thereport24.com
ঢাকা, মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল 24, ১০ বৈশাখ ১৪৩১,  ১৪ শাওয়াল 1445

মাধ্যমিকে কৃষি শিক্ষার আরও দু’টি বই

২০১৭ মার্চ ১৫ ২২:১২:৫০
মাধ্যমিকে কৃষি শিক্ষার আরও দু’টি বই

কৃষি ক্ষেত্রে উদ্ভাবিত প্রযুক্তি ও নতুন নতুন বিষয় অন্তর্ভুক্ত করে মাধ্যমিক স্তরে দুটি কৃষি শিক্ষা সহায়ক পাঠ্যপুস্তক প্রণয়ন করছে সরকার।

এরমধ্যে ষষ্ঠ থেকে অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের একটি এবং নবম-দশম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের একটি সহায়ক বই পড়তে হবে। বর্তমানে ষষ্ঠ থেকে নবম পর্যন্ত প্রতি শ্রেণিতে পাঠ্যক্রমে একটি করে কৃষি শিক্ষা বই রয়েছে।

কৃষি মন্ত্রণালয় বই দুটির কন্টেন্ট প্রস্তুত করে শিক্ষা মন্ত্রণালয়কে দিয়েছে। শিক্ষা মন্ত্রণালয় এখন বই ছাপানোসহ সহায়ক পাঠ্যবই হিসেবে শিক্ষার্থীদের কাছে পৌঁছানোসহ অন্যান্য বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে।

বর্তমানে ষষ্ঠ থেকে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত ১৪টি করে বই পড়তে হচ্ছে শিক্ষার্থীদের। নবম-দশম শ্রেণিতেও বই পড়তে হয় ১৪টি। মাধ্যমিক স্তরে পাঠ্যপুস্তক কমানোর জন্য শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের পক্ষ থেকে দাবি রয়েছে। শিক্ষাবিদ ও বিশিষ্টজনরাও পাঠ্যপুস্তক কমানোর সুপারিশ করেছেন।

কৃষি মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, ২০১৫ সালের ২০ জুলাই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কৃষি মন্ত্রণালয় পরিদর্শনে আসেন। এ সময় প্রধানমন্ত্রী শিক্ষিত বেকার যুবকেরা যাতে কৃষি পেশাকে মর্যাদাপূর্ণ মনে করে সেজন্য পাঠ্যপুস্তকে কৃষি শিক্ষা অন্তর্ভুক্ত করে কৃষির গুরুত্ব বোঝানোর নির্দেশ দেন।

তিনি আরও জানান, এরপর ২০১৫ সালের ২৫ জানুয়ারি জাতীয় শিক্ষাক্রম সমন্বয় কমিটির সভায় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা বাস্তবায়নের জন্য কৃষি মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে কৃষি শিক্ষার সহায়ক পাঠ্যপুস্তক (সাপ্লিমেন্টারি রিডিং ম্যাটেরিয়াল) প্রণয়নের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সেজন্য কৃষি ক্ষেত্রে উদ্ভাবিত নতুন নতুন বিষয় অন্তর্ভুক্ত করে কৃষি মন্ত্রণালয়ের গঠিত এডিটোরিয়াল কমিটি সম্পূরক কৃষি শিক্ষা নামে দুটি রিডিং ম্যাটেরিয়াল তৈরি করে। এর একটি ষষ্ঠ থেকে অষ্টম শ্রেণি ও আরেকটি নবম-দশম শ্রেণির জন্য। পাঠ্যপুস্তক দুটির কন্টেন্ট জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডে (এনসিটিবি) পাঠানো হলে বোর্ড কিছু সংশোধনের সুপারিশ করে। সেই আলোকে পাঠ্যপুস্তক দুটির কন্টেন্ট বিশেষজ্ঞদের মাধ্যমে সংশোধন করে এনসিটিবির কাছে পাঠানো হয়। বোর্ড পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে তা প্রত্যয়নও করে। এরপর তা বই আকারে ছাপানোসহ পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য কৃষি মন্ত্রণালয় থেকে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের পাঠানো হয়েছে।

