thereport24.com
ঢাকা, শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল 24, ৬ বৈশাখ ১৪৩১,  ১০ শাওয়াল 1445

বইমেলায় কথাসাহিত্যিক অরুণ কুমার বিশ্বাসের ৮ বই

২০১৭ ফেব্রুয়ারি ২৭ ২০:১৮:৫৬
বইমেলায় কথাসাহিত্যিক অরুণ কুমার বিশ্বাসের ৮ বই

দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক : কথাসাহিত্যিক অরুণ কুমার বিশ্বাসের ৮টি বই প্রকাশিত হয়েছে এবারের বইমেলায়। সায়েন্সফিকশন, উপন্যাস, রম্যরচনা, শিশুতোষ মিলিয়ে বইগুলো পাঠকদের ইতোমধ্যে দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে। এ পর্যন্ত প্রকাশিত হয়েছে তার ৮০টির অধিক গ্রন্থ।

হায়েনার হাসি : পুরো একাত্তর জুড়ে সোনার বাংলায় অবিরাম ‘হায়েনার হাসি’ শোনা যায়। ওরা বাংলার শত্রু, ওরা বাঙালির শত্রু। কাশিপুরের রাজাকার রমজান ক্যাপ্টেন ইকরামের সাথে মিলিত হয়। মুক্তিপাগল বিচ্ছুর বিরুদ্ধে হাতে অস্ত্র তুলে নেয়। শহরে কারফিউ, সারি সারি জলপাই জিপ টহল দেয়! গ্রামে-গঞ্জে পাকবাহিনীর নির্বিচার গুলি চলে! লাখ লাখ বাঙালি মারা যায়, মা-বোনের সম্ভ্রম লুণ্ঠিত হয়। তবু হার মানে না অকুতোভয় মুক্তিফৌজ। ওদের দুচোখে স্বাধীন স্বদেশ গড়ার দৃঢ় প্রত্যয়। লাল-সবুজ পতাকা হাতে পাভেলের নেতৃত্বে দোলন, রনি ও অনীক দুর্বার প্রতিরোধ গড়ে তোলে। যুযুধানে যোগ দেয় হাতুড়ে ডাক্তার নগেন। যেমন করে হোক, শত্রুমুক্ত করতেই হবে কাশিপুরের মাটি। রেসকোর্স ময়দানে উচ্চারিত জাতির পিতা শেখ মুজিবের সেই তর্জনী উঁচানো ‘মুক্তির সংগ্রামে’ শামিল হয় গেরিলাযোদ্ধারা। নুন আর খুন দুটোই সস্তা খুব। অপারেশন কালনা ব্রিজ সফল হয় বটে, তার জন্য বিচ্ছুদের চরম মূল্য দিতে হয়। মারা যায় কিশোর যোদ্ধা অনীক ও দলনেতা পাভেল। শহীদের আত্মাহুতির মাঝে সহসাই উঁকি দেয় প্রিয় বাংলাদেশের রক্তস্নাত স্বাধীনতা! মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক বইটি প্রকাশ করেছে ঝিঙেফুল। প্রচ্ছদশিল্পী নিয়াজ চৌধুরী তুলি।

পিকিংমানব রহস্য : বেইজিং শহরের উত্তরে চুকুদিয়ানে পাওয়া যায় পাঁচ হাজার বছর আগেকার পিকিংমানবের হাড্ডি ও দাঁতের অস্তিত্ব। তাই নিয়ে ডুগু নামের এক ইন্টারন্যাশনাল মাফিয়াচক্র অর্জুনদের সাথে খুনোখুনিতে জড়িয়ে পড়ে। সুইডিশ উপশালা জাদুঘরের কিউরেটরের পক্ষে বিখ্যাত গোয়েন্দা রিও লুকাস এই ঘটনায় মাথা গলান। ফল পান প্রায় সাথেসাথেই। ডুগুর চাঁই তার উপর কয়েকবার হামলা করে, মরতে মরতে বেঁচে যান মি. রিও। কিন্তু অর্জুন লু চিয়াং ওরফে লুচিকে কথা দিয়েছে, পিকিংমানবের হাড় সে উদ্ধার করবেই। কারণ এটা মানবসভ্যতার জন্য অত্যন্ত জরুরি।

কিন্তু মাফিয়া কী জিনিস ওরা তখনও জানতো না। ড্রাগনবোন হিলে ফসিল খুঁজতে গিয়ে ভীষণ বিপদে পড়লো অর্জুন। ডুগুর লোকেরা তাকে বিষাক্ত পয়জন পুশ করে মেরে ফেলতে চায়। চীন সাগরে ডুবে যায় কাজল। কিন্তু ওর বরাত ভাল, এক জেলে এবারের মতো তাকে বাঁচিয়ে দেয়। তারপর...? ঘটতে থাকে একের পর এক লোমহর্ষক সব ঘটনা। পাঞ্জেরী পাবলিকেশন্স প্রকাশিত বইটির প্রচ্ছদশিল্পী নিয়াজ চৌধুরী তুলি।

