thereport24.com
ঢাকা, শুক্রবার, ২৯ মার্চ 24, ১৫ চৈত্র ১৪৩০,  ১৯ রমজান 1445

‘বিদেশিদের খুশি করা ছাড়া সিদ্ধান্ত নিতে পারে না আ.লীগ’

২০১৭ ফেব্রুয়ারি ২২ ১৪:৩০:৩৫
‘বিদেশিদের খুশি করা ছাড়া সিদ্ধান্ত নিতে পারে না আ.লীগ’

দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক : আওয়ামী লীগ সরকার শুধু নতজানু পররাষ্ট্রনীতিই অনুসরণ করছে তা নয়, তারা বিদেশিদের খুশি করা ছাড়া রাজনৈতিক বা প্রশাসনিক কোনো সিদ্ধান্তও নিতে পারে না। ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে (ডিআরইউ) জাগপা আয়োজিত এক আলোচনা সভায় এমন মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন।

তিনি বলেন, পিলখানার অসন্তোষ নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব ছিল কিন্তু ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে তা করা হয়নি। ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে স্বাধীন দেশের মাটিতে বিডিআর বিদ্রোহের নামে পিলখানায় ৫৭ জন সেনা কর্মকর্তাকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছে। বাংলাদেশে মুক্তিযুদ্ধচলাকালীন এত কর্মকর্তাকে হত্যা করা হয়নি, অথচ স্বাধীন দেশে এক দিনে এত কর্মকর্তাকে হত্যা করা হলো। কাদের স্বার্থে তাদের হত্যা করা হয়েছে এমন প্রশ্ন তুলে তিনি বলেন, এই হত্যা নিশ্চয় বাংলাদেশের কোনো স্বার্থে করা হয়নি। নিশ্চয় কোনো বিদেশির ষড়যন্ত্র বাস্তবায়ন করার স্বার্থে চৌকস কর্মকর্তাদের হত্যা করা হয়েছে।

বুধবার (২২ ফেব্রুয়ারি) ‘পিলখানা ট্র্যাজেডি : কেন এই সেনা হত্যা? কার স্বার্থে’ শীর্ষক এ আলোচনা সভার আয়োজন করে ২০ দলীয় জোট শরিক জাগপা।

মোশাররফ হোসেন বলেন, ২১ ফেব্রুয়ারি আমাদের আত্মত্যাগ ও গৌরবের ঘটনা। কিন্তু ২৫ ফেব্রুয়ারি এই আওয়ামী সরকারের সময়ে একটি কলঙ্কময় দিন। মুক্তিযুদ্ধের চেতনা আজকে ভূলুণ্ঠিত। কোথায় স্বাধীনতা, স্বার্বভৌমত্ব? ১/১১ এর ফখরুদ্দিন-মঈনুদ্দিনরা ষড়যন্ত্র করে রাষ্ট্র ক্ষমতা শেখ হাসিনার হাতে দিয়ে যায়। আর তিনি (শেখ হাসিনা) ক্ষমতায় এসেই তাদের যে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্র ছিল সেই ষড়যন্ত্র বাস্তবায়নের প্রথম পদক্ষেপ নিলেন এই পিলখানায় বিডিআর বিদ্রোহের ট্র্যাজেডির ঘটনা ঘটিয়ে।

বাংলাদেশ এখন সারাবিশ্বের রাজনীতির খেলার মাঠে পরিণত হয়েছে উল্লেখ করে বিএনপির এ নেতা আরও বলেন, ২৫ ফেব্রুয়ারি পিলখানার ষড়যন্ত্রের ধারাবাহিকতায় ২০১৪ সালে ৫ জানুয়ারিতে নির্বাচনহীন, ভোটারবিহীন নির্বাচন হয়েছে ও সরকার প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। ফলে যারা নির্বাচিত হয়েছে তারা গণতন্ত্রে বিশ্বাস করে না। তারা নির্বাচন দিতে এবং গণতন্ত্রকে ভয় পায়।

