thereport24.com
ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল 24, ১২ বৈশাখ ১৪৩১,  ১৬ শাওয়াল 1445

হবিগঞ্জে ৪ শিশু হত্যার বছর পার

বিচার শেষ না হওয়ায় হতাশ পরিবার

২০১৭ ফেব্রুয়ারি ১৬ ২১:৫৮:০৪
বিচার শেষ না হওয়ায় হতাশ পরিবার

কাজল সরকার, হবিগঞ্জ : হবিগঞ্জের বাহুবলের সুন্দ্রাটিকি গ্রামে চাঞ্চল্যকর ৪ শিশু হত্যাকাণ্ডের ১ বছর পূর্ণ হলেও অগ্রগতি নেই বিচারকার্যের। হত্যাকাণ্ডের পর দ্রুত বিচারের মাধ্যমে ৩ মাসের মধ্যে বিচার শেষ করার আশ্বাস দেওয়া হলেও ১ বছরে শেষ হয়নি বিচারকার্য। মামলার তিন আসামিকে এখনও গ্রেফতার করা সম্ভব হয়নি। বিচারের অপেক্ষা করছে নিহত শিশুদের পরিবার।

২০১৬ সালের ১২ ফেব্রুয়ারি বিকেলে খেলাধুলা করতে বাড়ি থেকে বের হয়ে নিখোঁজ হয় হবিগঞ্জ জেলার বাহুবল উপজেলার সুন্দ্রাটিকি গ্রামের মো. ওয়াহিদ মিয়ার পুত্র জাকারিয়া আহমেদ শুভ (৮), তার চাচাত ভাই আব্দুল আজিজ মিয়ার পুত্র তাজেল মিয়া (১০) ও আবদাল মিয়ার পুত্র মনির মিয়া (৭) এবং তাদের প্রতিবেশী আব্দুল কাদিরের পুত্র ইসমাঈল হোসেন (১০)। নিখোঁজের পর অনেক খোঁজাখুঁজি করেও শিশুদেরকে না পাওয়ায় পর দিন নিখোঁজ মনিরের পিতা বাহুবল থানায় একটি জিডি (সাধারণ ডায়েরি) করেন।

নিখোঁজের ৫ দিন পর ১৭ ফেব্রুয়ারি গ্রামের পার্শ্ববর্তী ইচাবিলে মাটিচাপা অবস্থায় তাদের লাশের সন্ধান পায় এলাকার কিছু শ্রমিক। লাশের খবর পেয়ে একে একে চারটি লাশ আইনশৃঙ্খলা বাহিনী উদ্ধার করে।

জানা যায়, ওই গ্রামের কাজল মিয়ার সাথে আব্দুল আলী বাগালের বিরোধ চলে আসছিল দীর্ঘদিন ধরে। নিহত শিশুদের পিতা ও পরিবার কাজল মিয়ার পক্ষ নেয়। এর জের ধরেই ৪ শিশু খুন হয় বলে ধারণা এলকাবাসীর।

এ ঘটনা দেশে ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনার সৃষ্টি করে। ঘটনার দিন বিকেলে সন্দেহভাজন হিসেবে গ্রামের পঞ্চায়েত প্রধান আব্দুল আলী বাগালকে আটক করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। পরে আব্দুল আলীর দুই ছেলেসহ ৭ জনকে আটক করা হয়। এর মধ্যে বশির মিয়া ও সালেহ আহমেদকে অব্যহতি প্রদান করা হয়। এছাড়া প্রধান অভিযুক্ত বাচ্চু র‌্যাবের ক্রসফায়ারে নিহত হয়।

কারাগারে আটক ৫ জন হলেন- আব্দুল আলী বাগাল, তার ছেলে রুবেল মিয়া, জুয়েল মিয়া, ভাতিজা হাবিবুর রহমান আরজু এবং ছায়েদ মিয়া। অপর আসামি বিলাল মিয়া, উস্তার ও বাবুল মিয়া পলাতক রয়েছেন। এর মধ্যে আব্দুল আলীর দুই ছেলেসহ ৪ জন নিজেকে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দি প্রদান করেছেন।

পরে একই বছরের ০৫ এপ্রিল মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ডিবির তৎকালীন ওসি মোক্তাদির হোসেন তদন্ত করে ৯ জনের বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন। এরপর নারী ও শিশু নির্যাতন আদালতের বিচারক না থাকায় মামলাটি স্থানান্তর করা হয় জেলা ও দায়রা জজ আদালতে। তারপর থেকে সেখানে মামলার সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়। বর্তমানে মামলায় ৫৭ জন সাক্ষীর মধ্যে ৩২ জন সাক্ষী সাক্ষ্য প্রদান করেছেন।

এদিকে, এক বছরেও পলাতক তিন আসামি বিলাল মিয়া, উস্তার মিয়া ও বাবুল মিয়াকে গ্রেফতার না করায় হতাশা বিরাজ করছে নিহতের পরিবারের মধ্যে। এমনকি তাদেরকে গ্রেফতার করতে পারবে কি-না এ নিয়েও সংশয় বিরাজ করছে তাদের মনে।

নিহতের স্বজনরা দাবি করছেন আসামিপক্ষের লোকজনের অব্যাহত হুমকিতে তারা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। তারা চাঞ্চল্যকর এ ঘটনায় অপরাধীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেন।

রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ত্রিলোককান্তি চৌধুরী বিজন জানান, ‘বিচারক সংকট ও আসামিদের আইনজীবী দেশে না থাকা ও তিনজন আসামি পলাতক থাকায় মামলা কার্যক্রম কিছুটা ব্যাহত হচ্ছে। তবে স্বল্প সময়ের মধ্যে বাকি সাক্ষীদের সাক্ষ্য গ্রহণের মাধম্যে বিচারকার্য সমাপ্ত হবে।’

(দ্য রিপোর্ট/এমএইচএ/এপি/এনআই/ফেব্রুয়ারি ১৬, ২০১৭)

পাঠকের মতামত:

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

M

M

SMS Alert

এর সর্বশেষ খবর

- এর সব খবর