thereport24.com
ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল 24, ১২ বৈশাখ ১৪৩১,  ১৬ শাওয়াল 1445

পিলখানা ট্র্যাজেডির ৮ বছর

আইয়ুব কাউছারের নামে কক্সবাজার বিমানবন্দরের দাবি

২০১৭ ফেব্রুয়ারি ২৫ ১৬:৪১:০৭
আইয়ুব কাউছারের নামে কক্সবাজার বিমানবন্দরের দাবি

কক্সবাজার প্রতিনিধি : ঢাকার বিডিআর (বিজিবি) দরবার হল পিলখানা ট্রাজেডির ৮ বছর পূর্ণ হচ্ছে আজ শনিবার (২৫ ফেব্রুয়ারি)। নারকীয় এই হত্যাযজ্ঞে সেনাবাহিনীর চৌকস অন্য সদস্যদের সাথে ওইদিন (২০০৯ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি) দরবার হলে নিহত হন কক্সবাজারের চকরিয়া পৌরসভার ৪ নম্বর ওয়ার্ডের ভরামুহুরী গ্রামের শহীদ লে. কর্নেল আবু মুছা মো. আইয়ুব কাউছার।

পিলখানা ট্রাজেডির পর থেকে পরিবার সদস্যরা প্রতিবছরই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে দাবি জানিয়ে আসছেন কক্সবাজার বিমানবন্দরকে কর্নেল আইয়ুব কাইছারের নামে নামকরণের জন্য। কিন্তু তাদের এই দাবি বারবার উপেক্ষিত থাকছে বলে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন আইয়ুব কাইছারের বড়ভাই প্রকৌশলী আলহাজ মো. জহুরুল মওলা ও মেঝভাই মো. এনামুল হক।

তারা চকরিয়ার স্থানীয় সাংবাদিকদের মাধ্যমে সরকারপ্রধানসহ সংশ্লিষ্ট সকলের কাছে পরিবারের পক্ষ থেকে দাবি জানানোর পাশাপাশি নারকীয় ঘটনায় নিহত সকল সেনা কর্মকর্তা ও সদস্যদের অবদানের কথা স্মরণ করে বিডিআর দরবার হলকে শহীদ জাদুঘর হিসেবে ঘোষণাও দাবি করেছেন। একই সাথে পিলখানা ট্টাডেটিতে নিহত সকল শহীদের স্ত্রী, পুত্র ও কন্যা এবং পরিবারের অন্য সদস্যদেরও সরকারিভাবে সহযোগিতা করার জন্য সরকারের হস্তক্ষেপ চেয়েছেন।

এদিকে পিলখানা দিবস উপলক্ষে মরহুম আইয়ুব কাউছারের পরিবার তার স্মরণে গ্রামের বাড়িতে নানা ধর্মীয় অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে। তারমধ্যে এদিন সকালে বাড়িতে খতমে কোরান, মিলাদ মাহফিল, দুঃস্থদের মাঝে খাবার বিতরণ, বিকেলে সামাজিক মসজিদের দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হবে।

লে. কর্নেল আইয়ুব কাউছারের ভাই মো. এনামুল হক বলেন, তৎকালীন সেনাপ্রধান মঈন উ আহমদের দূরদর্শীতার অভাবে বিডিআর বিদ্রোহে বাংলাদেশের গর্ব ৫৮জন চৌকস ঊর্ধ্বতন সেনা কর্মকর্তাসহ ৬০ জনকে অকালে প্রাণ দিতে হয়েছে।

তিনি অভিযোগ করেছেন, এ ঘটনার পর ৮ বছর সময় পেরিয়ে গেলেও স্ত্রী, সন্তান ছাড়া পরিবারের অন্য সদস্যরা সরকারের কোন ন্যূনতম সুযোগ-সুবিধা পায়নি। তিনি আক্ষেপ করে বলেন, কর্ণেল আইয়ুব কাউছারকে সেনাবাহিনীর এতবড় পদে পৌঁছানোর পেছনে পরিবার সদস্যদের (ভাই-বোনের) সর্বোচ্চ চেষ্টা ছিল। কিন্তু মর্মান্তিক এ ঘটনার পর পরিবারের (ভাই-বোনদের) প্রতি এতটুকু সমবেদনা বা সহমর্মিতা জানানোর প্রয়োজনও মনে করেনি সংশ্লিষ্ট মহল।

জানা গেছে, লে. কর্নেল আবু মুছা মো. আইয়ুব কাউছারের জন্ম কক্সবাজার জেলার চকরিয়া পৌরসভার ৪ নম্বর ওয়ার্ডের ভরামুহুরী এলাকায় সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে। ওই গ্রামের মরহুম মাওলানা আবদুল খালেকের ৮ ছেলে-মেয়েদের মধ্যে তিনি ছিলেন সর্বকনিষ্ঠ। ১৯৬২ সালের ১৬ ডিসেম্বর তার জন্ম। লেখাপড়া শেষে ১৯৮৩ সালের ১০ জুন তিনি বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ইঞ্জিনিয়ার্স কোরে যোগদান করেন। স্বীয় পেশায় অসাধারণ কর্মদক্ষতার কারণে মাত্র ৬ বছরে তিনি মেজর পদে পদোন্নতি পান। ২০০৩ সালে তিনি লে. কর্ণেল পদে অভিষিক্ত হন। চাকরি জীবনে তিনি শান্তি মিশনে কুয়েত, মালয়েশিয়া, সৌদিআরব, সিঙ্গাপুর, শ্রীলঙ্কা ও থাইল্যান্ডসহ বিভিন্ন রাষ্ট্রে ছিলেন। সর্বশেষ ২০০৯ সালে তিনি বিডিআর সদর দপ্তর পিলখানায় রক্ষণাবেক্ষণ ও নির্মাণ শাখায় (একিউএমজি) পদে কর্মরত ছিলেন।

পারিবারিক সূত্র জানায়, বর্তমানে শহীদ লে. কর্ণেল আইয়ুব কাউছারের স্ত্রী মুশরাত জাহান পিনু তাদের দুই মেয়ে কারিশা মুশরাত ও জাফারিয়া কাইছারকে নিয়ে ঢাকায় সরকারিভাবে বরাদ্দপ্রাপ্ত বাড়িতে বসবাস করে আসছেন।

লে. কর্ণেল আইয়ুব কাউছারের বড়ভাই প্রকৌশলী জহুরুল মাওলা বলেন, আমরা পরিবারের পক্ষ থেকে ঘটনার পর কর্ণেল আইয়ুব কাউছারের নামে কক্সবাজার বিমানবন্দরকে নামকরণের দাবি জানিয়ে আসছি। পাশাপাশি চকরিয়া উপজেলা প্রশাসন ও পৌরসভার সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের কাছে দাবি জানাচ্ছি আইয়ুব কাউছারের স্মৃতি রক্ষার্থে তার নামে পৌরসভার ৪নম্বর ওয়ার্ডের সবুজবাগ-থানা সেন্টার সড়কটি নামকরণ করে চালু করা হোক। সড়কটি চালু করা গেলে পৌরসভার কয়েক হাজার বাসিন্দা চলাচলে যেমন সুফল পাবে, তেমনকি আইয়ুব কাউছারের একটি স্মৃতি অন্তত পক্ষে জন্মভূমিতে প্রতিষ্ঠা পাবে।

(দ্য রিপোর্ট/এপি/ফেব্রুয়ারি ২৫, ২০১৭)

পাঠকের মতামত:

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

M

M

SMS Alert

এর সর্বশেষ খবর

- এর সব খবর