গাজীপুরে ৩ ভাই ও ভগ্নিপতির যাবজ্জীবন

গাজীপুর প্রতিনিধি : গাজীপুরে হত্যা মামলায় ৩ ভাই ও ভগ্নিপতিকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে প্রত্যেককে ১০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড ও অনাদায়ে তিন মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।

সোমবার (২৩ জানুয়ারি) দুপুরে গাজীপুরের অতিরিক্ত দায়রা জজ ২য় আদালতের বিচারক ইকবাল হোসেন এ রায় প্রদান করেন।

দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন- গাজীপুর জেলার কালীগঞ্জ থানার রামচন্দ্রপুর গ্রামের সোবহানের ছেলে মাসুদ, সানাউল্লাহ, নূরে আলম উরফে ময়না ও তাদের ভগ্নিপতি বরিশালের কোতোয়ালি থানার হরিণাফুলিয়া গ্রামের গণি শিকদারের ছেলে আনোয়ার শিকদার। রায় ঘোষণাকালে নূরে আলম ওরফে ময়না উপস্থিত থাকলেও অপর তিন আসামি পলাতক রয়েছে।

গাজীপুর আদালতের আইনজীবী হাফিজ উল্লা দরজী জানান, পূর্ব শত্রুতার জের ধরে ২০০৪ সালে ১৫ এপ্রিল বিকেলে কালীগঞ্জে রামচন্দ্রপুর এলাকার শামসুল হক দর্জিকে বাড়ি থেকে ডেকে বাইরে নিয়ে যায় মাসুদ ও তার ভাই সানাউল্লাহ। একপর্যায়ে তাদের হাতে থাকা লাঠি দিয়ে শামসুল হককে মারধর করে। পূর্বে সেখানে থাকা নুরে আলম ওরফে ময়না ও তার ভগ্নিপতি আনোয়ার শিকদারও শামসুল হক দর্জিকে এলোপাতাড়ি মারধর করে। এ সময় মাসুদের হাতে থাকা ছুরি দিয়ে শামসুল হকের বুকে আঘাত করে। আহত শামসুল হকের চিৎকার শুনে তার স্ত্রী হাফেজা বেগম ঘটনাস্থলে ছুটে এসে চিৎকার করতে থাকেন। চিৎকার শুনে আশপাশের লোকজন ছুটে এলে শামসুল হককে রক্তাক্ত আহতাবস্থায় ফেলে রেখে হামলাকারীরা পালিয়ে যায়। পরে এলাকাবাসী গুরুতর আহতাবস্থায় শামসুলকে উদ্ধার করে কালীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক শামসুল হক দর্জিকে মৃত ঘোষণা করেন।

পরদিন নিহতের স্ত্রী হাফেজা বেগম বাদি হয়ে ওই ৪ জনকে আসামি করে কালীগঞ্জ থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই আবু বকর সিদ্দিক তদন্ত শেষে ওই বছরের ১০ অক্টোবর ওই ৪ জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন। দীর্ঘ শুনানি শেষে ঘটনার ১৩ বছর পর সোমবার আদালত এ রায় প্রদান করেন। মামলায় ১৩ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ করা হয়।

রাষ্ট্রপক্ষের মামলা পরিচালনা করেন অ্যাডভোকেট হাফিজ উল্লা দরজী এবং আসামিপক্ষের মামলা পরিচালনা করেন অ্যাডভোকেট সুলতান উদ্দিন।

(দ্য রিপোর্ট/এমএইচএ/এপি/জানুয়ারি ২৩, ২০১৭)