তিনি বলেন, এই দেশে এখন জনগণের ভোটের অধিকার ও গণতন্ত্র আজ আওয়ামী লীগের হাতে বাক্সবন্দি। তারা অলিখিতভাবে বাকশাল প্রতিষ্ঠিত করেছে। তারা কোনো সমালোচনা, বিরোধিতা সহ্য করতে পারে না। বিরোধী দলকে সভা সমাবেশ করতে দেয় না। অনুমতির নামে পুলিশ দিয়ে সকল জনগণকে দাবিয়ে রেখেছে। প্রতিবাদ করার পথ থেকে বিরত রেখেছে। উদ্দেশ্য তারা (আওয়ামী লীগ) বাকশালী কায়দায় দেশ পরিচালনা করবে। কারণ সেই বাকশালে নতুন সংস্করণ শেখ হাসিনা সরকার।

সাবেক এই মন্ত্রী বলেন, বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার দেওয়া প্রস্তাবের ওপর ভিত্তি করে রাষ্ট্রপতি সংলাপ করেছেন কিন্তু ফলাফল দিতে পারেনি। যে উদ্দেশ্য নিয়ে রাষ্ট্রপতি শুরু করেছিলেন, আমাদের বিশ্বাস আওয়ামী সরকারের হস্তক্ষেপে সেই প্রক্রিয়া কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যে পৌঁছাতে পারেনি। দাবি ছিল দল নিরপেক্ষ সিইসি গঠন করতে হবে। কিন্তু এমন একজনকে প্রধান নির্বাচন কমিশনার করা হয়েছে যিনি আওয়ামী লীগের সমর্থক। এমনকি গত নির্বাচনে আওয়ামী লীগের পক্ষে সমন্বয়কের ভূমিকা পালন করেছেন।

তিনি বলেন, বর্তমান প্রধান নির্বাচন কমিশনারের অধীনে এ দেশে কোনো সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন হতে পারে না।

বিএনপি মনে করে, আওয়ামী লীগ আবারও বিনা ভোটে নির্বাচন করে ক্ষমতায় যেতেই রকিব মার্কা আরেকটি নির্বাচন কমিশন প্রতিষ্ঠা করেছে। আমরা বলতে চাই, সমানে আরো কয়েকটি নির্বাচন আছে সেই নির্বাচনগুলোর মাধ্যমে প্রমাণিত হবে এই নির্বাচন কমিশনও রকিব মার্কা কমিশন।

সরকারের প্রতি হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে খন্দকার মোশাররফ বলেন, সময় থাকতে যদি হুঁশ না আসে তাহলে এই দেশে গণ-অভ্যুত্থান হবে।

খালেদা জিয়ার মামলা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, খালেদা জিয়ার মামলা রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। কোনো সত্যতা নেই। যদি এই দেশে এক আইন থাকে তাহলে শেখ হাসিনার মামলার মতো খালেদা জিয়ার মামলাও টিকতে পারে না এবং খালেদা জিয়াকে কোনো দিন কারাগারে যেতে হবে না।

বিএনপি নেতা বলেন, এই দেশে যদি রাজনৈতিকভাবে সমঝোতার মাধ্যমে সংকট মোকাবিলা করতে হয়, জনগণের ভোটাধিকার জনগণকে ফিরিয়ে দিতে হয় তাহলে নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকার ছাড়া বিকল্প নেই।

জাগপার সভাপতি শফিউল আলম প্রধানের সভাপতিত্বে আরও বক্তব্য দেন দলের সাধারণ সম্পাদক খন্দকার লুৎফর রহমানসহ দলের নেতারা।

(দ্য রিপোর্ট/এমএইচ/এমকে/ফেব্রুয়ারি ২২, ২০১৭)

পাঠকের মতামত:

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

M

M

SMS Alert

এর সর্বশেষ খবর

- এর সব খবর