thereport24.com
ঢাকা, শনিবার, ২০ এপ্রিল 24, ৭ বৈশাখ ১৪৩১,  ১১ শাওয়াল 1445

রাষ্ট্রের কোনো ধর্ম থাকতে পারে না : অজয় রায়

২০১৭ জানুয়ারি ২০ ২১:২৭:৩৭
রাষ্ট্রের কোনো ধর্ম থাকতে পারে না : অজয় রায়

দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক : অধ্যাপক অজয় রায় বলেছেন, রাষ্ট্রের কোনো ধর্ম থাকতে পারে না। গণতন্ত্রের সেক্যুলার দিক মনে রেখে সকলকে মৌলবাদের হাত থেকে রক্ষা পাওয়ার কৌশল রপ্ত করতে হবে। মৌলবাদীরা যেমন আমাদের টার্গেট করছে, তেমনি আসুন আমরাও ওদের টার্গেট করি। ওদের ধরিয়ে দেই।

জাতীয় প্রেস ক্লাবের ভিআইপি লাউঞ্জে শুক্রবার বিশিষ্ট রাজনীতিক, লেখক, সাংবাদিক ও মুক্তিযোদ্ধা নির্মল সেনের ৪র্থ মৃত্যুবার্ষিকীর আলোচনাসভায় তিনি এসব কথা বলেন। নির্মল সেন স্মরণ জাতীয় কমিটি এ আলোচনাসভার আয়োজন করে।

অজয় রায় বলেন, দেশে গণতন্ত্রের অর্থ হারিয়ে গেছে। এই অবস্থা মোকাবেলায় নতুন প্রজন্মকে নির্মল সেনের আদর্শ ধারণ করতে হবে। নির্মল সেনের দর্শন, আদর্শ ও নিষ্ঠা ছিল। ব্যক্তি, সাংবাদিক ও রাজনৈতিক মহলের নির্মল সেনকে মনে রাখতে হবে। সময়ের প্রয়োজনে আজ অনেক নির্মল সেনকে দরকার।

নির্মল সেনের দীর্ঘজীবনের সঙ্গী অজয় রায় অতীতের স্মৃতিচারণ করে বলেন, সামর্থ্যের অভাবে জীবনের শেষ দিনগুলোতে নির্মল সেনের ইচ্ছা পূরণ করে তাকে ঢাকায় রাখা যায়নি। তাকে থাকতে হয়েছিল কোটালিপাড়ায়। তার আহ্বানে সাড়া দিয়ে আমার আর কোটালিপাড়ায় যাওয়া হয়নি। এই দুঃখ আমাকে আজও তাড়িয়ে বেড়ায়।

তিনি বলেন, দৃঢ়চেতা নির্মল সেন রাজনৈতিক, সামাজিক ও সাংবাদিক হিসেবে ছিলেন অনুকরণীয়। রাজনৈতিক ও সমসাময়িক বিশ্লেষণ নিয়ে তার লেখা ছিল সকলের কাছেই প্রিয়।

বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি মনজুরুল আহসান বুলবুল বলেন- নির্মল সেনকে নিয়ে আসলে এমন একটি অনুষ্ঠান করলে তার সব দিক তুলে ধরা যাবে না। কারণ তিনি ছিলেন বহুমাত্রিক গুণের অধিকারী। তিনি আতাউস সামাদের মতো রিপোর্টিং করে পরিচিতি পাননি। তিনি সহ-সম্পাদক ও সহকারী সম্পাদক হিসেবে সমসাময়িক নানা বিষয় নিয়ে কলাম লিখতেন। কিন্তু তার সেই লেখা সংবাদের চেয়ে ক্ষুরধার হয়ে উঠতো। তার সমসাময়িক এমন একজন সাংবাদিকদের নাম আমি বলতে পারবো না যে তার গুলশান বারিধারায় প্লট বা ফ্ল্যাট নেই। কিন্তু নির্মল দার সেটা ছিল না।

তিনি আরও বলেন-সাংবাদিকদের ঐক্যের প্রশ্নে তার নিরলস চেষ্টা প্রশ্নাতীত। এটা মানতেই হবে, আমরা তার সেই দেখানো পথে হাঁটতে ব্যর্থ। আমাদের আসলে ডানা ভারি হয়ে গেছে। তাই ভারি ডানা নিয়ে আমরা আসল সত্যকে বলতে পারছি না।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সঙ্গে নির্মল সেনের সম্পর্কের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন- বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান তখন প্রধানমন্ত্রী। নির্মল দা সরকারি পত্রিকা দৈনিক বাংলায় চাকরি করেও সরকারের বিরুদ্ধে লিখতেন। একবার তার লেখা ছাপানো বন্ধ হলো। তিনি তখন চট্টগ্রামে। চট্টগ্রাম থেকে ফিরে তিনি সরাসরি বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে দেখা করে বললেন-আপনি আমার লেখা বন্ধ করতে বলেছেন কেন? পারস্পরিক সম্পর্ক বজায় রেখেও যে সমালোচনা করা যায়, সেটা নির্মল দা চোখে আঙুল দিয়ে আমাদের দেখিয়েছেন।

আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন তেল-গ্যাস ও বিদ্যুৎ-বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটির সদস্য সচিব অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আবু জাফর, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক, সংযুক্ত শ্রমিক ফেডারেশনের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মোসাদ্দেক হোসেন স্বপন, সাধারণ সম্পাদক মোকাদ্দেম হোসেন প্রমুখ। সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের সদস্য সচিব অধ্যাপক ইসমত এনামুল হক।

অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ বলেন, অস্বীকার করার সংস্কৃতি এই সরকারের বড় বৈশিষ্ট্যে পরিণত হয়েছে। দেশে দশ টাকা চুরি করলে তার বিচার হয়, কিন্তু হাজার হাজার কোটি টাকা চুরি করলে ভিআইপি ও সিআইপি হওয়া যায়। এখানে চোরাই টাকার আধিপত্য যতদিন থাকবে ততোদিন ধর্ম নিয়ে খেলা হবে। রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় দেশে মৌলবাদী ও সাম্প্রদায়িক শক্তির উত্থান হয়েছে।

(দ্য রিপোর্ট/এমএম/এপি/এনআই/জানুয়ারি ২০, ২০১৭)

পাঠকের মতামত:

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

M

M

SMS Alert

এর সর্বশেষ খবর

- এর সব খবর