thereport24.com
ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল 24, ১২ বৈশাখ ১৪৩১,  ১৬ শাওয়াল 1445

‘ছেলেকে বাসার বাইরে রেখেছেন বিচারপতি রুহুল আমীন’

২০১৭ জানুয়ারি ২৩ ২১:১৬:৪৬
‘ছেলেকে বাসার বাইরে রেখেছেন বিচারপতি রুহুল আমীন’

দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক : ছেলে সুপ্রিম কোর্টে আইনজীবী হিসেবে প্র্যাকটিস করাকালীন বাবা হন প্রধান বিচারপতি । কিন্তু এ নিয়ে যাতে কোনো প্রশ্ন না ওঠে সেজন্য ছেলেকে পর্যন্ত নিজ বাসায় রাখেননি। এমন বিরল দৃষ্টান্ত রেখে গেছেন সদ্যপ্রয়াত সাবেক প্রধান বিচারপতি এমএম রুহুল আমীন। তার স্মরণসভায় সে কথাই উল্লেখ করলেন বর্তমান প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার (এসকে) সিনহা।

সুপ্রিম কোর্ট অডিটরিয়ামে সোমবার (২৩ জানুয়ারি) প্রয়াত সাবেক প্রধান বিচারপতি এম এম রুহুল আমীনসহ প্রয়াত তিন বিচারপতির স্মরণে আয়োজিত শোকসভায় বক্তব্য প্রদানকালে প্রধান বিচারপতি এ দৃষ্টান্ত তুলে ধরেন।

গত ১৭ জানুয়ারি সিঙ্গাপুর জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সাবেক প্রধান বিচারপতি এম এম রুহুল আমীন ইন্তেকাল করেন। এর আগে আপিল বিভাগের বিচারপতি মোহাম্মদ বজলুর রহমান বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গত ১ ডিসেম্বর মারা যান। আর হাইকোর্টের বিচারপতি জে এন দেব চৌধুরী ১৫ ডিসেম্বর রাজধানীর স্কয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। এই তিন বিচারপতির স্মরণেই সুপ্রিম কোর্ট জাজেস কর্নার এ সভার আয়োজন করে।

এতে প্রধান বিচারপতি এস কে সিনহা বলেন, ‘উনার (বিচারপতি রুহুল আমীন) ছেলে প্র্যাকটিসে (আইন পেশায়) আছে। আমরা কোনোদিন আকারে ইঙ্গিতে এটা বিচারপতি রুহুল আমীনকে বুঝতে দিইনি। আমরা বলিনি উনি ছেলে ফেভার বা ডিসফেভার করছেন। কিন্তু তার ছেলেকে বাসা থেকে আলাদা করেছেন।

তিনি আরও বলেন, ‘বিচারপতি রুহুল আমীন একজন প্রকৃত ভদ্রলোক। আমরাতো অযথা রেগে যাই। তিনি কখনো বিরক্তি প্রকাশ করেননি। অনেককে দেখেছি বিরক্তি প্রকাশ করতে। আমার জানামতে তার মধ্যে একজন বিচারপতির সবগুণাবলী ছিলো।’

বিচারপতি বজলুর রহমানের বিষয়ে প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘ছাত্রজীবনে সবার জন্য সবকিছু করেছেন। ছাত্রদের জন্য সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন। কিন্তু নিজের জন্য পরিবারের জন্য কিছু রেখে যাননি। শুধু সবার জন্য করেছেন বিচারপতি বজলুর রহমান।

বিচারপতির জে এন দেব চৌধুরীর বিষয়ে বিচারপতি এস কে সিনহা বলেন, ‘আমার জানা মতে তার পবিারের মধ্যে কেউ জজ ছিলেন না। আমি বলবো (তার মৃত্যুতে) বিচার বিভাগ ক্ষতিগ্রস্ত হলো। এখন আজকের দিনে সিভিল ল’য়ের (দেওয়ানি বিষয়ক আইনজীবী) ব্যাপারে প্রকৃতপক্ষে আমাদের খুবই বিচারকের স্বল্পতা পাওয়া যায়। তিনি থাকলে আমাদের লাভ হতো। তার রক্তে ছিলো সিভিল ল।’

অভিজ্ঞ বিচারপতিদের মৃত্যুতে বিচার বিভাগ ক্ষতিগ্রস্ত হয় বলেও মনে করেন প্রধান বিচারপতি। বক্তব্যের শেষ পর্যায়ে এসে প্রধান বিচারপতি শোকসভায় বিচারকদের উপস্থিতি নিয়ে দুঃখ প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, আয়োজকদের ধন্যবাদ জানাচ্ছি। কিন্তু আমি মর্মাহত বিচারকদের উপস্থিতি দেখে। এটা খুবই দুঃখজনক।

সুপ্রিম কোর্ট জাসেস কর্নারের সভাপতি আপিল বিভাগের বিচারপতি মির্জা হোসেইন হায়দারের সভাপতিত্বে সাধারণ সম্পাদক ও হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি একেএম আব্দুল হাকিম শোকসভা পরিচালনা করেন।

আলোচনায় অংশ নেন আপিল বিভাগের সাবেক বিচারপতি আব্দুল মতিন, হাইকোর্ট বিভাগের সাবেক বিচারপতি আওলাদ আলী, হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি সৈয়দ মোহাম্মদ দস্তগীর হোসেন, বিচারপতি মিফতাহ উদ্দিন চৌধুরী, বিচারপতি ওবায়দুল হাসান, বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. ইকবাল কবির।

(দ্য রিপোর্ট/কেআই/এপি/এনআই/জানুয়ারি ২৩, ২০১৭)

পাঠকের মতামত:

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

M

M

SMS Alert

এর সর্বশেষ খবর

- এর সব খবর