thereport24.com
ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল 24, ৫ বৈশাখ ১৪৩১,  ৯ শাওয়াল 1445

মানবপাচার দমনে হচ্ছে সংস্থা, প্রতিরোধে তহবিল

২০১৭ জানুয়ারি ১৯ ২১:৩৫:১৮
মানবপাচার দমনে হচ্ছে সংস্থা, প্রতিরোধে তহবিল

মানবপাচার দমনে একটি জাতীয় সংস্থা ও মানবপাচার প্রতিরোধে একটি তহবিল গঠন করতে যাচ্ছে সরকার।

সংস্থা ও তহবিল গঠনের জন্য স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় দুটি বিধিমালা প্রণয়ন করেছে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে গত ১২ জানুয়ারি ‘জাতীয় মানবপাচার দমন সংস্থা বিধিমালা, ২০১৭’ ও ‘মানবপাচার প্রতিরোধ তহবিল বিধিমালা, ২০১৭’ জারি করা হয়েছে।

দারিদ্র্যতার কারণে বাংলাদেশে হরহামেশাই মানবপাচারের ঘটনা ঘটছে। বৃহস্পতিবারও (১৯ জানুয়ারি) রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা থেকে আন্তর্জাতিক মানবপাচার চক্রের সন্দেহভাজন ১৫ সদস্যকে গ্রেফতারের কথা জানিয়েছে র‍্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‍্যাব)।

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা জানান, ২০১২ সালে মানবপাচার প্রতিরোধ ও দমন আইন করা হলেও সহায়ক নানান কিছুর অভাবে এটি পুরোপুরি বাস্তবায়ন করা যাচ্ছে না। দমন সংস্থা ও এ সংক্রান্ত তহবিল গঠিত হলে আইনটি কঠোরভাবে বাস্তবায়ন করা যাবে।

‘মানবপাচার প্রতিরোধ ও দমন আইন, ২০১২’ অনুযায়ী এ সংস্থা ও তহবিল গঠন করা হচ্ছে।

এ বিষয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের (যদিও বৃহস্পতিবার দুটি বিভাগ করা হয়েছে) সচিব মো. কামাল উদ্দিন আহমেদ দ্য রিপোর্ট টুয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, ‘মানবপাচার প্রতিরোধ ও দমন আইনে এ বিষয়গুলো রয়েছে। আইনটি আমরা বেশ আগে করেছি। ধীরে ধীরে এটি বাস্তবায়ন হচ্ছে। এ উদ্যোগ মানবপাচার প্রতিরোধ কার্যক্রমকে আরও বেগবান করবে।’

তহবিলের অর্থ দিয়ে সরকার সংস্থার মাধ্যমে মানবপাচারের শিকার ব্যক্তি বা ভিকটিমসহ সংশ্লিষ্টদের আর্থিক সহায়তা দিতে পারবে বলে তহবিল বিধিমালায় বলা হয়েছে। তহবিলের পরিচালনা ও ব্যবস্থাপনার দায়িত্বে থাকবে জাতীয় মানবপাচার দমন সংস্থা।

জাতীয় মানবপাচার দমন সংস্থা বিধিমালা অনুযায়ী, জাতীয় মানবপাচার দমন সংস্থা’র চেয়ারম্যান হবেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মনোনীত কমপক্ষে যুগ্ম-সচিব পদমর্যাদার একজন কর্মকর্তা।

এছাড়া বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও সংস্থার মনোনীত ১১ জন সংস্থায় সদস্য হিসেবে থাকবেন। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মনোনীত কমপক্ষে উপসচিব পদমর্যাদার একজন কর্মকর্তা সংস্থায় সাচিবিক দায়িত্ব পালন করবেন।

চেয়ারম্যান সংস্থার প্রধান নির্বাহী হবেন। সরকারের নির্দিষ্ট করে দেওয়া স্থানে এবং অনুমোদিত পদ্ধতিতে সংস্থার কার্যক্রম পরিচালিত হবে বলে বিধিমালায় বলা হয়েছেল।

