thereport24.com
ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল 24, ৫ বৈশাখ ১৪৩১,  ৯ শাওয়াল 1445

সুবিধাবঞ্চিত মানুষদের সহায়তায় অবিন্তা কবির ফাউন্ডেশনের পথচলা

২০১৭ মার্চ ০৪ ২০:৩৩:৩৭
সুবিধাবঞ্চিত মানুষদের সহায়তায় অবিন্তা কবির ফাউন্ডেশনের পথচলা

দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক : প্রতিবন্ধী, এসিড হামলার শিকার ভিকটিম ও এতিমসহ সুবিধাবঞ্চিত মানুষদের সহায়তায় উদ্বোধন করা হয়েছে অবিন্তা কবির ফাউন্ডেশন। রাজধানীর ল্য মেরিডিয়ান হোটেলে শনিবার অবিন্তা কবির ফাউন্ডেশনের উদ্বোধন করা হয়।

এ সময় গত বছর (২০১৬ সাল) ১ জুলাই হলি আর্টিজান রেস্টুরেন্টে জঙ্গি হামলার ঘটনায় নিহত অবিন্তা কবিরের স্মৃতিতে ‘অ্যান ইন্টিমেট পোর্ট্রেট অব অবিন্তা কবীর’ শীর্ষক একটি গ্রন্থের মোড়ক উন্মোচন করা হয় এবং অবিন্তা কবীরের স্মরণে ভিডিও তথ্যচিত্র দেখানো হয়। ‘ইন মেমোরি অব অবিন্তা’ শীর্ষক এই অনুষ্ঠানে অবিন্তা কবিরের স্মৃতিচিহ্ন স্মরণ করেন তার পরিবারের সদস্য ও সুভাকাঙ্খিরা এবং ফাউন্ডেশনের ওয়েবসাইটও চালু করা হয়।

ল্যাভেন্ডার গ্রুপের মালিক অবিন্তার নানা মঞ্জুর মোরশেদ বলেন, সে আমার একমাত্র নাতনী। সে খুব পরিশ্রমী ও সাহসী ছিল। মাত্র ১৯ বছরে আমাদের ছেড়ে চলে গেছে অবিন্তা। বয়স ১৯ বছর হলেও তার স্বপ্ন ছিল বড়। পড়াশোনার জন্য আমেরিকায় গেলেও তার মন পড়ে থাকতো বাংলাদেশে। সবসময় অস্থির হয়ে উঠতো দেশে আসার জন্য। সে খুবই মেধাবী ছিল। তার জন্য আমরা সকলে গর্বিত।

তিনি আরও বলেন, সে ঢাকাকে খুবই পছন্দ করত। সে মনে করত দারিদ্র বিমোচন ও সুবিধাবঞ্চিত মানুষদের সহায়তার জন্য কিছু করা উচিৎ। তার মা তাকে যেকোন ব্যাপারে সব ধরণের সহযোগিতা করত। তার মা অনেক নিয়ম মেনে চলত। মেয়েকে সঠিক সিদ্ধান্ত ও পথে যেতে পরামর্শ দিত। অবিন্তা আমাদের মাঝে নেই। কিন্তু সে আমাদের মনের মাঝে রয়েছে। তার যে স্বপ্ন ছিল আমরা সেই স্বপ্ন বাস্তবায়নে চেষ্টা করছি।

মামা তানভীর আহম্মেদ বলেন, সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের নিয়ে কাজ করার স্বপ্ন দেখেছিল অবিন্তা। সবসময় সে সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের পক্ষে কথা বলতো। অবিন্তা কবীর ফাউন্ডেশন করা হয়েছে তার স্বপ্নপূরণের জন্যই। কারণ অবিন্তার লক্ষ্য ছিলো একটি এনজিও প্রতিষ্ঠা করা। আমাকে বলেছিল অধ্যয়ন শেষ করে সে বাংলাদেশে ফিরে আসবে। এসে দারিদ্র বিমোচন ও সুবিধাবঞ্চিত মানুষদের সহায়তায় আমার সঙ্গে কাজ করবে।

জঙ্গি হামলায় নিহত হওয়ার পর খুঁজে পাওয়া যায় অবিন্তার একটি ডায়েরি। সেখানে তিনি লিখেছেন, “আমি মানুষের জন্য ভাবি এবং আমার লক্ষ্য বাংলাদেশে একটি এনজিও প্রতিষ্ঠা করা। আমার বিশ্বাস, আজকের এই আমি, আমার সংস্কৃতি ও জাতীয়তার একটি অংশ। বাংলাদেশ উন্নয়নশীল একটি দেশ। এ দেশের জন্য কিছু করা আমার নৈতিক দায়িত্ব। যদিও একটি এনজিও গড়া অতিসামান্য একটি পদক্ষেপ।”

অনুষ্ঠানে অবিন্তা কবিরের মা এলিগ্যান্ট কোম্পানির চেয়ারম্যান রুবা আহম্মেদ, নানী নিলু মুর্শেদ, খালা লুবনা আহম্মেদ, খালাতো ভাই জেসন ক্রিসটোফার, সুভাকাঙ্খি কাজী আমিরুল ইসলাম, নাজমা চৌধুরী, বন্ধু গ্যাব্রিয়্যালা, হলি আর্টিজান রেস্টুরেন্টে জঙ্গি হামলার ঘটনায় নিহত ভারতীয় নাগরিক তারিশি জৈনের মা তনিকা জৈন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

যুক্তরাষ্ট্রের আটলান্টার ইমোরি ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থী ছিলেন অবিন্তা। তিনি এলিগ্যান্ট গ্রুপের চেয়ারম্যান রুবা আহম্মেদ ও ইহসানুল কবীরের মেয়ে। গত বছরের জুনে ঢাকায় এসেছিলেন অবিন্তা। গত ১ জুলাই রাতে গুলশান-২ এর ৭৯ নম্বর রোডে অবস্থিত ওকিচেন রেস্টুরেন্ট ও হলি আর্টিজান বেকারিতে জঙ্গিদের হামলায় ১৭ জন বিদেশি (জাপানি সাতজন, ইতালির ৯ জন ও একজন ভারতীয় নাগরিক), একজন বাংলাদেশি যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক, দুজন বাংলাদেশি ও দুজন পুলিশ কর্মকর্তা নিহত হন। পরের দিন সকালে সেনাবাহিনীর নেতৃত্বে ‘অপারেশন থান্ডারবোল্ড’ কমান্ডো অভিযানে হামলাকারী ৫ জঙ্গিসহ ৬ জন নিহত হয়। এ ঘটনায় পুলিশের পক্ষ থেকে গুলশান থানায় মামলা দায়ের করা হয়। মামলাটি বর্তমানে ডিএমপির কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম (সিটি) ইউনিট তদন্ত করছে।

(দ্য রিপোর্ট/এমএসআর/মার্চ ০৪, ২০১৭)

পাঠকের মতামত:

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

M

M

SMS Alert

এর সর্বশেষ খবর

- এর সব খবর