চিনচিনে রমণীরা : ‘রম্য বা রমণীয়’ সৌন্দর্য ও সিগ্ধতার প্রতিভূ। যদিও রমণীয়তার সাথে রম্যের তেমন কোন মেলবন্ধন নেই। রচনার গোত্র বিচারে ‘রম্য’ খানিক চটুল স্বাদের রুচিকর পরিবেশনা। বিষয়ের গভীরতা তেমন নেই, তবে ব্যঞ্জনা থাকতে হয়। রম্য পড়ে প্রভূত জ্ঞানলাভ হবে, এমন ধারণাও সবক্ষেত্রে সঠিক নয়। তবে রম্যের স্পর্শে ঠোঁটে হাসি ফুটবে, হোক না সে তেরছা বা কাষ্ঠহাসি। গল্পগুলো নেহাতই তুচ্ছ। বলা যায় লেখকের চীন ভ্রমণের বাইপ্রোডাক্ট। সেখানে অনেক মজার অভিজ্ঞতা হয়েছিল, তার কিছুটা শেয়ার আর কি। রম্য পড়ে প্রাণখুলে না হাসলে পুরো প্রচেষ্টাই মাটি। শব্দচয়ন ও উপস্থাপনার মুনশিয়ানা রম্যরচনাকে রম্যতা দান করে। বাড়তি হিসেবে টুকটাক তথ্য সমন্বয়। মোটামুটি এই নিয়ে রম্যগ্রন্থ ‘চিনচিনে রমণীরা’। বইটি প্রকাশ করেছে মূর্ধণ্য প্রকাশন। প্রচ্ছদশিল্পী মোমিন উদ্দিন খালেদ।

ক্রাইসিস : ক্রাইসিস বা টানাপোড়েন জীবনের এক অপরিহার্য অনুষঙ্গ। চলার পথে আমাদের কতোরকম চড়াই-উতরাই পেরোতে হয়! ভালোবাসা যেমন জীবনে উষ্ণতা যোগ করে, স্বপ্নমুখর মন প্রেমের পথে নীড় খুঁজে নেয়, টানাপোড়েনও তেমনি যাপিতজীবনে জড়িয়ে থাকে লতাগুল্মের মতো। নইলে মাহিন আর ফারিয়ার দাম্পত্যের শুরুতেই কেন এমন দুর্বোধ্য জটিলতা বাসা বাঁধে! বিলেত থেকে সাদমান ফিরে এলে পুরনো প্রেম নতুন করে উঁকি দেয় ফারিয়ার বুকে। আর মাহিনের অফিসের সুশ্রী সহকর্মী রেশমা ক্রমশ বসের সাথে তার মনের দূরত্ব কমিয়ে আনে। সেখানে যোগ হয় ফারিয়ার বোন লোপা-বিদূষী আর্কিটেক্ট। ভুল মানুষের সাথে ওরা একে অপরে জড়িয়ে যায়। এভাবেই তৈরি হয় ক্রাইসিস। অন্যপ্রকাশ থেকে প্রকাশিত বইটির প্রচ্ছদ এঁকেছেন ধ্রুব এষ।

মুখোশের আড়ালে : নাবিলের মুসা মামা চৌকস সিআইডি অফিসার সহসাই এক জটিল কেসে ফেঁসে যান। অজানা কোন সিরিয়াল কিলার পরপর তিনটি খুন করেও লাপাত্তা। মির্জাপুরের এক বাংলোবাড়িতে প্রথম খুন হন ব্যবসায়ী হরমুজ। লাশের গায়ে একই সাথে ক্ষুরের পোঁচ আর নখের আঁচড়। খুনি মানুষ নাকি জানোয়ার, তাই বুঝতে পারেন না মুসা মামা। নাবিল ওর বন্ধু তুবা আর রিজভীকে নিয়ে অমনি জড়িয়ে পড়ে দুর্ধর্ষ খুনের রহস্যে।

অকুস্থলে পাওয়া লম্বা চুল আর তামার তৈরি কবচ। এতে তদন্তের গতিপথ বদলে দেয়। মুসা বুঝতে পারেন না খুনি পুরুষ, নাকি পানাসক্ত নারী! তদন্ত টিমে যোগ দেন বিশিষ্ট ফরেনসিক স্পেশালিস্ট ডক্টর হক। তার ধারণা, ট্রিপল মার্ডারার এই সিরিয়াল কিলার মানুষ আবার জন্তুও। ঘিলু ঘামতে থাকে মুসা মামার। গ্রন্থকুটির থেকে প্রকাশিত এই বইটিরও প্রচ্ছদশিল্পী ধ্রুব এষ।