যা করবে মানবপাচার দমন সংস্থা

বিধিমালায় বলা হয়েছে, সংস্থা মানবপাচার প্রতিরোধ, দমন এবং পাচারের শিকার ব্যক্তি বা ভিকটিমকে চিহ্নিতকরণ এবং তাদের পুনর্বাসন ও সুরক্ষায় যথাযথ ব্যবস্থা নেবে।

মানবপাচার প্রতিরোধ ও দমনে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীসহ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন বেসরকারি সংস্থার সঙ্গে সমন্বয় সাধন, মানবপাচারের শিকার ব্যক্তি বা ভিকটিমকে সহায়তা বা সেবা প্রদানকারী বেসরকারি সংস্থার কার্যক্রম পরিদর্শন ও তদারকি করবে সংস্থা। প্রয়োজনে নির্দেশনা, পরামর্শ ও সহায়তা দেবে।

সংস্থা মানবপাচারের শিকার ব্যক্তিদের সহায়তা বা সেবা দেওয়া সরকারি সংস্থার কার্যক্রম ও সেবার বিবরণ সংবলিত প্রতিবেদন গ্রহণ ও মূল্যায়ন করবে।

আইনের অধীনে প্রতিষ্ঠিত আশ্রয় কেন্দ্র বা পুনর্বাসন কেন্দ্র পরিদর্শন, কোন আশ্রয় কেন্দ্র কিংবা পুনর্বাসন কেন্দ্রে অবস্থানরত মানবপাচারের শিকার ব্যক্তিদের স্বাস্থ্যসেবা, জীবনযাত্রার মান নির্ধারণ, বাস্তবায়ন, তদারকি করবে জাতীয় মানবপাচার দমন সংস্থা। একই সঙ্গে এ বিষয়ে সরকারকে প্রতিবেদনও দেবে।

ভিন্ন কোন দেশে পাচারের শিকার বা ভিকটিম কোন বাংলাদেশী নাগরিককে বাংলাদেশে ফিরিয়ে আনতে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় বা ওই দেশে বাংলাদেশ দূতাবাসের সঙ্গে নিবিড় যোগাযোগ রক্ষা এবং প্রয়োজনীয় সহযোগিতা দেবে নতুন সংস্থা। মানবপাচারের শিকার ব্যক্তিদের উদ্ধার, প্রত্যাবাসন, পুনর্বাসন, সুরক্ষার বিষয়ে একটি তথ্যভাণ্ডার করাও সংস্থার কাজ।

বিধিমালায় আরও বলা হয়েছে, মানবপাচার প্রতিরোধে জনসচেতনতা সৃষ্টি, সীমান্তবর্তী প্রত্যেক বিভাগ, জেলা, উপজেলায় পর্যায়ক্রমে মানবপাচারের শিকার ব্যক্তিদের পুনর্বাসনের উপযোগী প্রতিষ্ঠান বা কেন্দ্র প্রতিষ্ঠা করবে দমন সংস্থা।

মানবপাচারের শিকার ব্যক্তিকে ক্ষতিপূরণ, আইনি সহায়তা এবং আনুষঙ্গিক অন্যান্য সুবিধাদি দেওয়াও হবে সংস্থার অন্যতম কাজ।

বিধিমালা অনুযায়ী চেয়ারম্যান প্রতি বছরের ৩০ সেপ্টেম্বরের মধ্যে সংস্থার সম্পাদিত কার্যাবলী, আয়-ব্যয় এবং ভবিষ্যৎ কর্মপরিকল্পনা, সুপারিশ, ইত্যাদির বিবরণ সম্বলিত একটি বার্ষিক প্রতিবেদন সরকারের কাছে দেবে।

(দ্য রিপোর্ট/আরএমএম/এপি/জানুয়ারি ১৯, ২০১৭)

পাঠকের মতামত:

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

M

M

SMS Alert

এর সর্বশেষ খবর

- এর সব খবর