thereport24.com
ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল 24, ৫ বৈশাখ ১৪৩১,  ৯ শাওয়াল 1445

মেহেরপুরে এবারও গমে ব্লাস্ট ভাইরাস!

২০১৭ ফেব্রুয়ারি ০৭ ২২:১৪:৩৪
মেহেরপুরে এবারও গমে ব্লাস্ট ভাইরাস!

আবু আক্তার করন, মেহেরপুর : মেহেরপুর জেলায় চলতি মৌসুমে আবারও গমে ব্লাস্ট রোগ দেখা দিয়েছে। এই রোগ প্রতিরোধে চলতি মৌসুমে কৃষি বিভাগ জেলায় গম চাষে নিষেধাজ্ঞা জারি করলেও অনেক চাষি নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে গম চাষ শুরু করেছিলেন। কিন্তু গমে ব্লাস্ট রোগ দেখা দেওয়ায় চিন্তিত কৃষক ও কৃষি বিভাগ।

মেহেরপুরসহ দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের সাত জেলায় গত বছর গমে ব্লাস্ট ভাইরাস আক্রান্ত হওয়ায় রোগ প্রতিরোধে অধিকাংশ জমির গম পুড়িয়ে ফেলা হয়েছিল। সে জন্য চলতি মৌসুমে এই রোগ যাতে আবারও না ছড়ায়, সে জন্য জন্য কৃষি বিভাগ থেকে চাষিদের গম চাষে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছিল। কিন্তু কৃষি বিভাগের কথা না শুনে অনেক চাষি চলতি মৌসুমে প্রায় চার হাজার হেক্টর জমিতে গমের আবাদ করেন। যে আবাদ গতবার ছিল ১৩ হাজার ৯৯৫ হেক্টর জমিতে। বর্তমানে গমের শিষ বের হলে কৃষি বিভাগ মাঠ পরিদর্শনে গিয়ে ব্লাস্ট রোগ শনাক্ত করে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানালে আন্তর্জাতিক গম ও ভুট্টা গবেষণা কেন্দ্র থেকে ১৫ সদস্যের একটি গবেষক দল মেহেরপুরের বিভিন্ন মাঠে গিয়ে গমের জমি পরিদর্শন করে এবং গমে ব্লাস্ট ভাইরাস শনাক্ত করেন। ফলে কৃষি বিভাগ ও চাষিরা চিন্তিত। এই পরিস্থিতিতে অনেক চাষি এখন জমি থেকে গম তুলে গরু-ছাগলকে খাওয়াচ্ছেন।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক এস এম মোস্তাফিজুর রহমান জানান, চাষিদের নিষেধ ও নিরুৎসাহিত করা হয়েছিল। কিন্তু তারপরেও যারা গম চাষ করছেন তারা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন।

মেহেরপুর সদর উপজেলা যাদবপুর গ্রামের কৃষক ইছাহাক আলী দ্য রিপোর্টকে জানান, গম চাষ না করলে সারা বছর খাবো কী। তাই এবার দুই বিঘা জমিতে গম চাষ করেছিলাম। কিন্তু গত বছরের মতো এবারও গমে ভাইরাস রোগ লেগেছে। দুই বিঘা গমে আমার ৩০ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। এখন খরচের টাকাও উঠবে না।

আমঝুপি গ্রামের জামাল উদ্দিন বলেন, গত বছর আমার সাত বিঘা জমিতে গমের আবাদ ছিল। ভাইরাস লাগার কারনে এবার নিজেদের খাওয়ার জন্য অল্প কিছু জমিতে গম চাষ করেছিলাম। আবারও গমে রোগ হওয়ায় গম কেটে গরু-ছাগলকে খাওয়াচ্ছি। এবার কৃষি বিভিাগের পক্ষ থেকে গম আবাদ না করার জন্য নিষেধ করেছিল। কিন্তু নিজেদের খাওয়ার জন্য লাগিয়েও গম হলো না। কয়েক বছর আর গম আবাদ করব না।

দিনাজপুর গম গবেষণা কেন্দ্রের মুখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. পরিতোষ কুমার মালাকার জানান, এটি একটি বীজবাহিত রোগ। প্রধানত গমের শীষে ছত্রাকের আক্রমণ হয়। শীষের আক্রান্ত স্থানে কালো দাগ পড়ে এবং আক্রান্ত স্থানের উপরের অংশ সাদা হয়ে যায়। আক্রান্ত শীষের দানা অপুষ্ট হয় ও কুঁচকে যায়। ফলে দানা ধূসর বর্ণের হয়ে যায়।

দিনাজপুর গম গবেষণা কেন্দ্রের পরিচালক ড. নরেশচন্দ্র দেব জানান, এই রোগ প্রতিরোধে আক্রান্ত এলাকায় কয়েকবছর গম চাষ থেকে বিরত থাকতে হবে এবং ভাল বীজ সংগ্রহ করতে হবে। তা না হলে বারবারই এই রোগ দেখা দিবে।

বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক ড. আবুল কালাম আজাদ জানান, যেহেতু গমে ব্লাস্ট ভাইরাস আক্রমণ করে ফেলেছে সে ক্ষেত্রে আর যাতে না ছড়ায় তার জন্য নাটিভো ৭৫ ডব্লিউ জি অথবা নভিটা ৭৫ ডব্লিউ জি ছত্রাকনাশক স্প্রে করার পরামর্শ দিচ্ছি। এটি স্প্রে করলে ফল পাওয়া যাবে।

(দ্য রিপোর্ট/এপি/এম/ফেব্রুয়ারি ৭, ২০১৭)

পাঠকের মতামত:

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

M

M

SMS Alert

এর সর্বশেষ খবর

- এর সব খবর