thereport24.com
ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ 24, ১৪ চৈত্র ১৪৩০,  ১৮ রমজান 1445

মানবতাবিরোধী অপরাধ

বাগেরহাটের ১৪ জনের বিরুদ্ধে সাত অভিযোগ

২০১৭ জানুয়ারি ২২ ১৫:১৯:০৫
বাগেরহাটের ১৪ জনের বিরুদ্ধে সাত অভিযোগ

দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক : মুক্তিযুদ্ধকালে মানবতাবিরোধী অপরাধের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে বাগেরহাটের ১৪ জনের বিরুদ্ধে তদন্ত প্রতিবেদন দিয়েছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থা। রবিবার (২২ জানুয়ারি) ধানমণ্ডিতে তদন্ত সংস্থার কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এই প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়। আসামিদের বিরুদ্ধে ৭টি অভিযোগ আনা হয়েছে।

আসামিরা হলেন- বাগেরহাটের খাঁন আশরাফ আলী (৬৫), খাঁন আক্রাম হোসেন (৬০), সূলতান আলী খাঁন (৬৮), রুস্তম আলী মোল্লা (৭০), ইদ্রিস আলী মোল্লা (৬৪), মকছেদ আলী দিদার (৮৩), শেখ মো. উকিল উদ্দিন (৬২), শেখ ইদ্রিস আলী (৬১), শেখ রফিকুল ইসলাম ওরফে বাবুল (৬৪), মো. মনিরুজ্জামান হাওলাদার (৬৯), মো. হাশেম আলী শেখ (৭৯), মো. আজাহার আলী শিকদার (৬৪), মো. মকবুল মোল্লা (৭৯), মো. আব্দুল আলী মোল্লা (৬৫)। আসামিদের মধ্যে আজহার আলী শিকদার শুধু বিএনপি সমর্থক। বাকি সবাই জামায়াত সমর্থক।

আসামিদের বিরুদ্ধে ২০১৬ সালের ১৬ জুলাই গ্রেফতারী পরোয়ানা জারি করেন। পরে একই বছর ২৬ খাঁন আকরাম হোসেন, ইদ্রিস আলী মোল্লা, শেখ মো. উকিল উদ্দিন এবং মকবুল মোল্লাকে গ্রেফতার করে ট্রাইব্যুনালে উপস্থাপন করা হয়। এই চার আসামি জেলহাজতে আছেন। বাকি ১০ আসামি পলাতক।

এটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের ৪৫ তম তদন্ত প্রতিবেদন। আসামিদের বিরুদ্ধে ২০১৫ সালের ৪ জুন তদন্ত শুরু হয়। দুই বছরের বেশি সময় ধরে ৫৭ জন ঘটনার সাক্ষী, ১ জন তদন্তকারী কর্মকর্তা এবং ৩ জন জব্দ তালিকার সাক্ষীর জবানবন্দির প্রেক্ষিতে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দেওয়া হয়।

আসামিদের বিরুদ্ধে বাগেরহাট জেলার কচুয়া ও মোড়লগঞ্জ থানার বিভিন্ন এলাকায় অবৈধ আটক, নির্যাতন, অপহরণ, লুন্ঠন, অগ্নিসংযোগে ধ্বংস করা, ধর্ষণ ও হত্যার মতো ৭টি অভিযোগ আনা হয়েছে। অপরাধ তদন্ত করেন তদন্ত সংস্থার সদস্য মো. হেলাল উদ্দিন।

আসামিদের বিরুদ্ধে ৭ অভিযোগ : ১. বাগেরহাট জেলার মোড়লগঞ্জ থানাধীন চাপড়ী ও তেলিগাতীতে নিরীহ নিরস্ত্র মুক্তিকামী মানুষদের উপর অবৈধভাবে হামলা চালিয়ে ৪০/৫০টি বাড়ীর সমস্ত মালামাল লুণ্ঠন, অগ্নিসংযোগ এবং ১০ জন নিরীহ মানুষকে গুলি করে হত্যা।

২. কচুয়া থানাধীন হাজরাখালী ও বৈখালী রামনগরে হামলা চালিয়ে অবৈধভাবে ৪ জনকে আটক ও অপহরণ করে আবাদের খালের ব্রিজে হত্যার পর লাশ খালে ফেলে দেওয়া হয়।

৩. মোড়লগঞ্জ থানাধীন ঢুলিগাতী গ্রামে হামলা চালিয়ে দুজনকে আটক, নির্যাতন ও গুলি করে হত্যা।

৪.কচুয়া থানাধীন বিলকুল ও বিছট গ্রামে হামলা চালিয়ে ৪ জনকে আটক ও অপহরণ করে কাঠালতলা ব্রিজে এনে নির্যাতন করার পর গুলি করে হত্যা করে লাশ নদীতে ফেলে দেওয়া হয়।

৫. কচুয়া থানাধীন বিলকুল গ্রাম হতে নিরস্ত্র মুক্তিযোদ্ধা মুনসুর আলী নকীবকে অন্যায় আটক ও অপহরণ করে মোড়লগঞ্জ থানার দৈবজ্ঞহাটির গরুর হাটির ব্রিজের উপরে নিয়ে নির্যাতন করার পর গুলি করে হত্যা।

৬. কচুয়া থানাধীন উদানখালী গ্রামে হামলা চালিয়ে স্বাধীনতার পক্ষের নিরীহ নিরস্ত্র উকিল উদ্দিন মাঝিকে অবৈধভাবে আটক করে হত্যা করে এবং তাঁর মেয়ে তাসলিমাকে অবৈধভাবে আটক ও অপহরণ করে কচুয়া রাজাকার ক্যাম্পে নিয়ে আসে। তাসলিমাসহ ৪ (চার) জনকে দীর্ঘদিন আটকে রেখে পালাক্রমে ধর্ষণ করে আসামিরা। পরে মুক্তিযোদ্ধারা রাজাকার ক্যাম্প তল্লাশী করে তাসলিমাকে উদ্ধার করে তাঁর বাড়ীতে পৌছে দেন।

৭. কচুয়া থানাধীন গজালিয়া বাজারে হামলা চালিয়ে হিন্দু সম্প্রদায়ের নিরীহ নিরস্ত্র শ্রীধাম কর্মকার ও তাঁর স্ত্রী কমলা রানী কর্মকারকে অবৈধভাবে আটক করে নির্যাতন করা হয়। আসামিরার শ্রীধাম কর্মকারকে হত্যা করে কমলা রানী কর্মকারকে জোর পূবক অপহরণ করে কচুয়া রাজাকার ক্যাম্পে এনে আটকে রাখে। আসামিরা কচুয়া রাজাকার ক্যাম্প ও আশে পাশের কমলা রানী কর্মকারসহ আটককৃত অন্য চারজনকে দীর্ঘদিন রাজাকার ক্যাম্পে আটকিয়ে রেখে পালাক্রমে ধর্ষণ করে। প্রায় এক মাস শারীরিক নির্যাতনের পর কমলা রানী কর্মকার অসুস্থ হয়ে পড়লে হাসপাতালে ভর্তি করা হয় এবং তিনি সেখান থেকে পালিয়ে যান।

(দ্য রিপোর্ট/কেআই/এআরই/জানুয়ারি ২২, ২০১৭)

পাঠকের মতামত:

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

M

M

SMS Alert

এর সর্বশেষ খবর

- এর সব খবর