thereport24.com
ঢাকা, শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল 24, ১২ বৈশাখ ১৪৩১,  ১৭ শাওয়াল 1445

অপারেটরদের কলড্রপের হিসাব দেওয়া বাধ্যতামূলক : তারানা

২০১৭ জানুয়ারি ১৬ ১৯:২৭:৩০
অপারেটরদের কলড্রপের হিসাব দেওয়া বাধ্যতামূলক : তারানা

দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক : মোবাইল ফোন অপারেটরদের প্রতি মাসে কলড্রপের হিসাব দেওয়া বাধ্যতামূলক করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন ডাক ও টেলিযোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিম।

সচিবালয়ে সোমবার (১৬ জানুয়ারি) মোবাইল ফোন অপারেটরদের শীর্ষ কর্মকর্তাদের সাথে বৈঠক শেষে প্রতিমন্ত্রী সাংবাদিকদের এ কথা বলেছেন। সেবার মান, কলড্রপ এবং বিভিন্ন সময়ে মন্ত্রণালয়ের দেওয়া নির্দেশনার বাস্তবায়ন পর্যালোচনার জন্য এ বৈঠক ডাকা হয়।

সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, অপারেটরদের প্রতি মাসে কলড্রপের সংখ্যা ও অতিরিক্ত কলড্রপের জন্য গ্রাহককে দেওয়া ক্ষতিপূরণের হিসাব টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিটিআরসিকে দিতে হবে

কলড্রপ হচ্ছে মোবাইল ফোনে কথা বলার সময় হঠাৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়া। আন্তর্জাতিক টেলিযোগাযোগ সংস্থার (আইটিইউ) মান অনুযায়ী একশ’ কলের মধ্যে তিনিটি কল ড্রপ গ্রহণযোগ্য।

কলড্রপ আইটিইউ’র নির্ধারিত মানের নিচেই হচ্ছে বলে অপারেটররা সভায় দাবি করেছে জানিয়ে তারানা হালিম বলেছেন, ‘এরপরও যদি অতিরিক্ত হয় তারা এর ক্ষতিপূরণ দিতে শুরু করেছেন। এসএমএসের মাধ্যমে জানিয়েছেন বলে আমাদের তারা জানান।’

তিনি বলেছেন, ‘আমরা যেহেতু গ্রাহক পর্যায়ে অভিযোগটি পাচ্ছি, আমরা বলেছি প্রতিমাসে আইটিইউর নির্ধারিত মানের বাইরে কতটি কলড্রপ হলো, কতটি কল ক্ষতিপূরণ দেওয়া হলো, এসএমএসের মাধ্যমে গ্রাহককে জানানো হলো-এ বিষয়ে বাধ্যতামূলকভাবে একটি প্রতিবেদন বিটিআরসিকে (বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ রেগুলেটরি কমিশন) দিতে হবে। যার কপি বিটিআরসি মন্ত্রণালয়ে পাঠাবে, যাতে মন্ত্রণালয় পুরো বিষয়টি সুপারিভিশন করতে পারে।’

জানুয়ারি মাসের প্রতিবেদন ফেব্রুয়ারিতে পাঠাতে অপারেটরদের নির্দেশ দেন তারানা হালিম।

বৈঠকের শুরুতে টেলিযোগাযোগ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব শওকত মোস্তফা জানান, বিটিআরসির তথ্য অনুযায়ী বাংলালিংক ছাড়া আর কোনো অপারেটর কলড্রপে ক্ষতিপূরণ দেয়নি।

এ সময় প্রতিমন্ত্রী বলেছিলেন, ‘কলড্রপের বিষয়ে বারবার নির্দেশনা দেওয়া স্বত্ত্বেও অপারেটরা তা মানছেন না। এ বছরটি হবে গ্রাহক সেবার মান উন্নয়নের বছর, কিন্তু বাস্তব অভিজ্ঞতা ভিন্ন কথা বলে। কিন্তু আমরা দেখছি গ্রাহক সেবার প্রতি উদাসীনতা।’

এ সময় তিনি তার ফেসবুক পেজে দেওয়া গ্রাহকদের বিভিন্ন ভোগান্তির কথা তুলে ধরেন।

এরপর দেড় ঘণ্টা রুদ্ধদ্বার বৈঠক শেষে আবার সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন তারানা হালিম।

নেটওয়ার্ক উন্নয়নে অপারেটরদের দুই চাওয়া

ডাক ও টেলিযোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী বলেছেন, ‘আমরা যেহেতু জনগণের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে মিশি, এজন্য জনগণের সুবিধা-অসুবিধাগুলো আমরা তাদের (অপারেটরদের) জানাব। তারা তাদের কোয়ালিটি অব সার্ভিস এনশিওর (সেবার মান উন্নয়ন নিশ্চিত) করবেন।’

