আদালতের কাছে বলেছি, মুন সিনেমা হল আগের অবস্থায় ফেরত দেওয়ার কোনো উপায় নেই।এখন মুন সিনেমা হলের জমির মূল্য ও মুন সিনেমা হলের মূল স্ট্রাকচারের (কাঠামো) মূল্য ধরে এরমালিক ক্ষতিপূরণ পেতে পারেন। এজন্য আদালত একটি নির্দেশনা দিয়েছেন।

এ বিষয়ে একজন অভিজ্ঞ, নিরপেক্ষ ব্যক্তিকে নিয়োগ দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। যিনি সংশ্লিষ্টদের সাথে কথা বলে জমি ও মূল কাঠামোর মূল্য নির্ধারণ করে আদালতে একটি রিপোর্ট দেবেন। পরে আদালত এ বিষয়ে আদেশ দিবেন।

অভিজ্ঞ, নিরপেক্ষ প্রকৌশলী নিয়োগ দেওয়ার বিষয়ে অধ্যাপক জামিলুর রেজা চৌধুরীর নাম এসেছে বলেও জানান অ্যাটর্নি জেনারেল।

মুক্তিযুদ্ধের সময় মুন সিনেমা হলের সম্পত্তি পরিত্যক্ত ঘোষণা করা হয়। পরবর্তীতে মালিকানা দাবি করে মাকসুদুল আলম আইনের আশ্রয় নেন। এরপর ওই স্থাপনা মুক্তিযোদ্ধা কল্যাণ ট্রাস্টকে দেওয়া সংক্রান্ত রাষ্ট্রপতির অধ্যাদেশ বাতিল করে ২০০৫ সালের ২৯ আগস্ট রায় দেন হাইকোর্ট। ওই রায়ে রাষ্ট্রপতির ওই অধ্যাদেশসহ সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের আমলের অন্যান্য অধ্যাদেশের বৈধতা দিয়ে আনা সংবিধানের পঞ্চম সংশোধনীও বাতিল করা হয়।

২০১০ সালের ২ ফেব্রুয়ারি পঞ্চম সংশোধনী বাতিলে হাইকোর্টের দেওয়া রায় বহাল রাখেন আপিল বিভাগ। পাশাপাশি ৯০ দিনের মধ্যে মুন সিনেমা হল বাংলাদেশ ইতালিয়ান মার্বেলস ওয়ার্কর্স লিমিটেডকে ফেরত দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়।

রায়ের পর তা ফেরত না দেওয়ায় তিন বছর আগে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার অভিযোগ দাখিল করেন মুন সিনেমা হলের মালিকানার দাবিদার মাকসুদুল আলম। ভূমি সচিব মোখলেসুর রহমান, মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রণালয়ের সচিব কে এইচ মাসুদ চৌধুরী, মুক্তিযোদ্ধা কল্যাণ ট্রাস্টের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মেজর জেনারেল (অব.) এ কে মোহাম্মদ আলী সিকদারসহ ৬ জনের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার অভিযোগ আনেন তিনি।

আবেদনে অভিযোগ করা হয়, আপিল বিভাগ ৯০ দিনের মধ্যে জমি ফেরত দিতে বললেও প্রায় তিন বছরেও ওই রায় মানা হয়নি। সেই আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতেই আদালত আজ এই আদেশ দিলেন।

(দ্য রিপোর্ট/কেআই/এপি/এনআই/জানুয়ারি ১৫, ২০১৭)

পাঠকের মতামত:

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

M

M

SMS Alert

এর সর্বশেষ খবর

- এর সব খবর