thereport24.com
ঢাকা, শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল 24, ৫ বৈশাখ ১৪৩১,  ১০ শাওয়াল 1445

কুয়াকাটায় স্বামীর পরকীয়ায় বাধা দেওয়ায় স্ত্রীকে নির্যাতন

২০১৭ জানুয়ারি ১৭ ১৯:০০:৫৩
কুয়াকাটায় স্বামীর পরকীয়ায় বাধা দেওয়ায় স্ত্রীকে নির্যাতন

কুয়াকাটা প্রতিনিধি : কন্যা সন্তান জন্ম নেওয়ার পর থেকেই স্বামীর নির্যাতনের মাত্রা বাড়তে থাকে। গত চার বছরে কতবার যে মারধর-নির্যাতন করা হয়েছে তা গৃহবধূ সোনিয়ার মনে নেই। শুধু মনে আছে স্বামীর নির্যাতনের প্রতি মুহূর্তের যন্ত্রণা। স্বামীর সংসারে টিকে থাকার জন্য অন্তত ১০ লাখ টাকা দিয়েছে সোনিয়ার বাবা গ্রাম্য ডাক্তার আব্দুর রশিদ মাতুব্বর। তারপরও পাষণ্ড স্বামী দন্ত্য চিকিৎসক হারুন-অর-রশীদের মন গলেনি।

সবশেষ সোমবার সন্ধ্যায় বেধড়ক লাঠিপেটা করা হয়। কিল-ঘুষি এবং গলা চেপে ধরে নির্যাতন করা হয়। এক পর্যায় অচেতন হয়ে পড়েন সোনিয়া। মারা গেছে ভেবে মুখে বিষ ঢেলে দেয় পাষণ্ড স্বামী।

পরে স্থানীয়দের সহায়তায় কলাপাড়া হাসপাতালে ভর্তি করা হয় সোনিয়াকে। সেখানের হাসপাতালের চিকিৎসকরা ওয়াশ করান। বর্তমানে সোনিয়া কলাপাড়া হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে। এ ঘটনার জন্য কোন অনুশোচনা তো দূরের কথা উল্টো আল্টিমেটাম দেওয়া হয়েছে সোনিয়াকে। তাকে স্বামীর সংসার করতে হলে মুচলেকা দিয়ে যেতে হবে। সোনিয়া ও ভাইদের হুমকি দেওয়া হচ্ছে এ নিয়ে যেন বাড়াবাড়ি না করে। স্বামী হারুন-অর-রশীদের বাড়ি মহিপুর থানার মহিপুর সদর ইউনিয়নের বিপিনপুর গ্রামে।

সোনিয়ার মা ফাতেমা বেগম জানান, তার একমাত্র মেয়ে সোনিয়াকে হারুনের সঙ্গে ২০১১ সালের ৮ নভেম্বর বিয়ে দেন। বিয়ের সময় মেয়ে-জামাইকে সবকিছু দিয়ে দেন। বিয়ের পরে কিছুদিন ভালোই ছিল। সোনিয়ার কোলজুড়ে চার বছর আগে জন্ম নেয় কন্যাসন্তান ইসরাত জাহান জেবা। জন্মের দিন থেকেই শুরু সোনিয়ার প্রতি নানান মানসিক ও শারীরিক নির্যাতন। এরপরও মেয়ে-জামাইয়ের সুখের চিন্তা করে বিভিন্ন সময়ে নগদ টাকাসহ বিভিন্ন ধরনের সহায়তা করে আসছিলেন তারা।

সোনিয়ার ভাই কুয়াকাটা কানাবাদ কলেজের প্রভাষক আরিফুল ইসলাম জানান, একমাত্র বোনের সুখের চিন্তা করে বোন এবং বোন-জামাই হারুন-অর-রশীদকে অন্তত দশ লাখ টাকা দিয়েছেন। এরপরও নানান ছল-ছুতোয় যৌতুকের অজুহাত তুলে মারধর করা রেওয়াজে পরিণত হয়েছে। এমনকি জেবার জন্মের পরে তাকে নিয়ে তার মা মিশ্রিপাড়া গ্রামের বাড়িতে লালন-পালন করছেন। কন্যা সন্তানকে পর্যন্ত আদর-সোহাগ করতো না হারুন।

সোনিয়া জানান, তার স্বামীর সঙ্গে কারও পরকীয়া রয়েছে বলে তার দৃঢ় বিশ্বাস। প্রায় সময় বাড়ির ছাদে উঠে মোবাইলে কথা বলতো। এসব জিজ্ঞাসা করতেই তার ওপর চরম নির্যাতন নেমে আসে। সবশেষ মারধর শেষে হত্যার চেষ্টা চালায়।

এ ব্যাপারে স্বামী হারুন-অর-রশীদ জানান, স্ত্রীকে কখনোই তিনি মারধর করেননি। যৌতুকসহ পরকীয়ার অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা, বানোয়াট। যৌতুকের জন্য কোন টাকা নেননি। উল্টো সোনিয়ার বাবা-ভাইদের কাছে তিনি নয় লাখ ৯০ হাজার টাকা পাবেন। এর সকল প্রমাণ আছে বলেও তিনি দাবি করেন।

এ প্রসঙ্গে কলাপাড়া ওয়ানস্টপ ক্রাইসিস সেল-এর প্রোগ্রাম অফিসার মো. ইদ্রিস আলম জানান, আমরা ভিকটিমের চিকিৎসা সহায়তাসহ আইনি সহায়তা দেওয়ার জন্য উদ্যোগ গ্রহণ করেছি।

কলাপাড়া হাসপাতালের চিকিৎসক ডা. কামরুজ্জামান জানান, সোনিয়ার মুখে খানিকটা বিষ ছিল, খায়নি। চিকিৎসা দেওয়ার পরে সুস্থ হয়ে উঠেছে।

(দ্য রিপোর্ট/এপি/এনআই/জানুয়ারি ১৭, ২০১৭)

পাঠকের মতামত:

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

M

M

SMS Alert

এর সর্বশেষ খবর

- এর সব খবর