কোয়ালিটি অব সার্ভিস এনশিওর করতে অপারেটররা দুটো প্রধান সমস্যার কথা জানিয়েছেন উল্লেখ করে তিনি বলেছেন, ‘তারা বলেছেন এখন ডাটা ডিমান্ড খুব বেশি। সেকারণে প্রচুর স্পেকট্রাম কমজাম্পশন হয়। ভয়েসের ক্ষেত্রে এ ব্যবহারটা একটু কম এবং কিছুটা ক্ষতিগ্রস্তও হচ্ছে। এ সমস্যা সমাধানে তারা দুটো সহযোগিতা চেয়েছেন। একটি হলো অবকাঠামোর অ্যাকটিভ শেয়ারিং (অপারেটরদের নিজেদের মধ্যে অবকাঠামো ভাগাভাগি), আরেকটি টেক নিউট্রালিটি (প্রযুক্তি নিরপেক্ষতা)। তারা বলেছেন এ দুটো বিষয় যদি আমার ‍নিশ্চিত করতে পারি তারা কোয়ালিটি অব সার্ভিস আরও ইম্প্রুভ করতে পারবেন।’

প্রতিমন্ত্রী বলেছেন, ‘বৈঠকে আমাদের সিদ্ধান্ত হচ্ছে, বিটিআরসিটিতে অ্যাকটিভ শেয়ারিং, আরেকটি টেক নিউট্রালিটির ব্যাপারে দ্রুত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে এ মাসের মধ্যে তা মন্ত্রণালয়ে পাঠাবে।’

তিনি আরো বলেছেন, ‘প্রমোশনাল এসএমএসগুলো যাতে রাত ১২টার পর ফজর নামাজ পর্যন্ত কোনো মতেই না যায়, সেভাবেই তারা বাল্কে পাঠাবেন। অপারেটররা বলেছেন প্যাকেজ বাস্তবায়ন করেছেন, আমরা এ বিষয়ে পুনর্নিদেশনা দিয়েছি যে গ্রাহক অ্যাপ্রুভ বা গ্রহণ করলেই কেবল প্যাকেজগুলো অ্যাকটিভেট করা হবে।’

কোনো প্যাকেজ গ্রাহকের ইচ্ছে মতো নবায়ন হবে নাকি স্বয়ংক্রিয়ভাবে নবায়ন হবে সে বিষয়ে দু’ধরনের মতামত পাওয়া গেছে জানিয়ে টেলিযোগযোগ প্রতিমন্ত্রী বলেছেন, ‘গণশুনানিতেও দুই ধরনের অভিমত ছিল। আমি অনুরোধ করবে বিটিআরসির মাধ্যমে যেটি পপুলার ডিমান্ড সেটি গ্রহণ করে সে অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’

বিদেশে মিস কল দিলে টাকা কাটা যায় গ্রাহকদের কাছ থেকে এমন অভিযোগ পাওয়া গেছে জানিয়ে তারানা বলেছেন, ‘অপারেটররা জানিয়েছেন, এ রকম হয়না, এটা টেকনিক্যালি সম্ভব নয়। আমরা বলেছি বিদেশে মিসকল হলে টাকা কাটা হবে না। এক্ষেত্রে বিটিআরসির কর্মকর্তারা সময়ে সময়ে বিদেশে মিসকল দিয়ে এ বিষয়টি পরীক্ষা করে দেখবেন। যদি টাকা কাটা হয় সে অনুযায়ী অপারেটরদের নির্দেশনা দেবে বিটিআরসি। গণশুনানিতে প্রাপ্ত তথ্য সমন্বিত করে মন্ত্রণালয়ে পাঠাবে। পরবর্তী সময়ে জনগণ কি চায় সেটিকে মাথায় রেখে অপারেটরদের যথোপযুক্ত নির্দেশনা দেবে।’

বৈঠকে টেলিযোগাযোগ বিভাগের সচিব মো. ফয়জুর রহমান চৌধুরী, গ্রামীণফোনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা পেটার-বি ফারবার্গ, বাংলালিংক-এর সিইও এবং এমডি এরিক অস, রবির ম্যানেজিং ডিরেক্টর অ্যান্ড সিইও মাহতাব উদ্দিন আহমেদ, টেলিটকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) গিয়াস উদ্দিন আহমেদসহ অপারেটরদের অন্যান্য শীর্ষ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

(দ্য রিপোর্ট/আরএমএম/জেডটি/জানুয়ারি ১৬, ২০১৭)

পাঠকের মতামত:

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

M

M

SMS Alert

এর সর্বশেষ খবর

- এর সব খবর