thereport24.com
ঢাকা, শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল 24, ৬ বৈশাখ ১৪৩১,  ১০ শাওয়াল 1445

সংবাদ সম্মেলনে বনানী বন্নি

বাবুল আক্তারকে জড়িয়ে পরকীয়ার মিথ্যা গল্প

২০১৭ ফেব্রুয়ারি ২০ ২১:০০:৩০
বাবুল আক্তারকে জড়িয়ে পরকীয়ার মিথ্যা গল্প

মাগুরা প্রতিনিধি : সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত পুলিশের এসআই আকরাম হোসেনের স্ত্রী বনানী বিনতে বশির (বন্নি) সংবাদ সম্মেলনে দাবি করেছেন যে, সাবেক এসপি বাবুল আক্তারের সাথে তার পরকীয়ার মিথ্যা গল্প তৈরি করছে ননদরা। স্বামীর ক্রয় করা ঢাকার ফ্লাট ও ঝিনাইদহের বাড়ি থেকে একমাত্র কন্যা আণিশা ও তাকে (বন্নি) বঞ্চিত করতেই পরকিয়ার নাটক সাজিয়ে এক ধরনের অপকৌশলে মেতে উঠেছেন তারা।

সোমবার (২০ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে মাগুরা প্রেস ক্লাবে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে এ অভিযোগ করেন বনানী বিনতে বশীর (বন্নি)। এ সময় পিতা বশির উদ্দিন তার সাথে উপস্থিত ছিলেন।

বন্নি লিখিত বক্তব্যে অভিযোগ করেন, ৫ বোনের একমাত্র ভাই স্বামী আকরাম হোসেন ছাড়া আর কোন ভাই নেই তাদের। পুলিশের জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে সাউথ সুদানে চাকরি করেছেন আকরাম। শান্তিরক্ষা মিশন থেকে উপার্জিত অর্থে আমার স্বামী আকরাম হোসেন নিজ নামে ঢাকার মগবাজারে ১টি ফ্লাট কেনেন। ফ্লাটটি ক্রয় করার পর ননদরা জানতে পেরে তা বিক্রি করে ৫ বোনকে টাকা ভাগ করে দিতে চাপ প্রয়োগ করে তারা। এ সময় তাদের অত্যাচারে আমার স্বামী আকরাম একমাত্র কন্যা আণিশার নামে ফ্লাটটি দানপত্র মূলে রেজিস্ট্রি করে দেন। এছাড়াও ঝিনাইদহ শহরে ৩০ শতক জমির ওপর স্বামীর দ্বিতলবাড়ি রয়েছে। যার বর্তমান বাজারমূল্য সাড়ে তিন কোটি টাকার মতো। এই মূল্যবান সম্পদ আত্মসাৎ করার জন্যই প্রথমে বলেছে আমার ফুফাত ভাই সাদিমুলের সাথে প্রেম ছিল আমার। সাদিমুলের সাথে ষড়যন্ত্র করে স্বামী আকরামকে হত্যা করেছি আমি। ২ বছর পর এখন আবার বলছে বাবুল আক্তারের সাথে পরকীয়া ছিল আমার। এরপর তাদের স্বার্থ হাসিল না হওয়া পর্যন্ত অন্য একজনকে জড়িয়ে মন গড়া কল্পকাহিনী তৈরি করবে। প্রত্যেক নারীই চাই তার স্বামীর ভিটে মাটিতে পড়ে থাকতে। কিন্তু আমি তা পারি নাই। স্বামীর এ মূল্যবান সম্পদই কাল হয়ে দাঁড়িয়েছে আমার এতিম একমাত্র কন্যা আণিশা ও আমার জীবনে।

এ সময় তিনি আরও বলেন, ২০১৫ সালের জানুয়ারি মাসে ঝিনাইদহের সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট তৃতীয় আদালতে ননদ জান্নাত আরা পারভীন রিনি বাদী হয়ে আমার ফুফাতো ভাই সাদিমুল হক মুনকে ১নং আসামি এবং আমি, আমার বাবা বশির উদ্দীন ও মা সেলিনা খাতুনকে আসামি করে মোট ৪ জনের বিরুদ্ধে কুপিয়ে ও স্যুপে বিষ মিশিয়ে হত্যার অভিযোগে মামলা (নং শৈলকুপা পি ৮/১৫) দায়ের করেন। ফুফাতো ভাই সাদিমুল হক মুনের সাথে আমার পরকীয়ার কল্পকাহিনী মামলায় উল্লেখ করা হয়।

ঐ সময়ের পর থেকে পরবর্তী দু’বছরের মধ্যে কখনও বাবুল আক্তারের কোন নামগন্ধ ননদরা কোথাও বলেননি। অথচ এখন ফুফাতো ভাইকে বাদ দিয়ে বর্তমান সময়ের আলোচিত সাবেক এসপি বাবুল আক্তারের সাথে আমাকে নিয়ে নতুন কাহিনী সৃষ্টি করছেন কুচক্রী ননদরা।