পেতনীর প্রতিশোধ : ভূত আছে কি নেই তা নিয়ে অদ্ভুত যুক্তিতর্ক চলে। কেউ কেউ বলে, ভূতের ভয় মনে মনে, ভূত যে আছে কে না জানে! আবার অতিসাহসী গোছের কেউ বলে, ভূত! ফু! সব বানানো গপ্পো। আমার ছেলেরা অবশ্য ভূতের গল্পে মজা পায়, মানেও। ভূত আমি নিজেও দেখিনি বটে, তবে তেনারা যে নেই, তাই বা বলি কি করে! কতো কিছুই তো আমরা দেখি নি, আমি না জানলে বা না দেখলেই তা মিথ্যে এমন ধারণা ঠিক নয়। ঘুটঘুটে অন্ধকারে বটগাছ, শেওড়াগাছ বা শ্মশানের পাশ দিয়ে যাবার সময় বুকটা খানিক ছ্যাঁৎ করে ওঠে না কি!

ওই হলো ভূত। যা আমাদের মনে অকারণ ভয় ধরিয়ে দেয়। অপঘাতে কেউ মরলে নাকি ভূত হয়। আবার ভূতের বউ পেতনি! ভূত বলে কি ওদের বিয়ে করতে নেই! ব্যাঙের যদি বিয়ে হতে পারে, ভূতেরও হবে। আরো আছে বাচ্চাভূত, বাঁশঝাড়ে ভূত, সাইকেল ভূত, বিল-বাঁওড়ে ভূত। সব রকমের ভূতের সমাহার এই বইয়ে।

মূর্ধণ্য প্রকাশিত বইটির প্রচ্ছদশিল্পী নিয়াজ চৌধুরী তুলি।

অমীমাংসিত খুন : ‘ব্রেন-কম্পিউটার ইন্টারফেস’ এমন এক ডিভাইস যা মানুষের মনের কথা বলে। এই মেশিন বানাতে গিয়ে লন্ডনে আচমকা খুন বিশিষ্ট নিউরোসার্জন প্রফেসর ককটেল। আততায়ী মধ্যরাতে তার কান কেটে নেয়। শরীর থেকে বিচ্ছিন্ন করে ডানহাত। ককটেল খুনের কিনারা করতে গিয়ে সার্জেন্ট মূলার খুনির ডিএনএ প্রোফাইলের দায়িত্ব দেন করোনার ডা. জনকে। একমাসের মাথায় বিষাক্ত কফিপানে মারা যায় ডা. জন। এটা হত্যা নাকি আত্মহত্যা তা জানতে হিমশিম অবস্থা স্কটল্যান্ড ইয়ার্ডের। বিজ্ঞানী ডক্টর মিজ হক বিসিআই ডিভাইস নিয়ে গবেষণা চালিয়ে যান। এক রাতে পার্টির সুযোগে হকের সান স্ট্রিটের বাড়ি থেকে চুরি যায় অদ্ভুত এই যন্ত্রটি। মারা পড়ে সেনেগালের সবুজ বানর।

আশ্চর্য, বানরের কান কোথায় গেল! তার মানে সিরিয়াল কিলার! খুনিকে পাকড়াতে ইয়ার্ডের সাথে মাঠে নামে আফ্রিকান টিমি, জাপানি মেয়ে প্রিসিলা, সুরাজ ও বাংলাদেশের আনিস। টিমির স্পাই ক্যামেরায় ধরা পড়ে দুজনের ছবি। কার্লোস ও ডেভিস, কনট্র্যাক্ট কিলার। চুন্নি মহিলা নিনজাকে ধরতে ওরা হানা দেয় ওকউডের লিনডেন স্ট্রিটে। চুম্বক গতির আকর্ষণ নিয়ে এগিয়ে যায় কাহিনী। অনিন্দ্যপ্রকাশ থেকে প্রকাশিত বইটির প্রচ্ছদশিল্পী ধ্রুব এষ।

তোড়ার হাতে ঘোড়ার ডিম : একেবারে ছোট্ট সোনামণিদের গল্প এটি। ছবি আর লেখা, পড়তে বসে আর থামার উপায় নেই। মজা আর মজা। তোড়া ও তার বন্ধুরা মিলে ঘোড়ার ডিম আনতে গিয়ে সে কি কাণ্ড! আবার দেখা যায় কাকাতুয়া পাখি নাকি ক্রিকেট খেলতে জানে! কী সব অদ্ভুত ব্যাপার! ছোট্ট সোনামণিদের জন্য অবশ্যপাঠ্য বইটি প্রকাশ করেছে আদিগন্ত প্রকাশন। প্রচ্ছদশিল্পী মোস্তাফিজ কারিগর।

(দ্য রিপোর্ট/এপি/ফেব্রুয়ারি ২৭, ২০১৭)

পাঠকের মতামত:

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

M

M

SMS Alert

এর সর্বশেষ খবর

- এর সব খবর