thereport24.com
ঢাকা, বুধবার, ১৭ এপ্রিল 24, ৩ বৈশাখ ১৪৩১,  ৮ শাওয়াল 1445

‘বিশেষ প্রেক্ষাপট’ রেখেই ‘বাল্যবিবাহ নিরোধ বিল’ পাস

২০১৭ ফেব্রুয়ারি ২৭ ১৮:৫৬:১০
‘বিশেষ প্রেক্ষাপট’ রেখেই ‘বাল্যবিবাহ নিরোধ বিল’ পাস

দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক : দুই বছরের কারাদণ্ড ও এক লাখ টাকার দণ্ডের বিধানসহ ‘বিশেষ প্রেক্ষাপটে’ শর্তসাপেক্ষ অপ্রাপ্তবয়স্ক ছেলে-মেয়েদের বিয়ের বিধান রেখে বাল্যবিবাহ নিরোধ বিল পাস করছে সংসদ।

তবে ‘বিশেষ প্রেক্ষাপট’ এর ক্ষেত্রে আদালতের নির্দেশ এবং মাতা-পিতা বা অভিবাবকের সম্মতিক্রমে বিধি মোতাবেক বিয়ে অনুষ্ঠানের শর্ত জুড়ে দেওয়া হয়েছে বিলে।

এই বিলে ‘বাল্যবিবাহ’ অর্থ করা হয়েছে-এইরূপ বিবাহ যার কোনো পক্ষ বা উভয় পক্ষ অপ্রাপ্ত বয়স্ক। এ ছাড়া ‘অপ্রাপ্ত বয়স্ক’ অর্থ করা হয়েছে-অপ্রাপ্ত বয়স্ক অর্থ বিবাহের ক্ষেত্রে ২১ বৎসর পূর্ণ করেন নাই এমন কোনো পুরুষ এবং ১৮ বৎসর পূর্ণ করেন নাই এমন কোনো নারী।

এ ছাড়া নতুন প্রণীত এ আইনে প্রাপ্ত বয়স্ক কোনো নারী বা পুরুষ বাল্যবিবাহ করলে তা অপরাধ হিসেবে বিবেচিত হবে এবং এজন্য দুই বছরের কারাদণ্ড বা এক লাখ টাকা অর্থদণ্ড আরোপের বিধান রাখা হয়েছে। একইসঙ্গে অপ্রাপ্ত বয়স্ক কোনো নারী বা পুরুষ বাল্য বিয়ে করলে এক মাসের আটকাদেশ ও ৫০ হাজার টাকা জরিমানা বা উভয় ধরনের দণ্ড প্রদানের বিধান রাখা হয়েছে।

স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে সোমবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) জাতীয় সংসদের চতুর্দশ ও শীতকালীন অধিবেশনে কন্ঠভোটে ‘বাল্যবিবাহ নিরোধ বিল-২০১৭’ পাস হয়। এর আগে বিলের ওপর আনীত কমিটি গঠন, জনমত যাচাই ও সংশোধনী প্রস্তাবসমুহ কন্ঠভোটে নাকচ হয়ে যায়। পরে মহিলা ও শিশু বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী মেহের আফরোজ সংসদীয় কমিটির সংশোধিত আকারে বিলটি পাস করার প্রস্তাব করেন।

বিলের ১৯ ধারায় বিশেষ বিধান এনে বলা হয়েছে, ‘এই আইনের অন্যান্য বিধানে যা কিছু থাকুক না কেন, বিধি দ্বারা নির্ধারিত কোনো বিশেষ প্রেক্ষাপটে অপ্রাপ্তবয়স্কের সর্বোত্তম স্বার্থে, আদালতের নির্দেশ এবং মাতা-পিতা বা প্রযোজ্য ক্ষেত্রে অভিভাবকের সম্মতিক্রমে, বিধি দ্বারা নির্ধারিত প্রক্রিয়া অনুসরণ করে বিয়ে সম্পাদিত হলে তা এই আইনের অধীন অপরাধ বলে গণ্য হবে না।’

বিলের উদ্দেশ্য ও কারণ সম্বলিত বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘বাল্যবিবাহ নিরোধের লক্ষ্যে জাতিসংঘ ঘোষিত নারীর প্রতি সকল প্রকার বৈষম্য বিলোপ সনদ, শিশু অধিকার সনদ স্বাক্ষরকারী রাষ্ট্র হিসেবে এবং শিশু আইন-২০১৩ তে বর্ণিত শিশু সুরক্ষা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে বিদ্যমান বাল্যবিবাহ নিরোধ আইন, ১৯২৯ রহিত করে যুগোপযোগী বিলটি প্রণয়ন করা হয়েছে।’

ব্রিটিশ আমলে প্রণীত ‘চাইল্ড ম্যারেজ রেসট্রেইন্ট অ্যাক্ট-১৯২৯’ বাতিল হলেও এই আইনের অধীনে চলমান মামলার ক্ষেত্রে তা প্রযোজ্য হবে না মর্মে সুরক্ষা দেওয়া হয়েছে।

বিলে এই আইনের অধীনে কোনো অপরাধ সংঘটনের দুই বছরের মধ্যে অভিযোগ দাখিল করার বিধার রাখা হয়েছে। বাল্যবিবাহ সম্পাদন বা পরিচালনা বা বাল্য বিয়েতে বাধ্য করা হলে পিতা-মাতা বা অভিভাবক বা সংশ্লিষ্ট অন্য কোনো ব্যক্তি অপরাধী হিসেবে গণ্য হবেন এবং সর্বনিম্ন ৬ মাস থেকে সবোর্চ্চ দুই বছরের কারাদণ্ড ও ৫০ হাজার টাকার জরিমানার বিধান রাখা হয়েছে। এ ছাড়া বাল্যবিবাহ নিবন্ধনের জন্য নিকাহ রেজিস্ট্রারের লাইসেন্স বাতিলসহ অনুরূপ শাস্তি আরোপের বিধান বিলে রাখা হয়েছে। তবে আদালত বাল্যবিবাহ বন্ধে উদ্যোগী হওয়ার শর্তে ইচ্ছা করলে মুচলেকা নিয়ে অভিযুক্ত ব্যক্তিকে অপরাধের দায় থেকে খালাস দিতে পারবেন। বিলে বাল্যবিবাহ বন্ধে নিষেধাজ্ঞা আরোপ ও শাস্তি বিধানের ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া বাল্যবিয়ে বন্ধে সরকারি কর্মকর্তা ও স্থানীয় প্রতিনিধিদের নিয়ে কমিটি করার বিধান রাখা হয়েছে।

(দ্য রিপোর্ট/কেএ/জেডটি/ফেব্রুয়ারি ২৭, ২০১৭)

পাঠকের মতামত:

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

M

M

SMS Alert

এর সর্বশেষ খবর

- এর সব খবর