আমার স্বামী পুলিশের এসআই আকরাম হোসেন সড়ক দুর্ঘটনায় আহত ও মুমূর্ষু অবস্থায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকা অবস্থায় ঢাকা সিটি এসবি (পুলিশ) থেকে ১ লাখ টাকা চিকিৎসা সহায়তা বাবদ আমার হাতে প্রদান করেন। তখনই আমার ননদ জান্নাত আরা পারভীন রিনি আমাকে চাপ প্রয়োগ করে সম্পূর্ণ টাকা বোন জামাই আব্দুর রশিদকে দিয়ে দিতে বলেন। রিনির চাপ প্রয়োগে আমি স্বামীর চিকিৎসার কথা ভেবে ঐ সময়ে আব্দুর রশিদের হাতে ৫০ হাজার টাকা দিতে বাধ্য হয়। এ বিষয়টি ঢাকার পুলিশের তৎকালীন এসএস (এডমিন) তৌফিক সাহেব ও ফারাজী সাহেব অবগত আছেন বলেও ননদ জান্নাত আরা পারভীন রিনি দাবি করেন।

সংবাদ সম্মেলনে বন্নি আরো অভিযোগ করেন যে, স্বামী আকরাম হোসেন ঢাকা মেডিকেলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করলে তাকে ঝিনাইদহে এনে দাফন করা হয়। দাফনের পর পরই আমার ননদরা স্বামীর নামীয় সম্পত্তি ও ঢাকার ফ্লাট লিখে নেওয়ার জন্য আমার উপর অত্যাচার করে। একই সময়ে (পৌর কবরস্থান থেকে ফেরার পথে আমার কলেজ শিক্ষক চাচা ওহিদুর রহমানকে আব্দুর রশিদ ও তার ছেলে সোহান সন্ত্রাসী বাহীনি দিয়ে পিটিয়ে আহত করে। এছাড়াও আমার মামা শরিফুল ইসলাম ও নাজমুল ইসলামকে ধরে নিয়ে আটকে রাখে। এ অবস্থায় আমি শিশুকন্যাসহ পালিয়ে যেতে বাধ্য হই এবং আত্মগোপন করি।

সংবাদ সম্মেলনে বন্নি আরো অভিযোগ করেন, পরকীয়া প্রেমিক দ্বারা কুপিয়ে ও স্যুপের মধ্যে বিষ প্রয়োগ করে হত্যা মামলায় স্বামী আকরাম হোসেনের লাশের ময়নাতদন্ত হয়েছে ঢাকা মেডিকেলের ফরেনসিক বিভাগে এবং মহাখালীর সিআইডি’তে। সেখানে স্বামী আকরামের শরীরের বিভিন্ন অংশের পরীক্ষা-নিরীক্ষায় কোন বিষের আলামত পওয়া যায়নি এবং অধিকতর তদন্ত শেষে চূড়ান্ত প্রতিবেদনে মৃত্যু সড়ক দুর্ঘটনায় হয়েছে মর্মে প্রতিবেদন প্রদান করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই সাজ্জাদ হোসেন। স্বামীর মৃত্যু নিয়ে আরও কোন উচ্চপর্যায়ের তদন্ত হলে তাতে কোন আপত্তি নেই আমার। খুলনায় আমার (বন্নি) বাবা যখন চাকরি করতেন তখন বাবুলের পিতার বাসার পাশে বাস করতেন বলে যে অভিযোগ আমার ননদ জান্নাত আরা পারভীন করেছেন তা সত্য নয়। খুলনায় যখন আমার বাবা ১৯৯০ সালে চাকরি করতেন তখন আমার বয়স মাত্র ৪ বছর। ওই বয়সে কারো সাথে প্রেম করা সম্পূর্ণ অবান্তর ও অবাস্তবকাহিনী মাত্র। এটা কতটা সম্ভব তা বিবেকবান মানুষের কাছে আমার প্রশ্ন। অথচ ননদ রিনি ওই সময় থেকে বাবুল আক্তারের সাথে আমার প্রেম ছিল বলে মিথ্যাচারে নেমেছেন।

সংবাদ সম্মেলনে বন্নি চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দাবি করেন, বাবুল আক্তারের সাথে আমার ব্যক্তিগত কোন পরিচয় নেই। দেখা সাক্ষাৎও হয়নি। আমার ননদরা আমার স্বামীর ধন-সম্পদের লোভে আমাকে জড়িয়ে বিভিন্ন সময়ে পরকীয়ার নতুন নতুন কাহিনী প্রচার করছে। আমাকে হয়রানি করছে। মামলা হামলা ও শিশু কন্যাসহ আমাকে জীবননাশের হুমকি দিচ্ছে। ফলে আমি তাদের ভয়ে আত্মগোপনে এক আত্মীয়ের বাড়িতে থাকতে বাধ্য হচ্ছি। আমি আমার এতিম কন্যার ন্যায্য অধিকার ফিরে পেতে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করি।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত বন্নির পিতা বশিরুদ্দিন বলেন, মাগুরার মহম্মদপুর উপজেলার পল্লী দরিদ্র বিমোচন ফাউন্ডেশনে ২০০৯ সাল থেকে কর্মরত রয়েছি। আমার মেয়ের নিরাপত্তার জন্য প্রায়ই তাকে আমার কাছে এনে রাখতে হয়। তাই বাবুল আক্তারের মাগুরার বাড়িতে আমার মেয়ের থাকার কোনই দরকার হয় না।

এ ব্যাপারে ননদ জান্নাত আরা পারভীন রিনির ব্যক্তিগত মোবাইল নম্বরে ফোন করা হলেও তার সাথে সংবাদ সম্মেলন প্রসঙ্গে কোন কথা বলা সম্ভব হয়নি।

(দ্য রিপোর্ট/এমএইচএ/এপি/ফেব্রুয়ারি ২০, ২০১৭)

পাঠকের মতামত:

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

M

M

SMS Alert

এর সর্বশেষ খবর

- এর সব খবর