কৃষি মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মো. মোশারফ হোসেন দ্য রিপোর্ট টুয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা অনুযায়ী শিক্ষার্থীরা আরও যাতে ভালভাবে বুঝতে পারে সেজন্য সাপ্লিমেন্টারি রিডিং ম্যাটেরিয়াল হিসেবে ষষ্ঠ থেকে দশম শ্রেণি পর্যন্ত দুটি পাঠ্যপুস্তক আমরা তৈরি করে দিয়েছি। এখন বাকি কাজ শিক্ষা মন্ত্রণালয় করবে।’

শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ‘মাধ্যমিকে শিক্ষার্থীদের বই অতিরিক্ত হয়ে গেছে বলে আমাদের কাছে প্রতিদিনই অভিযোগ আসছে। নতুন করে আর কোন পাঠ্যবই যোগ করা ঠিক হবে না। তারপরও প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা কীভাবে বাস্তবায়ন করা যায়, সেটা নিয়ে চিন্তা-ভাবনা করা হচ্ছে।’

শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উপ-সচিব সমীর কুমার বিশ্বাস দ্য রিপোর্টকে বলেন, ‘প্রাথমিকভাবে মনে করছি বই দুটি সহায়ক পাঠ্যপুস্তক হিসেবেই পড়ানো হবে। আলোচনা করে বই দুটি জাতীয় শিক্ষা পাঠ্যক্রমে অন্তর্ভুক্তকরণ, ছাপানো, বিতরণসহ পরবর্তী বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’

পাঠ্যপুস্তক দুটির বিষয়ে জানতে চাইলে এনসিটিবি’র ঊর্ধ্বতন বিশেষজ্ঞ ফরহাদুল ইসলাম দ্য রিপোর্টকে বলেন, ‘কৃষি শিক্ষা বইয়ের পাশাপাশি এ বই দুটি স্কুলে গেলে শিক্ষার্থীরা উপকৃত হবে। পাঠ্যবইয়ে বিস্তারিতভাবে সবকিছু লেখা যায় না। গ্যাপগুলো সহায়ক বইয়ে দেওয়া হয়। তবে সব সিদ্ধান্ত নেওয়ার এখতিয়ার শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের। শিক্ষা মন্ত্রণালয় নির্দেশনার সঙ্গে বাজেট ও প্রতি বইয়ের জন্য ২ টাকা আট পয়সা হারে সার্ভিস চার্জ দিলে এনসিটিবি বই ছাপার কাজ করবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘ইতোমধ্যে বইয়ের কন্টেন্ট আমরা অনুমোদন দিয়েছি। বোটানির বিষয়গুলো যারা দেখেন তাদের একটি প্যানেল কারিকুলাম দেখে পরামর্শসহ এটি রিভিউ করে দিয়েছে।’

বই দুটির কন্টেন্ট তৈরি করেছে কৃষি মন্ত্রণালয়ের অধীন বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিল (বার্ক)।

কন্টেন্ট তৈরির সঙ্গে সম্পৃক্ত বার্কের একজন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করে বলেন, ‘কৃষি শিক্ষা এখন বেশ উন্নতি লাভ করছে। প্রধানমন্ত্রী চেয়েছেন কোন শিক্ষার্থী যদি এসএসসি দিয়ে আর লেখাপড়া না করে সে যেন কৃষিতে পারদর্শী হয়ে ওঠে। সেজন্যই কৃষির যে নতুন নতুন প্রযুক্তি রয়েছে সেগুলোর উপর গুরুত্ব দিয়ে পাঠ্যপুস্তক দুটি করা হচ্ছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘এতে ঝড়ে পড়া শিক্ষার্থীদেরও কৃষি প্রযুক্তি সম্পর্কে ভাল ধারণা থাকবে। এতে কৃষিকে অবলম্বন করে উপার্জনের পথ করে নেবে তারা। মৎস্য চাষ, শস্য চাষ, পশু পালনসহ সব বিষয়ের প্রযুক্তির বিষয়গুলো বইয়ে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। বই দুটোর নাম হবে সহায়ক কৃষি শিক্ষা। মূল বইয়ে যে বিষয়গুলো আছে তার ডুপ্লিকেশন যাতে না হয়, সেই বিষয়গুলোও খেয়াল রাখা হয়েছে।’

(দ্য রিপোর্ট/আরএমএম/এপি/এনআই/মার্চ ১৫, ২০১৭)

পাঠকের মতামত:

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

M

M

SMS Alert

এর সর্বশেষ খবর

- এর সব খবর