thereport24.com
ঢাকা, শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল 24, ৬ বৈশাখ ১৪৩১,  ১০ শাওয়াল 1445

নতুন জায়গার খোঁজে সবুজ চোখের সেই আফগানি নারী

২০১৭ জানুয়ারি ১৮ ১০:০২:৪৩
নতুন জায়গার খোঁজে সবুজ চোখের সেই আফগানি নারী

দ্য রিপোর্ট ডেস্ক : কম বয়সে ন্যাশনাল জিওগ্রাফিকের প্রচ্ছদকন্যা হয়ে খ্যাতি পাওয়া সবুজ চোখের অধিকারিণী শরবত গুলা পাকিস্তান থেকে বহিষ্কৃত হওয়ার পর নতুন জায়গায় নতুন করে জীবন শুরু করার আশায় আছেন।

পাঁচ বছর বয়সী ছেলে এবং আর তিন মেয়েকে নিয়ে তিনি এখন আফগানিস্তানের কাবুলে বসবাস করছেন। বহু বছর ধরে কষ্ট করার পর তিনি এখন চাইছেন একটি স্বাভাবিক, সুন্দর জীবন পেতে।

বিবিসিকে দেওয়া এক একান্ত সাক্ষাৎকারে এসব জানান শরবত গুলা।

দশ বছর বয়সে তার তোলা একটি ছবি যুদ্ধপীড়িত আফগান শরণার্থীদের আইকন হয়ে দাঁড়ায়। এর আগে একবারই গণমাধ্যমে কথা বলেছিলেন তিনি।

স্টিভ ম্যাককারি, যিনি তার দশ বছর বয়সের ছবিটি তুলেছিলেন, তিনিই তাকে খুঁজে বের করেন এবং ২০০২ সালে একটি প্রামাণ্যচিত্রে তার সাক্ষাৎকার নেন।

১৭ বছর ধরে যে বিশ্বজুড়ে শরবত গুলার ছবি কতটা বিখ্যাত ছিল সে সম্পর্কে তার কোনো ধারণাই ছিল না। অনেক আফগান যুদ্ধপীড়িতের মতো শরবত গুলাও পাকিস্তানে আশ্রয় চান এবং বসবাস করেন। কিন্তু গত বছর পাকিস্তানি কর্তৃপক্ষ তাকে ধরে জেলে পাঠায়, কারণ তার কাগজপত্র ‘অবৈধ’ ছিল। পরে তাকে কারাগার থেকে মুক্তি দিয়ে আফগানিস্তানে পাঠিয়ে দেয় পাকিস্তান।

কাবুলের এক সাময়িক বাসস্থানে বসে শরবত গুলা বিবিসিকে বলেন, ‘সেখানে ভালো সময় কেটেছে আমাদের, ভালো প্রতিবেশী ছিল, পশতু ভাইদের সঙ্গেই বাস করতাম আমরা। আমি কখনো আশা করিনি, শেষমেশ এই আচরণ আমার সঙ্গে করবে পাকিস্তান কর্তৃপক্ষ।’

মধ্য চল্লিশের শরবত গুলা এখন অসুস্থ ও দুর্বল। কিন্তু তার সবুজ চোখ এখনো তীক্ষ্ণ। সেই চোখে রয়েছে একই সঙ্গে ভয় এবং আশা।

পাকিস্তানে পুলিশের হাতে ধরা পড়ার আগেই তিনি আশঙ্কা করছিলেন, তিনি হয়তো সে দেশে আর থাকতে পারবেন না। এজন্য বাড়িটি বিক্রি করে দেন তিনি। দেশ ছাড়ার ঠিক দুদিন আগে তার বাড়িতে পুলিশ হানা দেয়।

তিনি বলেন, ‘আমি পুলিশকে বলেছিলাম, এই আইডি কার্ডটি আমি বানিয়েছি বাচ্চাদের লেখাপড়া করাতে আর আমার বাড়িটি বিক্রি করার জন্য। আইডি ছাড়া এর কোনোটিই সম্ভব নয় পাকিস্তানে।’

তাকে দুই সপ্তাহের কারাদণ্ড ভোগ করতে হয়। এর এক সপ্তাহ তিনি ছিলেন কারাগারে। আরেক সপ্তাহ ছিলেন কারা হাসপাতালে। তার হেপাটাইটিস ‘সি’ হয়েছিল। ‘এটা ছিল আমার জীবনের কঠিন এবং দুঃসহ এক ঘটনা,’- বলছিলেন শরবত গুলা।

তাকে আটকে রেখে কী পরিমাণ বদনাম হয়েছে সেটা বুঝতে পেরে শরবত গুলাকে পরে পাকিস্তানে থেকে যাওয়ার প্রস্তাব দেয় কর্তৃপক্ষ। কিন্তু তিনি প্রত্যাখ্যান করেন।

শরবত গুলার স্বামী ও বড় মেয়ে মারা গেছে, তাদের কবর রয়েছে পেশোয়ারে। পাকিস্তানের সরকার দেশটিতে বসবাস করা কুড়ি লাখ আফগানকে চলে যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছে।

‘আফগান গার্ল’ শিরোনামের ছবিটি তোলা হয় ১৯৮৪ সালে, স্টিভ ম্যাককারি পেশোয়ারের এক শরণার্থী শিবিরের কাছ থেকে দশ বছরের শরবত গুলার ছবিটি তোলেন। তিনি সে সময়ে তাঁবুতে পরিচালিত শরণার্থীদের এক স্কুলে পড়তেন। শরবত গুলার কোনো ছেলে-মেয়ের চোখের রংই মায়ের মতো নয়। তবে তার নানির চোখ ঠিক একই রকম ছিল, তিনি জানান।

(দ্য রিপোর্ট/এআরই/এনআই/এম/জানুয়ারি ১৮, ২০১৭)

পাঠকের মতামত:

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

M

M

SMS Alert

এর সর্বশেষ খবর

- এর সব খবর